সালমান শাহ’র মৃত্যুর রহস্য নিয়ে তারকাদের কথা

প্রয়াত চলচ্চিত্র অভিনেতা সালমান শাহ’র মৃত্যু নিয়ে দীর্ঘ ২১ বছরে জল কম ঘোলা হয়নি। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটাই সঠিক জানা সম্ভব হয়নি। মাত্র ৪ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারের ইতি ঘটিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান এই নায়ক। অভিনয় জগতে এসে পেয়েছেন খ্যাতি, সুনাম আর কোটি ভক্ত। যা বাংলা সিনেমায় আজও ইতিহাস হয়ে রয়েছে। নিজের অভিনয় দক্ষতা আর স্টাইল দিয়ে কোটি ভক্তের স্বপ্নের নায়ক হয়েছিলেন তিনি।
সালমান শাহর মৃত্যু নিয়ে হঠাৎ সরগরম হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া। আর সেটা শুরু হয় গত সোমবার জনপ্রিয় এই চিত্রনায়কের হত্যা মামলার অন্যতম আসামি রুবির একটি ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত রুবি সেদিন তার ভিডিও ফুটেজে বলেন, ‘আত্মহত্যা নয়, হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হয়েছিলেন সালমান শাহ এবং তা করিয়েছিলেন তারই স্ত্রী সামিরা হকের পরিবার। সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই। সালমান শাহকে খুন করা হইছে, আমার হাজব্যান্ড এটা করাইছে আমার ভাইরে দিয়ে। সামিরার ফ্যামিলি করাইছে আমার হাজব্যান্ডকে দিয়ে। আর সব ছিল চাইনিজ মানুষ।’
এই প্রয়াত নায়কের মৃত্যুর ২১ বছর পর কি ভাবছেন বাংলা চলচ্চিত্রের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। বিডি২৪লাইভ’র সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট আরেফিন সোহাগ’র বিশেষ প্রতিবেদন।
চিত্র নায়ক আমিন খান বিডি২৪লাইভকে বলেন, ‘আমাদের জন্য দুঃখ সালমানের মৃত্যুর রহস্য আজও উদঘাটন হয়নি। তার মৃত্যুর কারণ সেই সময় বের করা উচিত ছিলো। আমি মনে করি আমাদের কোথায় একটা ভুল ছিলো যার কারণে সেই সময় এই নায়কের মৃত্যুর রহস্য খুঁজে পাইনি। অনকে দিন পর আবারও যখন নতুন করে আলোচনায় আসছে বিষয়টা আমি মনে করি এবার এর একটা সুরাহা হবে। আর মিডিয়া এবার একটিভ আছে। আমি মনে করি এবার হয়তো সত্যটা বেরিয়ে আসবে’।
চিত্র নায়ক অমিত হাসান বিডি২৪লাইভকে বলেন, ‘সালমান শাহ’র মৃত্যু নিয়ে তেমন কিছু বলার নাই। তবে আমি শুধু এতটুকু বলবো সঠিক বিচার যেন পাই সালমান পরিবার। আর এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটাই সঠিক জানা সম্ভব হয়নি।
চিত্রনায়িকা মৌ খান বিডি২৪লাইভকে বলেন, ‘আমি প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ’র অনেক ভক্ত। আমি চাই এই হত্যার সঠিক বিচার হউক এবং সত্যটা বের হয়ে আসুক। দীর্ঘদিন পর যখন নতুন করে রগরম হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া। আমার মনে হয় এবার সত্য বেরিয়ে আসবে’।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দিনটি ছিল শুক্রবার। সেদিন সকাল সাতটায় বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী ছেলে শাহরিয়ার চৌধুরী ইমনের সঙ্গে দেখা করতে ইস্কাটনের বাসায় যান। কিন্তু ছেলের দেখা না পেয়ে তিনি ফিরে আসেন। এই শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন ঢাকার তৎকালীন সিনেমা জগতের সুপারস্টার সালমান শাহ। সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সালমান শাহ'র মা নীলা চৌধুরী বলেন, বাসার নিচে দারোয়ান সালমান শাহ'র বাবাকে তার ছেলের বাসায় যেতে দিচ্ছিল না ।
নীলা চৌধুরীর বর্ণনা ছিল এ রকম, ‘বলেছে স্যার এখনতো উপরে যেতে পারবেন না। কিছু প্রবলেম আছে। আগে ম্যাডামকে (সালমান শাহ'র স্ত্রীকে) জিজ্ঞেস করতে হবে। একপর্যায়ে উনি (সালমান শাহ'র বাবা) জোর করে উপরে গেছেন। কলিং বেল দেবার পর দরজা খুললো সামিরা (সালমান শাহ'র স্ত্রী)’।
"উনি (সালমান শাহ'র বাবা ) সামিরাকে বললেন ইমনের (সালমান শাহ'র ডাক নাম) সাথে কাজ আছে, ইনকাম ট্যাক্সের সই করাতে হবে। ওকে ডাকো। তখন সামিরা বললো, আব্বা ওতো ঘুমে। তখন উনি বললেন, ঠিক আছে আমি বেডরুমে গিয়ে সই করিয়ে আনি। কিন্তু যেতে দেয় নাই। আমার হাজব্যান্ড ঘণ্টা দেড়েক বসে ছিল ওখানে।" বেলা এগারোটার দিকে একটি ফোন আসে সালমান শাহ'র মা নীলা চৌধুরীর বাসায়। ঐ টেলিফোনে বলা হলো, সালমান শাহকে দেখতে হলে তখনই যেতে হবে।