English Version
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০৬:৫৫

তারকা দম্পতির প্রেমের গল্প

অনলাইন ডেস্ক
তারকা দম্পতির প্রেমের গল্প

আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এ দিনে বিশ্বের মানুষ নিজ নিজ ভালোবাসার সম্পর্ককে উদযাপন করে। সেই ভালোবাসার মধুর কাব্য আছে শোবিজ তারকাদের জীবনেও। অনেক তারকাই একে অন্যের প্রতি গভীর টান থেকে দাম্পত্য সম্পর্ক তৈরি করেন। তেমনি কয়েকটি সুখী তারকা দম্পতির প্রেমের গল্প নিয়ে এই আয়োজন

রামেন্দু মজুমদার-ফেরদৌসী মজুমদার

একুশে পদকপ্রাপ্ত এই দম্পতি ১৯৭০ সালের ১৪ মার্চ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এত বছরের সংসারে বেশ সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যেই কাটিয়েছেন। তবে শুরুর দিকটা ছিল অন্যরকম। তাদের পরিচয়ের সূত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াকালীন মুনীর চৌধুরীর ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ নাটক করতে গিয়ে। রামেন্দু মজুমদারের দ আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এ দিনে বিশ্বের মানুষ নিজ নিজ ভালোবাসার সম্পর্ককে উদযাপন করে। সেই ভালোবাসার মধুর কাব্য আছে শোবিজ তারকাদের জীবনেও। অনেক তারকাই একে অন্যের প্রতি গভীর টান থেকে দাম্পত্য সম্পর্ক তৈরি করেন। তেমনি কয়েকটি সুখী তারকা দম্পতির প্রেমের গল্প নিয়ে এই আয়োজন সাজিয়েছেন মাসিদ রণ

দায়িত্ব ছিল রাতে ফেরদৌসী মজুমদারকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া। সেখান থেকে শুরু হয় তাদের প্রণয়। তবে তখনকার প্রেক্ষাপটে দুই ধর্মের মানুষের প্রেমকে সহজ করে দেখা হতো না। অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে দুজনের মিল হয়। তাদের বিয়ে করাতে সাহায্য করেছিলেন ফেরদৌসী মজুমদারের দুই ভাই মুনীর চৌধুরী ও কবির চৌধুরী। দুজনের ৫০ বছরের বিবাহিত জীবনে আছে একমাত্র সন্তান ত্রপা মজুমদার। তিনিও অভিনয় ও নির্দেশনার সঙ্গে যুক্ত।

আলমগীর-রুনা লায়লা

দুই জগতের দুই কিংবদন্তি আলমগীর ও রুনা লায়লা। সত্তর, আশি ও নব্বইয়ের দশকের সাড়া জাগানো অভিনেতা আলমগীর। অন্যদিকে সত্তরের দশক থেকে এখনো সুরের জাদুতে সব শ্রেণির মানুষকে বিমোহিত করে রেখেছেন কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা। গীতিকার খোশনুরের সঙ্গে আলমগীরের বিবাহবিচ্ছেদের পর ১৯৯৯ সালে রুনা লায়লাকে বিয়ে করেন আলমগীর। চাষী নজরুল ইসলামের শিল্পী সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে দুজন দুজনের প্রেমে পড়েন। দুটি মানুষের সেই প্রেম দ্রুতই বিবাহবন্ধনে পরিণত হয়। সুখেই সংসার এই তারকা দম্পতি।

নাঈম-শাবনাজ

নব্বইয়ের শুরুতে ‘চাঁদনী’ ছবির মাধ্যমে অভিষেক ঘটে এই দুই তারকার। এরপর জুটি বেঁধে অনেক ছবি করেন। অভিনয় করতে করতেই দুজন কাছাকাছি আসেন। তাদের প্রেমের গুঞ্জন ছিল দর্শকদের কাছে তখনকার আলোচনার বিষয়বস্তু। একসময় সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার। পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। দুজন বিয়ে করেন ১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর। বিয়ের পর দুজনেই অভিনয় ছেড়ে দিয়ে সংসারে মনোযোগী হন। সংসারে আছে দুটি কন্যাসন্তান। বড় মেয়ে এরই মধ্যে গানের জগতে এসেছেন।

ওমর সানি-মৌসুমী

ঢাকার চলচ্চিত্রে জনপ্রিয় তারকা জুটি ও সুখী দম্পতি ওমর সানি ও মৌসুমী। নব্বই দশকে চলচ্চিত্রে নাম লেখান খুলনার মেয়ে মৌসুমী। প্রয়াত সালমান শাহর সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন তিনি। পরে ওমর সানির সঙ্গে জুটি বাঁধেন। তখনই বাঁধা পড়েন প্রেমের জালে। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে দুজনের প্রথমে বন্ধুত্ব তৈরি হয়। আর সেটা যে কখন ভালোবাসায় পরিণত হয় তা তারা কেউ জানেন না। আর যখন জানলেন ঠিক ১৯৯৬ সালে বিয়ের পর্বটা সেরে ফেলেন তখনকার সময়ে হিট তারকা জুটি। মৌসুমী জনপ্রিয়তা যখন আকাশচুম্বী ও ক্যারিয়ারের সবচেয়ে টার্নিং শুধু ভালোবাসার খাতিরে সবকিছু বাদ দিয়ে সংসারমুখী এ নায়িকা। দীর্ঘ ভালোবাসার ঘরে একমাত্র ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলেকে বিয়ে দিয়ে মিষ্টি পুত্রবধূকেও ঘরে তুলেছেন এই দম্পতি।

বিপাশা হায়াত-তৌকীর আহমেদ

অভিনেত্রী বিপাশা হায়াত তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে পড়েন। আঁকাআঁকি এবং ক্যানভাস নিয়েই তার যত ব্যস্ততা। আর তৌকীর আহমেদ তখন বুয়েটে পড়াশোনা করতেন। ঢাকার মঞ্চে চুটিয়ে অভিনয় করছিলেন তৌকীর। এক দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে এক বন্ধুর আমন্ত্রণে আসেন তৌকীর। সেখানেই বিপাশা হায়াতের ছবি আঁকা দেখে থমকে যান তিনি। আর সেদিন থেকেই বিখ্যাত বাবার মিষ্টি মেয়ে বিপাশার সঙ্গে পরিচয় হয় তার। এরপর কয়েকবার দেখা হলেও পাকাপোক্তভাবে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয় ‘রূপনগর’ নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে। সেই ভালোলাগা থেকে শুরু হয় ভালোবাসা। একদিন লেকের ধার দিয়ে হাঁটার সময় তৌকীর তার ভালোবাসার কথাটা জানালেন বিপাশাকে। যদিও বিপাশা মনে মনে তৌকীরকে খুব পছন্দ করতেন। ব্যস ভালোবাসার ভেলায় দুজনে ভাসতে থাকলেন। আর ১৯৯৯ সালের ২০ জুলাই ভালোবাসার ভেলাটি কূলে আনেন তারা। এরপর দুই পরিবারের মধ্যস্থতায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর সমান তালে অভিনয় করেছেন সফল এ তারকা জুটি। দুই সন্তান নিয়ে এখন নিউ ইয়র্কে থাকেন বিপাশা-তৌকীর দম্পতি।

জাহিদ হাসান-সাদিয়া ইসলাম মৌ

টিভি পর্দায় দুজনই দুজনের কাজ দেখে দূর থেকে এক প্রকার ভালোলাগা তৈরি হয়। তবে কখনোই একসঙ্গে কাজ করা হয়নি দুজনের। অবশেষে বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে দুজনে একসঙ্গে পারফর্ম করার সুযোগ হয়। অনুষ্ঠানটি প্রচারের ব্যাপক আলোচিত হন জাহিদ হাসান ও মৌ জুটি। এরপর নানা অনুষ্ঠানে তাদের দেখা-সাক্ষাৎ হতো। আড্ডা যেন বাড়তে থাকে সে সময়। একসঙ্গে ওঠাবসা করতে করতে একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয়। একসময় সেই ভালোবাসা থেকে গড়ে ওঠে সুখের সংসারে। আজ সেই সুখের সংসারে দুই সন্তানের বসবাস। মেয়ে পুষ্পিতা ও ছেলে পূর্ণর কোমল মুখচ্ছবি এনে দেয় তাদের জীবনে পরিপূর্ণতা।