সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে হত্যাকাণ্ড

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে ক্রমেই দূরে সরছে বাংলাদেশ। এই সুযোগে স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩ মে) সকাল সাড়ে ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আয়োজিত মহাসমাবেশে এমনই মন্তব্য করেছেন শিক্ষক ও রাজনীতিবিদরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যার প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু বিচার দাবিতে এ সমাবেশ আহ্বান করা হয়।
রাবির একযুগে চার শিক্ষক হত্যার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘খুনিরা সুযোগ আর আস্কারা পেয়ে শক্তি সঞ্চয় করে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী একের পর এক খুন করে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে পারছি না। এ আমাদের ব্যর্থতা।
গুপ্তহত্যায় সরকারের ভূমিকায় কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সরকার ক্ষমতায় আছে, কিন্তু তাদের আচরণ দেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে মনে হয় না।’ স্বাধীনতাযুদ্ধে পরাজিত শক্তিরা বাংলাদেশকে আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সমাবেশে রাজশাহী-২ আসনে সাংসদ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘এভাবে অভিজিৎ, রাজীব, কলাবাগানের জোড়া খুনের মতো একটির পর একটা অসংখ্য খুন হয়, কিন্তু কোনো বিচার হয় না। এটা আমাদের দেশের পশ্চাৎগমন।’
তিনি সংবিধানের প্রতি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদেরকে সংবিধানটা ভালো করে পড়া উচিৎ। সেখানে পরিষ্কার করে বলা আছে, রাষ্ট্র কোনো ধর্মের পক্ষপাত করে না। কিন্তু ঘটনা ঘটছে উল্টো।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ আজম শান্তনু সঞ্চালনায় এবং সমিতির সভাপতি শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোকাদ্দাম হোসেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, রুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি নীরেন্দ্র নাথ মোস্তাফী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমান, রাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধরণ সম্পাদক অধ্যাপক রেজাউল করিম, সমাজকর্ম বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ছাদেকুল আরেফিন মাতিন প্রমুখ।
সমাবেশের আগে সকাল ১০টায় এক মৌন মিছিল বের করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। প্রদক্ষিণ শেষে মিছিলটি মহাসমাবেশে এসে যোগ দেয়।