English Version
আপডেট : ৪ জুলাই, ২০১৬ ১১:৩৮

ইশরাতের জন্য ঠুকরে কেঁদে উঠলেন জয়া

অনলাইন ডেস্ক
ইশরাতের জন্য ঠুকরে কেঁদে উঠলেন জয়া

নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা-সাড়ে ছয়টা, বাংলাদেশে তখন শনিবার ভোর। নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘রাজকাহিনি’র জন্য সেরা সহ-অভিনেত্রীর পুরস্কার নিতে তখন মঞ্চে উঠেছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। এছাড়া নর্থ আটলান্টিক বেঙ্গলি কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও ছিল শুক্রবার। সেই অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রিত ছিলেন জয়া। দিনটি ছিল তার জন্মদিনও বটে। কিন্তু এতো আনন্দের মধ্যেও ঠুকরে কেঁদে উঠলেন অভিনেত্রী। কারণ তার জন্মভূমি বাংলাদেশে সেই সময়ে চলছে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা।

নিজের উপলব্ধির কথা জানিয়ে জয়া বলেন, মঞ্চে গমগম করছে আমার দেশের জাতীয়-সঙ্গীত। আমি সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে ঠোঁট মেলাচ্ছি। তখনও অনেকেই সে-ভাবে জানেন না, ঢাকায় কী চলছে। আমাকে দেখেও বাইরে থেকে হয়তো কিছু বোঝার উপায় নেই। কিন্তু আমার ভেতরটা ফালা-ফালা হয়ে যাচ্ছে। আমি যে তত ক্ষণে খবর পেয়েছি, গুলশনের বেকারিতে ঢুকে জঙ্গিরা সবাইকে জিম্মি করে রেখেছে!

আমার শরীরটা কেমন অসাড় মনে হচ্ছে। সবুজ পতাকার উদিত লাল সূর্যের মধ্যে  কেমন যেন কালো-কালো দাগ দেখছি। গান হচ্ছে, ‘...মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়নজলে ভাসি’...আর থাকতে পারলাম না। আমারও দু’চোখ বেয়ে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা উপচে পড়ল।

কাজের জন্য এখন কলকাতা, ঢাকা দুই শহরেই থাকতে হচ্ছে জয়াকে। কিন্তু মন পড়ে থাকে ছোটবেলার শহরে বলে জানালেন তিনি। দুই বাংলাতেই সমান জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী বলেন, ‘গুলশানের এই ক্যাফেয় আমি কত বার গিয়েছি, কত সুন্দর সময় কাটিয়েছি। সেখানে খুব কাছেই আমার ভাই থাকে। অবশ্য ঢাকা জুড়ে সকলেই তো আমার ভাই।’

কর্পোরেট জায়ান্ট ইশরাত আখন্দের মৃত্যুর খবরে জয়া বলেন, ‘খানিক ক্ষণ বাদে ইশরাত আপার খবরটা পেলাম। ইশরাত আখন্দকে ওরা মেরে ফেলেছে। আমরা একই জায়গায় আঁকা শিখেছি ছোটবেলায়। এক সঙ্গে হাতে তুলি ধরতে, রং দিতে শেখা। কী আশ্চর্য প্রাণবন্ত মানুষ। আর ওর সঙ্গে আর দেখা হবে না? ভাবতে পারছি না।’

ঈদের দিন সকালে নিউইয়র্ক থেকে সোজা ঢাকায় ফিরবেন বলে আগে থেকেই সব ঠিক করে রেখেছেন জয়া। আমার ভালবাসার দেশ, জন্মভূমির ক্ষত না-সারলে আর কি ঈদের সেই খুশি ফিরে পাব! বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

সেই সঙ্গে এও বলেন, জন্মদিনের সব রং মুহূর্তে কালো! জঙ্গিরা আমার জন্মদিনের স্বাদটা চিরদিনের জন্য নষ্ট করে দিল।