যেসব কারণে স্বপ্নদোষ

সাধারণত যৌন কর্মকান্ড ছাড়াই রাগমোচন ঘটে তাকেই স্বপ্নদোষ বা ভেজা স্বপ্ন (ইংরেজি: Nocternal emission, wet dream) বলে। ঘুমের সময় স্বতঃস্ফূর্তভাবে (১৩ থেকে ৪৫) ছেলে বা মেয়েদের ক্ষেত্রে বীর্যপাত ঘটে থাকে।
সময়কাল স্বপ্নদোষ কোনো রোগ নয়। এটা বয়ঃসন্ধি বা উঠতি তারুণ্যে সবচেয়ে বেশী ঘটে থাকে, তবে কোন কোন ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকাল পার হবার অনেক পরেও এটি ঘটতে পারে| মহিলাদের ক্ষেত্রে যোনিপথ পিচ্ছিল থাকা সকল ক্ষেত্রে স্বপ্নদোষের বিষয়ে নিশ্চিয়তা প্রদান করতে পারে না|ৎ
স্বপ্নদোষ কি
ছেলেরা বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছালে তাদের বীর্যথলিতে বীর্য এবং অন্ডকোষে শুক্রাণু তৈরি হয়। সময়ের সাথে সাথে বীর্য ক্রমাগত বীর্যথলিতে জমা হতে থাকে। বীর্যথলির ধারণক্ষমতা পূর্ণ হওয়ার পর নিদ্রারত অবস্থায় অনিচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপথে বীর্যপাত ঘটে দেহে বীর্যের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রিত হয়, একেই স্বপ্নদোষ বলা হয়। স্বপ্নদোষের সময় অনেকে স্বপ্নে অবচেতনভাবে যৌন কর্মকাণ্ডের প্রতিচ্ছবি অবলোকন করেন, তবে উক্ত অনুভূতি ছাড়াও স্বপ্নদোষ সঙ্ঘটিত হয়। ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে স্বপ্নদোষে বীর্যপাতের পরিমাণ কম বা বেশী হতে পারে। স্বপ্নদোষ নারীদের ক্ষেত্রেও হতে পার, তবে তাঁর মাত্রা পুরুষদের তুলনায় অনেক কম। এছাড়া মেয়েদের স্বপ্নদোষের ফলে সাধারণত বীর্য নির্গত হয় না, ফলে তা স্বপ্নদোষ কিনা সেটি সহজে চিহ্নিত বা নির্ণয় করা যায় না।
স্বপ্নদোষের কারণ
স্বপ্নদোষ একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, এটি কোন শারীরিক সমস্যা নয়। এটি প্রজননক্ষম জীব হিসেবে মানব প্রজাতির স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার একটি অংশ। বয়ঃসন্ধিকালে দেহের যৌন বৈশিষ্ট্যসমূহ বর্ধনের ফলাফলস্বরূপ এটি ঘটে থাকে। বয়ঃসন্ধিকালে যারা নতুনভাবে স্বপ্নদোষের অভিজ্ঞতা লাভ করেন তারা অনেকেই প্রথমদিকে একে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে পারেন না এবং আতঙ্ক ও হীনমন্যতা বোধ করেন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্বপ্নদোষের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে। স্বপ্নদোষ হতে নানা কারণে পারে, যেমনঃ
মুখ্য কারণঃ
বয়ঃসন্ধিকালে যৌন হরমোনের আধিক্যের জন্য
গৌণ বা অনিশ্চিত কারণঃ
স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত যৌন বিষয়ক চিন্তা করা পর্ণগ্রাফি বা নীল ছবিতে আসক্ত হওয়া যৌন উদ্দীপক বই পড়া শয়নকালের পূর্বে যৌন বিষয়ক চিন্তা করা বা দেখা
বয়ঃসন্ধিকালে কারো কারো স্বপ্নদোষ নাও হতে পারে , এতে এটা প্রমাণ করে না যে তার সমস্যা আছে। আবার যারা নিয়মিত হস্থমৈথুন করে তাদের মাঝে স্বপ্নদোষের পরিমাণ কমে যায়। স্বপ্নদোষের সাথে সবসময় স্বপ্ন দেখার সম্পর্ক নাও থাকতে পারে। যেহেতু স্বাভাবিক নিয়মিত স্বপ্নদোষ কোন সমস্যা নয়, তাই এর কোন চিকিৎসা নেই। তবে অস্বাভাবিক বা অতিরিক্ত স্বপ্নদোষের ব্যপারে চিকিৎসকগণ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
স্বপ্নদোষ একেবারেই স্বাভবিক এবং শারীরবৃত্তীয় কারণে সংগঠিত একটি শারীরিক প্রক্রিয়া মাত্র। নির্দিষ্ট বয়সে যে কোন ছেলের ক্ষেত্রেই এটি ঘটতে পারে। এতে ভীতির কোনো কারন নেই।
স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পাওয়ার আরো কয়েকটি উপায়:
ঘুমাতে যাবার আগে প্রস্রাব করে নিন। যদিও এটি স্বপ্নদোষের চিকিৎসা নয়। তবে এটি স্বপ্নদোষের চাপ কমাতে শরীরকে সাহায্য করে।
অশ্বগন্ধা (Withaniasomnif era) স্বপ্নদোষে সৃষ্ট সমস্যায় উপকারসহ সর্বপোরী যৌন স্বাস্থ্য শুদ্ধি, হরমোন ব্যালেন্স এবং হস্তমৈথুনের ফলে দুর্বল হয়ে যাওয়া পেশীশক্তি ফিরে পাওয়া ও ভিতরগত ছোট-খাট ইনজুরি সারিয়ে তুলতে পারে।
ঘুমানোর আগে অতিরিক্ত পানি পান করবেন না। যদি সামান্য পরিমান প্রস্রাবের লক্ষনও থাকে, বিছানায় যাবার আগে প্রস্রাব করে নিন।
দিনের বেলায় অতিরিক্ত দুচিন্তা করবেন না।
অতিরিক্ত সেক্স এর বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন না।
রাতের খাবার খাওয়ার পর-পরই ঘুমাতে যাবেন না। কিছুক্ষন হাটা-হাটি করুন।পারলে ব্যায়াম করুন।
প্রতিদিন সামান্য করে হলেও পুদিনা পাতা অথবা মিছরী খাবার অভ্যাস করুন।
মনে মনে এমন কিছু ভাবুন যেটি আপনাকে মানসিক ভাবে শান্তি প্রদান করে।
যখন ঘুম আসবে শুধু মাত্র তখনি বিছানায় যাবেন। বিছানায় গিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন অযথা কল্পনা করবেন না।
নিজেকে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
রাতে ঢিলাঢালা জামাকাপড় পরে ঘুমান
পর্ণ দেখা বন্ধ করুন
মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে আবার প্রস্রাব করুন
রাতে ঘুমানোর আগে কিছু বরফ নিয়ে অণ্ডকোষের চারপাশে কিছুক্ষন মালিশ করে তারপর ঘুমান।
হস্তমৈথুন এবং যৌনমিলন নিয়মিত করলে এম্নিতেই স্বপ্নদোষ কম হবে।
এরপরও যদি না কমে তবে দেরি না করে ডাক্তার দেখান।সূত্র:অনলাইন