English Version
আপডেট : ২৯ জুন, ২০১৬ ১৭:৫৯

সালমান ক্ষমা চাননি

অনলাইন ডেস্ক
সালমান ক্ষমা চাননি

সালমান খানের ‘ধর্ষিতা’ মন্তব্যে এখনও সরব গণমাধ্যম। ‘সুলতান’ সেটে নিজেকে ‘ধর্ষিতা’র সঙ্গে নিজেকে তুলনায় করায় সালমানকে চিঠি দিয়েছিল জাতীয় মহিলা কমিশন। সেই চিঠির উত্তর দিলেন সালমান। কিন্তু তিনি ক্ষমা চাননি।

‘সুলতান’ ছবির প্রোমোশন করতে গিয়ে সালমান নিজের পরিশ্রমের কথা জানান।

সালমান বলেন, সুলতানের শুটিংয়ের সময় তার উপর দিয়ে অনেক ধকল যেত। যখন তিনি আখড়া থেকে বেরোতেন, ঠিক করে হাঁটতে পারতেন না। নিজেকে তখন তার ‘ধর্ষিতা’র মতো মনে হত।

সালমানের এই মন্তব্যের পরই বিতর্কের ঝড় ওঠে বিভিন্ন মহলে। মন্তব্যের জন্য জাতীয়  মহিলা কমিশন সালমান খানকে সাতদিনের মধ্যে ক্ষমা চাইতে বলে। কিন্তু সালমান এখনও ক্ষমা চাননি। শুধু কমিশনকে একটি চিঠি লিখে তার মতামত জানিয়েছেন।

এর আগে অবশ্য সোনা মহাপাত্র হুমকি পান, ধর্ষণ করে দেওয়া হবে তাঁকে! এরপরেও কি সালমান খানেরা বুঝতে পারবেন, ‘ধর্ষিতার মতো’ কথাটার অস্যার্থ কী দাঁড়ায়? সোনা মহাপাত্র বলিউডের পরিচিত গায়ক। তাঁর কসুর কী? সালমান খানের ‘ধর্ষিতার মতো’ উপমাকে ঘিরে যে বিতর্কে বলিউড নীরবতাকেই শ্রেয় বলে বেছে নিয়েছে, সেখানে সোনা মুখ খুলেছেন। কড়া ভাবেই খুলেছেন।

অতএব, সালমান-ভক্তদের একটা অংশ ‘সতী সাবিত্রী সাজা’ সোনাকে উচিত শিক্ষার প্রয়োজন অনুভব করেছেন। এবং ধর্ষণের চেয়ে উচিত শিক্ষা আর কী হতে পারে, ভেবে না পেয়ে তাঁরা সরাসরি ধর্ষণের হুমকিই দিয়েছেন। সোনাও হুমকি পেয়েছেন। মতিহারির মেয়েও ব্ল্যাকমেলিংয়ের প্রতিবাদ করেছিলেন। ‘উচিত শিক্ষা’ হিসাবে ধর্ষণ করে শরীরে পিস্তল ঢুকিয়ে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তাপস পাল ‘উচিত শিক্ষা’ হিসাবে ‘রেপ করিয়ে দেওয়ার’ হুমকি দিয়েছিলেন।
তারও কিছুদিন আগে সুনীতা কৃষ্ণন পেশায় সমাজকর্মী; পেয়েছেন পদ্মশ্রী সম্মাননা। তিনি বলিউড অভিনেতা সালমান খানকে খোলা চিঠি দিয়েছেন। সালমন খানকে তার লেখা এ খোলা চিঠি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। 'সুলতান' ছবির শুটিং প্রসঙ্গে মঙ্গলবার (২১ জুন) সালমান মন্তব্য করেন, 'নিজেকে ধর্ষিতা নারীর মতো মনে হতো।' সেই প্রসঙ্গেই সুনীতা তাকে এ খোলা চিঠি লিখেছেন।

সুনীতা নিজে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। তবে লড়াকু সুনীতা জীবনের সেই পর্ব কাটিয়েছেন মনের জোরে। সালমানকে লেখা খোলা চিঠিতে রীতিমতো আক্রমণাত্মক তিনি।

সুনীতা লিখেছেন, 'আমি ওই লোকটার নাম করতে চাই না। যে এসব কথা বলতে পারে, তার নাম করে চিঠি লিখলে তাকে অনেক বেশি সম্মান দেয়া হবে। যেটা ওই লোকটা একেবারেই সেটা ডিজার্ভ করে না। তাই আপনি-আজ্ঞে করার ভণ্ডামিটা করতে পারব না।

আসল কথাটা হলো, নিজেকে ওর ধর্ষিতা মনে হচ্ছিল। তাই তো? অন্তত তেমনটাই তো বলেছে। এই কমেন্টে ধর্ষণ ব্যাপারটা খুব সাধারণ, গুরুত্বহীন বলে মনে হয়েছে। ওর কাছে সেটা হতে পারে। কিন্তু বাকি সমাজও কি এটা ভাবে? আমাদের সকলের কাছেই কি ধর্ষণ ব্যাপারটা এতোটাই সহজ? মানছি, লোকটাকে ভালোই দেখতে। ট্যালেন্টও আছে। সেজন্যই সে স্টার। যার এত খ্যাতি, তার একটা দায়িত্ব থাকবে না? যা খুশি বলে দিলেই হলো? বাস্তবে ধর্ষণের কোনও গুরুত্ব না বুঝেই সিনেমায় যা দেখানো হয়, তার ভিত্তিতে একটা কমেন্ট করে দিল। এখন দেখছি এই 'রেপ কালচার'-এর মধ্যে আমরা যেন খুব বেশি করে ঢুকে পড়ছি। আর না বুঝে এসব কথা বলে আরও বিষয়টাতে ইন্ধন দিচ্ছি। শেষে শুধু একটাই কথা বলব, যারা পারভার্ট তারাই এসব কথা বলতে পারে। আমাদের সকলকে অপমান করেছে ও। তাই ওই লোকটা এই সমাজের লজ্জার কারণ।'