এবার বলিউডে সুযোগ চান জয়া!

জয়া আহসানকে ঘিরে বিতর্ক যতই হোক, অভিনয়টাই মন দিয়ে করে যেতে চান তিনি। আর পাঁচজন মানুষের মতোই ভুল করে আফসোস করতে চান না। জীবনটায় ভালো করে বাঁচার চেষ্টা করছেন জয়া। সম্প্রতি সে কথাই তিনি জানালেন কলকাতার এবেলা পত্রিকার কাছে এক সাক্ষাৎকারে।
সাক্ষাৎকারের শুরুতে জয়াকে প্রশ্ন করা হয়- গেল ঈদে কি বাড়ি গিয়েছিলেন? জয়া বলেন, গিয়েছিলাম। কিন্তু ঢাকায় এবার সেভাবে কেউই ঈদ পালন করেনি। আমি পরিবারের সঙ্গে ছিলাম। বড়দের আশীর্বাদ নিয়েছি। আপনার জন্মদিনেই গুলশানে ক্যাফেতে হামলা হয়। ঈদ জন্মদিন কোনোটাই বোধহয় ভালো কাটল না এবার? জয়া বলেন, এমন একটা ঘটনা যে ঘটতে পারে সেটা চিন্তার বাইরে ছিল। বাংলাদেশে সৃষ্টিকর্তার পরেই অতিথিদের খাতির করা হয়। সেখানে এই ধরনের ঘটনা কল্পনাই করা যায় না। অন্য প্রসঙ্গে আসা যাক।
‘রাজকাহিনী’র বিতর্কের পর কি একটু বেশি সচেতন হয়ে গেলেন? ঠিক তা নয়। কিছু বিষয়ে বেশি কথা না বলাই ভালো। ‘বেগমজান’-এর বিদ্যা বালানতো ‘রাজকাহিনী’ দেখে আপনার প্রশংসা করেছেন। জয়া বলেন, বাহ্! এ কথাটা বাংলাদেশের লোক জানতে পারলে খুব খুশি হতেন। তখন হয়তো আমার কাজকে একটু মূল্য দিতেন। বাংলাদেশে বলিউডের খুব কদর।
টলিউডের কদর রয়েছে? উত্তরে জয়া আহসান বলেন, বাংলাদেশের হলগুলোর খুব খারাপ অবস্থা। কেউ সিমেনা হলে যেতে চায় না। আমাদের কোনো ডেডিকেটেড দর্শক নেই। এ দেশে তা-ও দর্শক রয়েছেন। ওখানে
সকলে অপেক্ষা করে থাকেন, কখন ডিভিডি পাওয়া যাবে বা টেলিভিশনে দেখাবে। তাই যৌথ প্রযোজনার ছবিগুলো কতটা চলে জানি না।
আপনি তো ফের অরিন্দম শীলের ‘ঈগলের চোখ’-এ কাজ করছেন? জয়া হেসে বলেন, আমার কিছু বাংলাদেশের ছবির ক্লিপ অরিন্দমদা দেখেছিলেন ইন্টারনেটে। ভালো লেগেছিল বলেই ‘আবর্ত’র জন্য ডাক পেয়েছিলাম। যেহেতু টলিউডে আমার প্রথম কাজ ‘আবর্ত’, তাই ওটা আমার কাছে খুব স্পেশাল। তারপর থেকে অরিন্দমদা’কে অনেকবার বলেছিলাম আবার কাজ করতে চাই। উনি বলতেন, হবে, হবে। তারপর ‘ঈগলের চোখ’-এর সুযোগটা আসে।
এ ছবিতে আপনার চরিত্রটা বেশ জোরালো। সচেতনভাবেই কি জোরালো চরিত্র বাছেন? জয়া বলেন, না! বাংলাদেশের অনেক ইন্ডিপেনডেন্ট ছবিতে কাজ করেছি আমি, যেখানে আমার চরিত্র প্রান্তিক মানুষদের গল্প তুলে ধরে। বরং বলতে পারেন, আমি ওই চরিত্রগুলো সচেতনভাবে বাছি। এ ছবিতে আপনার কিছু ঘনিষ্ঠ দৃশ্য রয়েছে। আবার বিতকের্র ভয় হয় না? জয়া বলেন, অভিনেত্রী হিসেবে যা যা করা উচিত, সেগুলো করতে কোনোদিন ভয় করবো না। স্টার-ভ্যালু নিয়ে চিন্তা হয়? একদম না। আমি ওসব জানতেও চাই না, মানতেও চাই না। আর পাঁচজনের মতোই বাঁচতে চাই। যত বেশি মাটির কাছাকাছি থাকব তত ভালো শিল্পী হতে পারবো।
একঘেয়েমি চলে এলে ব্রেক নেন? জয়া বলেন, আমি আর মা খুব বেড়াতে যাই। এবারও ঢাকা ফিরেই একটা গ্রামে যাবো শুটিংয়ের জন্য। ওটা শেষ করে যেদিন ঢাকা ফিরব, তার পরদিনই সিডনি যাবো লম্বা ছুটিতে। গত ছ’মাসে বোধহয় ছ’টা ছবি করে ফেলেছি। যেটা পুরো আমার নীতির বাইরে। কিন্তু কী করবো বলুন! সব সময় সবকিছু তো আমাদের হাতে থাকে না। তবে এবার একটু শ্বাস নিতে চাই। পালিয়ে যেতে চাই। টলিউডে আপনার সবচেয়ে বড় পাওনা কী? জয়া হেসে বলেন, নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে দেখা হওয়া আর কাজ করার আনন্দটাই সবচেয়ে বড় পাওনা।
এখানে যে ধরনের চরিত্রগুলো পাচ্ছেন, তাতে আপনি খুশি? জয়া বলেন, এখানে সকলে খুব টাইপকাস্ট করেন। একই রকমের রোল পাই। তা-ও আমি যে ধরনের ছবি করি, তাতে মেয়েদের চরিত্রগুলোর একটু গুরুত্ব রয়েছে। বাণিজ্যিক ছবিতে তো সেই জায়গায় এখনও নারী-চরিত্রগুলো পৌঁছতে পারেনি। বাণিজ্যিক ছবি করবেন না? জয়া বলেন, অত মেকআপ, অত কস্টিউম, ওসব আমার দ্বারা হবে না। এক কাপড়ে গোটা ছবি করে ফেলতে পারলে আমি সবচেয়ে খুশি হই। আপনার সেক্স অ্যাপিল নিয়ে কিন্তু ছেলেদের মধ্যে খুব চর্চা হয়! জানেন?
জয়া হেসে বলেন, সে কী! আমি এসব কিছু জানিই না। অবশ্য জানতে চাইও না। আমি মাটির কাছাকাছি থাকতেই পছন্দ করি। আপনার আর সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের প্রেম নিয়েও কিন্তু লোকে আলোচনা করে! জয়া বলেন, আমাকে কেউ জিজ্ঞেস করলে কোনো কমেন্টই করি না। না নিজের ব্যাপারে গসিপে কান দিই, না অন্য লোকের ব্যাপারে। টলিউডের পর বলিউডে চেষ্টা করবেন? নিজে থেকে কোনোদিন করবো না। তবে সুযোগ এলে বলিউডের ছবিতে অবশ্যই কাজ করবো।