জিকা মোকাবেলায় অন্তঃসত্ত্বা হওয়া আটকানো কোনো ভাবেই পাপ নয় বলে উল্লেখ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। পাঁচ দিনের মেক্সিকো সফর শেষে ভ্যাটিকানে ফেরার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। খবর সিএনএন।

পোপ বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে যেভাবে মহামারী দেখা দিয়েছে, তাতে অন্তঃসত্ত্বা হওয়া আটকানো কোনো ভাবেই পাপ নয়!’ তার এই ধরনের বক্তব্য হয়তো ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ভালো সাড়া ফেলবে কিন্তু রক্ষণশীল ক্যাথলিকদের হতাশ করার আশংকার কথা জানায় সিএনএন।

গর্ভপাত সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘গর্ভপাত করা পাপ এবং অপরাধ। এর সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা মানুষেরই একটা খারাপ দিক। আবার ঠিক সে রকমই গর্ভনিরোধক বড়ি খেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়া আটকানোও পুরোপুরি অন্যায় নয়।’

এর আগেও এমন মতবাদ দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৯৬০ সালে বেলজিয়ান কঙ্গোয় সন্ন্যাসীদের দ্বারা লাগাতার ধর্ষণের শিকার হওয়া মেয়েদের কাছে গর্ভনিরোধক বড়ি পাঠানোর সম্মতি দিয়েছিলেন পোপ ষষ্ঠ পল। এ রকম কিছু ক্ষেত্রে জন্ম নিয়ন্ত্রণে অন্যায় নেই।’

জিকা ভাইরাস সংক্রমণে জ্বর, মাথাব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। কিন্তু এ ভাইরাস মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনে, যদি কোনো অন্তঃসত্ত্বা মহিলা আক্রান্ত হন। আক্রান্ত মায়ের সন্তানের মাইক্রোসেফালি হওয়া নিশ্চিত। এ রোগে শিশু অপরিণত মস্তিষ্ক নিয়ে জন্মায়। মাথা ছোট কিন্তু দেহ বড় হয়। এমনকি কথা বলতেও পারে না শিশু।

এখন পর্যন্ত এ রোগের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এমনকি নেই সঠিক কোনো চিকিৎসাও। ভাইরাসটি বহন করতে এডিস ইজিপ্টাই মশাকে যদিও প্রধানত দায়ী করা হয়, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যৌন সম্পর্কের কারণেও ছড়ানোর প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

সাম্প্রতিক সময়ে জিকা আক্রান্ত দেশগুলোর বেশিরভাগই ক্যাথলিক রাষ্ট্র যেখানে গর্ভপাত বা জন্মনিয়ন্ত্রণ নিষিদ্ধ। তবে এবার ব্রাজিল সরকারিভাবেই অন্তঃসত্ত্বা হতে বিরত থাকতে সরকারি ঘোষণায় বলেছে, জন্ম নিয়ন্ত্রণ করুন বা গর্ভপাত করান।