English Version
আপডেট : ২০ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:৪৩

ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় বাড়ির গাছ

অনলাইন ডেস্ক
ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় বাড়ির গাছ

স্বাস্থ্য ডেস্ক: সমগ্র মানব জাতির জন্য ডায়াবেটিস একটা হুমকি। প্রতিনিয়তই বেড়ে চলেছে  ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বা চিকিৎসার জন্য আমরা নির্ভর করছি রাসায়নিক ঔষধের ওপর। কিন্তু প্রচলিত এসব ঔষধে ডায়াবেটিস পুরোপুরি  সেরে গেছে এরকমটা না। 

তবে অবহেলিত গাছ, লতাপাতায় এমন কিছু বায়োকেমিকেল খুঁজে পাওয়া যায়, যা ডায়াবেটিস চিকিৎসায় চমৎকার কাজ করে। ডায়াবেটিস মেলাইটিস হল একটি হরমোনের বিপর্যয়। একজন ডায়াবেটিস রোগী তার শরীরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। তাই রক্তে সব সময় প্রচুর পরিমাণ গ্লুকোজ জমা থেকেই যায়। যারা আয়েসি জীবনযাপন করেন তারা খুব সহজেই ডায়াবেটিসের শিকার হন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর গাছ:

তুঁত: তুঁত গাছের ফল, পাতা ও শিকড়ে আছে একটি পলি স্যাকারাইড, যা রক্তে শর্করা কমিয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় আনতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। বিজ্ঞানী হিকিনো ও তার সহযোগী গবেষকবৃন্দ ১৯৮৫ প্রমাণ করেন তুঁত পাতার ইথাইল এসিটেট এবং এন-বিউটানল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর।

যব: বিজ্ঞানী শুল্কা ১৯৯১ সালে প্রমাণ করেন যে, যব ইনসুলিন এর সক্রিয়তা বাড়ায়। যবের ছাতু ডায়াবেটিস রোগীরদের জন্য একটা চমৎকার পথ্য।

ভুট্টা: অনেক আগে থেকেই ভুট্টার ডাঁটা (পুষ্পদন্ড) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার হয়ে আসছে। ফার্মাকোলজিক্যাল পরীক্ষায় রক্তের শর্করা বিপাকে কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে।

লিচু: লিচুর বিচি চূর্ণের জলীয় নির্যাস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর একটি ঔষধ। ১৯৯৭ সালে বিজ্ঞানী কুয়াং লিচু বিচির কার্যকারিতা গ্লিবেনক্লামেইড  ও ফেনোফরমিন এর সমতুল্য বলে প্রমাণ করেন। 

ডালিম: চীন দেশে ডালিমের ছাল ডায়াবেটিসের ঔষধ হিসেবে পরিচিত। ভারতের ইউনানী চিকিৎসকগণ ডালিম ফুল ব্যবহার করেন।

পেঁয়াজ: সাধারনত সবজি ও মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তবে এর আছে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণকারী বৈশিষ্ট্য। শর্করা বিপাক বাড়িযে রক্তের শর্করা মাত্রা কমায়। রক্তের কোলেস্টেরল কমায়।

মাশরুম: মাশরুম ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী পথ্য। এতে বিদ্যমান পলিস্যাকারাইড উপাদানটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

মেথী: হাজার বছর ধরে মেথিকে মানুষ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রক ঔষধ হিসেবে জেনে আসছে। এটি শরীরের বাড়তি কোলেস্টরল কমায়।

নয়নতারা: নয়নতারা পাতার নির্যাস খেলে সরাসরি রক্তশর্করা কমে যায়। সম্প্রতি পূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশসমূহের হাসপাতালগুলোতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ইনসুলিন এর পরিবর্তে এ গাছ থেকে তৈরি ট্যাবলেট খাওয়ানো হচ্ছে।

পদ্মফুল: চীনদেশে ডায়াবেটিস এর লোকজ চিকিৎসায় পদ্মের শেকড় ব্যবহার হয়। আধুনিক ফার্মাকোলজিক্যাল রিসার্চ এই বিষয়ে সত্যতা খুঁজে পেয়েছে। বিজ্ঞানী মুখার্জি ও তার সহযোগী গবেষকবৃন্দ ১৯৯৭ সালে গ্লুকোজ খাওয়ানো ইঁদুরের উপর এক গবেষণাকর্ম পরিচালনা করেন। তিনি পর্যবেক্ষণ করেন যে, পদ্ম শেকড় খাওয়ালে ডায়াবেটিক ইঁদুরের রক্তশর্করা বেশ কমে যায়।