English Version
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১৪:৪১

নড়াইলে বাংলার ঐতিহ্যবাহী কবিগানের আসর

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি
নড়াইলে বাংলার ঐতিহ্যবাহী কবিগানের আসর

 

মধ্যরাত অবধি কবিগান মহিমা ছড়াল উপস্থিত হাজারো দর্শক-শ্রোতার মনে। মানুষ আগ্রহভরে উপভোগ করেন কবিগান। মিটিমিটি আলো-আঁধারে উদ্ভাসিত মঞ্চে দুই কবিয়ালের বিষয়ভিত্তিক বাগ্যুদ্ধ ও তর্ক-বিতর্কে মুগ্ধ দর্শকদের রাত কেটেছে নির্ঘুম।

কবিগানের এমন দৃশ্য এখন অনেকটাই অতীত। সময়ের বিবর্তনে এমন অনেক লোকজ উৎসবই হারিয়ে গেছে। কিন্তু, শেকড়সন্ধানী কিছু মানুষ সেই স্মৃতি তর্পণে আনন্দ পান। কিছু সময়ের জন্য হলেও ফিরে যেতে চান পুরনো সেই স্মৃতির অতলে। এমন ভাবনা থেকেই বিগত দুই বছর ধরে নড়াইল সদর উপজেলার গোয়াইলবাড়ি গ্রামে বসে কবিগানের আসর। গতকাল সন্ধ্যায় বিশিষ্ট সমাজ সেবক রবীন বিশ্বাস ও রসময় মালী এ কবিগানের আয়োজন করে। বিজয় ফাউন্ডেশনের সভাপতি আকরাম চুন্নুর সভাপতিত্বে এ সময় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়, বিশেষ অতিথি ছিলেন একই ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক বুলু দাস প্রমুখ।

কবিয়ালদের যুক্তি-তর্কের মধ্যে, অন্য সদস্যদের ধুয়া তোলা (সুর মেলানো) যেন পুরো কবি গানের আসরটাকে মাতিয়ে তোলে। এর মাঝে ঢোলক, বেহালা, জুড়ি, কাশি আর হারমোনিয়ামের সুরসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের বাজনা বিমোহিত করে সবাইকে। একসময় জারি-সারি আর কবিগানের খুব কদর ছিল মানুষের মধ্যে। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক সভ্যতায় মানুষ ভুলতে বসেছে জারি-সারি আর এই কবিগান। কিন্তু, এখনো এসব বিলুপ্তপ্রায় বাংলা গীতিকাব্যের হাজারো ভক্ত রয়েছে। এই কবিগান যান্ত্রিক সভ্যতায় শ্রোতা-দর্শকদের নিয়ে যায় সুদূর অতীতে। কবিয়াল শ্যামল সরকার ও মনি শংকর সরকারের যুক্তি-তর্কে মুগ্ধ হন তারা। কবিগানের শিল্পীদের দেখতে ও গান শুনতে শুধু স্থানীয়রা নয়, আশপাশের এলাকা থেকেও নারী-পুরুষ হাজির হয়েছেন। তাই বিকেল থেকে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুুরুষের ভিড় বাড়তে থাকে। সন্ধ্যাবধি কবিগানের আসরের বিশালাকৃতির প্যান্ডেল ভরে যায়।