ফল খেয়ে বীচিগুলো ছুড়ে ফেলে দেয়াই স্বাভাবিক, কিন্তু এই বীচিগুলো ছুড়ে ফেলে দেয়ার সাথে সাথে আপনি কিছু পুষ্টি উপাদান ছুড়ে ফেলে দিচ্ছেন। আপনি কি কখনো এমন কথা ভেবেছেন।

জেনে নিন ফলের বীচি বিষাক্ত নয়। এবং এগুলো খেলে আপনার পাকস্থলীতে কোন গাছ জন্মাবেনা, তাই নিশ্চিন্তেই এদের খাওয়া যায়। আসলে কিছু ফলের বীচিতে উপকারি এমাইনো এসিড, ভিটামিন ও মিনারেল থাকে।

এমন কয়েকটি ফলের বীজের কথাই আজ জেনে নিই চলুন, যা খেলে স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

তরমুজের বীচি- তরমুজের বীচি অনেক বেশি পুষ্টিকর একটি খাবার। যা খেলে আপনার চুল, নখ ও ত্বক উজ্জ্বল হয়। স্বাস্থ্যকর ওলেইক ও লিনোলিয়াম এসিডের চমৎকার উৎস হচ্ছে তরমুজের বীচি। তরমুজের বীচিতে জিংক, ফাইবার ও আয়রন থাকে। জিংক বিভিন্ন ধরণের এনজাইম পরিচালনার জন্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য প্রয়োজনীয়।  দুর্ভাগ্যবশত এই পুষ্টি উপাদানটি দীর্ঘদিন শরীরে জমা থাকেনা। তাই আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় জিংক সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। তরমুজের বীচিতে উচ্চমাত্রার অ্যামাইনো এসিড আরজিনিন থাকে। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং করোনারি হার্ট ডিজিজ নিরাময়ে সাহায্য করে। তরমুজের বীচি উচ্চমাত্রার ভিটামিন বি, নায়াসিন এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ।

লেবুর বীচি- সকল ধরণের সাইট্রাস ফলের বীচিই নিরাপদ। তাই কমলা বা আঙ্গুর খাওয়ার সময় বীচিতে কামড় পড়লে বা জুসের সাথে খেলে কোন সমস্যা নাই। লেবুর বীচিতে স্যালিসাইলিক এসিড থাকে। যা অ্যাসপিরিনের প্রধান উপাদান। তাই কয়েকটি লেবুর বীচি খেয়ে ফেললে কোন ক্ষতি নাই বরং এরা আপনাকে বেদনানাশক উপকারিতাই দিবে।

পেঁপের বীচি- গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে যারা বাস করেন তাদের দেহে পরজীবীর সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য পেঁপের বীচি উপকারি। পেঁপের বীচিতে প্রোটিওলাইটিক এনজাইম, পেপেইন শরীরকে প্যারাসাইট মুক্ত করে। এছাড়াও পেঁপের বীচিতে এন্থেলমিন্টিক উপক্ষার কারপেইন থাকে। যা পরজীবী ক্রিমি ও অ্যামিবা ধ্বংস করতে সাহায্য করে। পেঁপের বীচিতে উপকারি গ্লুকোট্রোপিওলিন থাকে যা শরীরে বিপাকের মাধ্যমে শক্তিশালী ক্যান্সার বিরোধী উপাদান আইসোথায়োসায়ানেট উৎপন্ন করে।

কিউইর বীচি- কিউই ফলের কালো বীচি ভিটামিন ই এবং ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিডের চমৎকার উৎস। এই পুষ্টি উপাদানগুলো যথেষ্ট পরিমাণে গ্রহণ করলে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ হয় এবং উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

কালোজামের বীচি- কালোজামের বীচিতে ওমেগা৩ ও ওমেগা৬ ফ্যাটি এসিড থাকে। এছাড়াও ফাইবার, ক্যারোটিনয়েড এবং প্রোটিন থাকে। কালোজামের বীচিতে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

অ্যাভোকাডোর বীচি- অ্যাভোকাডোর বীচিতে উচ্চমাত্রার দ্রবণীয় ফাইবার ও অ্যান্টিওক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। পটাসিয়ামের ভালো উৎস অ্যাভোকাডোর বীচি। অ্যাভোকাডোর বীচির উচ্চমাত্রার ফেনোলিক অ্যান্টিওক্সিডেন্ট হাই ব্লাড প্রেশার ও হাই কোলেস্টেরল কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।