শিশুদের স্কুল ভর্তিতে নিয়মের বেড়াজাল

সব বাবা-মারই প্রত্যাশা তার সন্তানটি মানুষের মত মানুষ হোক। এজন্য চাই যুগ উপযোগী শিক্ষা। তাই দূর মুল্যের এই প্রতিযোগিতা মূলক বাজারে বছরের শেষ দিনগুলোতে বাবা-মা ছুঁটে বেড়ান রাজধানীর নামকরা স্কুলগুলোয়। এসব স্কুলের নানান নিয়মের বেড়াজালে জড়িয়ে জটিল হয়ে পড়ে অনেক শিশুর স্কুল ভর্তি। তেমনই একজন সচেতন বাবা নূহু আব্দুল্লাহ। সম্প্রতি তিনি মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করতে গিয়ে যে সমস্যা পড়েছেন সে কথাগুলো নিজের ফেসবুক শেয়ার করেছেন। দ্যা ঢাকাপোস্ট পাঠকদের জন্য পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলো।
“ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ হারে যে ভ্যাট আদায় করা হত তাকে বেআইনি ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট।” কৃতজ্ঞতা হাইকোর্ট!
অনুগ্রহ করে শিক্ষাক্ষেত্রে বহুমুখী পদ্ধতিটিকেও সংবিধান পরিপন্থী বলে ঘোষণা করুন। কারণ, সংবিধানে থাকলেও অনেকে সেগুলো জানেন না। মাঝে মধ্যে আপনি (হাইকোর্ট) এগুলো তুলে ধরলে তবেই মানুষ একটু শুনতে পায়।
আমাদের সংবিধানের ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে, ‘রাষ্ট্র (ক) একই পদ্ধতির গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সকল বালক-বালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন৷
মহামান্য হাইকোর্ট, স্কুল এবং কলেজগুলো তো যে যার মতো সিস্টেম করে নিয়েছে। যার প্রত্যেকটি সম্পর্কে অভিভাবকরা যদি মুখস্থ করে না রাখেন তবে তো তার সন্তানের ভর্তির বারোটা বাজবে। জন্ম নিতে হবে আরেকবার।
মেয়েকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় ইন্টারনেটে খোঁজ নিতে বসলাম। প্রথম পছন্দ ছিল বিএএফ শাহীন। তাদের সাইটে ঢুকে জানতে পারলাম, তাদের নিয়মাবলী: ১. ফরম তোলার শেষ তারিখ ১৫ নভেম্বর। ২. ভর্তি করা হয় কেবল কেজি। এরপর আবার সুযোগ আসবে নবম ও একাদশে। ৩. বয়স যদি ছয় বছরের একদিন বেশি হয় তবে কেজিতে ভর্তি করা যাবে না। শহীদ আনোয়ারেরও ডেট চলে গেছে। সেখানকার নিয়ম: ১. ফরম তোলার শেষ তারিখ ২০ নভেম্বর। ২. লটারিরতে ভর্তি করা হয় কেবল নার্সারিতে। এরপর কেজি, ওয়ান, টু, থ্রি, ফোর, সিক্সে ভর্তি করা যায় রিটেন এবং ভাইভার দিয়ে। ৩. ওখানেও নার্সারিতে ভর্তির সুযোগ হারিয়েছি।
৪. শেরে বাংলা স্কুলে অনলাইনে আবেদন করতে গেলাম। কিন্তু মেয়ের বয়স ছয় পূরণ না হওয়াতে সেখানে আবেদন করতে পারলাম না। তারা ভর্তি করে ক্লাস ওয়ানে। মাত্র তিনটি স্কুলের উদাহরণ দিলাম। যার প্রত্যেকটিতে আলাদা নিয়ম। মহামান্য হাইকোর্ট, আমরা অভিভাবকরা এ শহরে অনেক ব্যস্ত সময় পার করি পেটের ভাত জোগাড়ের জন্য। অনুগ্রহ করে সবগুলো বিদ্যালয়ে একটি সিস্টেমের কথা বলে দিন। কেবল একটি সিস্টেম তখন মাথায় থাকবে, হাজারটা নয়। তাতে আমরা আরো কৃতজ্ঞ হই।
তার এই মতামতের কমেন্টে একে এম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী নামে একজন লিখেছেন, ক্লাস ওয়ানে ভর্তির জন্য বয়স দরকার ৬+, আর এসএসসি দিতে লাগে ১৫+। এসএসসির জন্য যে ১৬+ হতে হয় সে গণিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে শেখাতে পারিনি। ফলে নবম শ্রেণিতে নিবন্ধনের সময় বদলে যায় জন্ম তারিখ, এক বছর কমে যায় বয়স।