বেশীরভাগ কিশোরীরাই বাড়তে থাকা স্তন নিয়ে দু:শ্চিন্তা এবং বিহ্বলতায় ভুগে থাকে। এর কারন বয়োপ্রাপ্তির সময় থেকেই তাদের ঋতুচক্র শুরুর সাথে সাথে দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গও বাড়তে থাকে। আয়নার সামনে দাঁড়ালে দেহের অঙ্গগুলোর মধ্যে বাহ্যিকভাবে যেটা সবার আগে চোখে পড়ে তা হলো স্তন। গবেষণায় দেখা গেছে অধিকাংশ স্কুলপড়ুয়া কিশোরীই এসময় কোন খেলাধুলায় অংশ নিতে চায় না। খেলাধুলার সময় লাফালাফি-ঝাঁপাঝাঁপিতে দেহের ঐ বিশেষ অঙ্গটির নাড়াচাড়ায় তারা বিব্রতবোধ করে। স্তনকে সটান রাখার জন্য কোন ব্রা পড়বে সেটাও একটা দু:শ্চিন্তার কারন বটে। এসব কারনে কিশোরীদের তাদের স্তন সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেয়ার জন্য যুক্তরাজ্যের পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষকরা একটি সচেতনতামুলক কর্মসূচী নেন।

৮৭ শতাংশ কিশোরী স্তনের আকৃতি ছোট দেখানোর জন্য ছোট ব্রা পরিধান করেন। যার ফলে স্তনে ব্যাথা অনুভুত হয়। ২০০০ স্কুলপড়ুয়া কিশোরীদের উপর একটি জরীপ করে এই তথ্য জানা যায় যাদের বয়স ১১ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। এই স্তনের ব্যাথা থেকে কিভাবে মুক্তি মিলবে সেটা তারা জানে না। তাই নীরবে সহ্য করে কিংবা ব্রা পড়ার হাত থেকে বাঁচতে বাড়ির অন্তরালেই বেশী সময় কাটায়। আরেকটি তথ্য গবেষকদের অবাক করেছে তা হলো কিশোরীরা মনে করে তাদের স্তনের ক্রমবৃদ্ধি খেলাধুলা সহ সকল কাজের জন্য বাধা। এসব আবিস্কার করার পর গবেষকরা এই সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন।

স্তন মেয়েদের দেহের অন্যান্য অঙ্গের মতই একটা অঙ্গ। দেহের স্বাভাবিক স্ফীতির চাইতে একটু বেশী স্ফীত হয়ে থাকে এই অঙ্গটি যা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক একটা বিষয়। এতে লজ্জার কিছুই নেই। স্তনের আকৃতি বড় হওয়া একটি প্রাকৃতিক বিষয়। প্রাকৃতিক নিয়মেই নির্দিষ্ট সময়ে ধীরে ধীরে তা বেড়ে উঠে। প্রায় সকল কিশোরী কিংবা নারীরা স্তনকে সটান রাখতে ব্রা পরিধান করেন। এর ফলে স্তনে ব্যাথা অনুভুত হয়। কিশোরীদের প্রতি বিজ্ঞানীদের পরামর্শ হলো স্তনের স্বাভাবিক উচ্চতা গোপন রাখতে ছোট ব্রা পড়া ঠিক নয়। নিজের স্তনের জন্য যে সাইজের ব্রা উপযুক্ত তাই পরিধান করতে হবে।

প্রায় ৯০ শতাংশ কিশোরী এবং তরুনীরা খেলাধুলার সময় স্তনের নাড়াচাড়ার জন্য বিব্রত বোধ করে। শুধু বিব্রতই হয় না বরং এই নাড়াচাড়ার কারনে স্তনে ব্যাথা অনুভূত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে খেলাধুলার সময় মেয়েদের স্তন ২১ সে:মি: পর্যন্ত সবদিকে নাড়াচাড়া করতে পারে যার ফলে ব্যাথা সৃষ্টি হয়। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে খেলাধুলার জন্য বিশেষভাবে তৈরি ‘স্পোর্টস ব্রা’ পরিধান করা যেতে পারে। নিজের দেহের অঙ্গ নিয়ে লজ্জার কিছু নেই। যা প্রাকৃতিক-তাই স্বাভাবিক-তাই সুন্দর।