পিরিয়ডে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ সমস্যা

পিরিয়ডে স্বাভাবিকের চাইতে বেশী রক্তক্ষরণ হওয়া একটি গুরুতর শারীরিক সমস্যা। অনেক নারীই লজ্জায় এই প্রসঙ্গে কথা বলেন না। সেসেব নারীরা বুঝতে পারেন না যে আসলে তাঁদের পিরিয়ডে ভারী রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
আমাদের সমাজে ভুল ধারণা প্রচলিত যে বেশী বেশী রক্তক্ষরণ হওয়া পিরিয়ডে ভালো! পিরিয়ডে ভারী রক্তক্ষরণ হওয়ার পেছনে আছে কিছু কারণ। আছে কিছু লক্ষণও। যদি আপনার সাথে মিলে যায় তাহলে জানবেন যে আপনি ভুগছেন কিছু বিশেষ শারীরিক সমস্যায়। জেনে নিন এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রত্যেক নারীই লক্ষণ গুলো একবার নিজের সাথে মিলিয়ে নিন।
সাধারণত একজন সুস্থ নারীর ২৮ দিন পর পর পিরিয়ড হয়ে থাকে এবং ৪ দিন (২/৩ দিন কম বা বেশী হতে পারে) স্থায়ী হয়। যদিও মনে হয় যে অনেক বেশী রক্তপাত হচ্ছে, কিন্তু সবমিলিয়ে গড় রক্তক্ষরণ ২ থেকে ৪ টেবিল চামচের বেশী নয়। পিরিয়ড নারী দেহের একটি খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় কোনভাবেই কোন নারীর অসুস্থ হয়ে পড়ার কথা নয় কিংবা তাঁর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হবার কথা নয়।
কিন্তু যদি হয়, তাহলে নিজের পিরিয়ডের সময়ে নিমোক্ত বিষয়গুলো লক্ষ্য করুন। যদি লক্ষণ মিলে যায়, তাহলে বুঝবেন আপনি পিরিয়ডে ভারী রক্তক্ষরণ বা Menorrhagia সমস্যায় ভুগছেন।
ভারী রক্তক্ষরণ লক্ষণ সমূহ হচ্ছে-
-আপনার পিরিয়ড ৭ দিনের বেশী স্থায়ী হয়। (অনেকের ৭দিন স্থায়ী না হলেও ভারী রক্তক্ষরণ হতে পারে)
-পিরিয়ডের প্রথম ৪/৫ দিন এত বেশী রক্তক্ষরণ হয়ে যে আপনি ক্লান্ত ও অসুস্থ হয়ে পড়েন।
-দিনে ৬/৭ বার আপনাকে স্যানিটারি ন্যাপকিন বদল করতে হয়।
-এর বেশী রক্তক্ষরণ হয় যে আপনি অ্যানিমিয়ায় ভুগতে শুরু করেন। আপনাকে ফ্যাকাশে ও মলিন দেখা যেতে শুরু করে।
-ভারী রক্তক্ষরণের সাথে সাথে তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা হয়।
-পিরিয়ডের রক্তের সাথে চাকা চাকা রক্তের দলা দেখা যায়।
-আপনি প্রচণ্ড ক্লান্তি ও অসুস্থ বোধ করেন, আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়।
করণীয়-
শুরুতেই বলেছিলাম, অনেক নারী বুঝতেও পারেন না যে আসলে তাঁদের পিরিয়ডে ভারী রক্তক্ষরণ হচ্ছে। কারণ প্রথম থেকে এমন রক্তপাতই তাঁরা দেখে এসেছেন। পিরিয়ডে ভারী রক্তক্ষরণ হওয়া মোটেও কোন ভালো ব্যাপার নয়।
উপরের লক্ষণগুলো মিলে গেলে বুঝবেন আপনি কোন একটি শারীরিক সমস্যা হয়েছে। ভারী রক্তক্ষরণের নেপথ্যে থাকতে পারে হরমোন ইম্ব্যালান্স সহজ আরও নানান রকমের গুরুতর শারীরিক সমস্যা। বিশেষ করে কিশোরী যাদের মাত্র পিরিয়ড শুরু হয়েছে এবং মধ্য বয়স্কা নারী যাদের মেনপজের সময়ে হয়ে গেছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশী দেখা যায়।
তবে হতে পারে যে কোন বয়সেই। লক্ষণগুলো মিলে গেলে অবশ্যই ঘরোয়া চিকিৎসা বা টোটকা উপায় অবলম্বনের চেষ্টা করবেন না। কিংবা লজ্জায় চুপ করে বসে থাকবেন না।
অতি অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।