English Version
আপডেট : ৭ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৭:২৯

মেট্রোরেলের রুট বদলানোর দাবি জানালো ঢাবির শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মেট্রোরেলের রুট বদলানোর দাবি জানালো ঢাবির শিক্ষার্থীরা

মেট্রোরেলের রুট বদলাও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও। এই স্লোগানে আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য পাদদেশে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। হরতাল থাকা সত্ত্বেও এই কর্মসূচিতে অংশ নেয় কয়েক’শ শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, মেট্রোরেলের রুটটি যদি ঢাকা বিশ্ববিদালয় দিয়ে যায়; তাহলে হুমকিতে পড়বে গোটা ক্যাম্পাসের শিক্ষা পরিবেশ। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হবে চারুকলা, টিএসসি ও দোয়েল চত্বর এলাকা। মেট্রোরেলের কারণে কাঁপবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম আইকন-স্থাপনা কার্জন হলের প্রতিটি ইট।

এছাড়াও বিজ্ঞান অনুষদের জিন প্রকৌশল, সিএসই, অণুজীব বিজ্ঞান ও সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ বিভাগ পড়বে সরাসরি হুমকিতে। বহু বছরের পুরনো  রাজু ভাস্কর্যও তার চিরচেনা সৌন্দর্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না। তাই অবিলম্বে মেট্রোরেলের রুট বদলানোর আহ্বান জানান তারা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমাবেশে সংহতি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকও।

সমাবেশে যোগ দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীম উদ্দীন খান বলেন, ‘মেট্রোরেল হলে চাপা পড়বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রকারান্তরে চাপা পড়বে দেশের মেধা-মনন। এই ধরণের উন্নয়ন ধারণার সবচেয়ে বড় গলদ হচ্ছে অপরিণামদর্শীতা। ইতিহাস গড়ার বিদ্যাপীঠে এধরণের হঠকারী উন্নয়ন অজস্র জটিলতা নিয়ে আসবে।’

রাষ্ট্র-দেশের জন্ম দেওয়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি সম্মান জানিয়ে মেট্রোরেলের রুট বদলাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক সামিনা লুৎফা বলেন, ‘এই প্রজেক্ট আসলে ফাঁকিবাজির উন্নয়ন। এত বড় একটি প্রকল্প ঢাবি দিয়ে হবে; অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেই পাশ কাটিয়ে কাজ শুরু হয়ে গেলো। এই রেলের কারণে যে কম্পন হবে তাতে কোনোভাবেই বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবগুলোতে গবেষণা কাজ চালানো যাবে না। মেট্রোরেলের তীব্র শব্দে চমকে উঠবে সবাই’। 

এতসব বিতর্ক সত্ত্বেও ঢাকার যানজট নিরসনে ফেব্রুয়ারিতে শুরু হতে যাচ্ছে মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ। তার আগে নকশা, রুট নির্দিষ্টকরণ, মাটি পরীক্ষা এবং পরিবেশগত বিভিন্ন সমীক্ষা শেষ করা হয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু নির্মাণ কাজ শুরুর। আর ৮টি প্যাকেজের এই মেট্রোরেল প্রকল্পের ৬টির দরপত্র আহবান এরমধ্যেই শেষ। বাকি দুটি ডিসেম্বরেই শেষ হবে।

উত্তরা থেকে মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারের মেট্রোরেলে থাকবে ১৬টি স্টেশন। স্টেশনগুলো হচ্ছে উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, টিএসসি, প্রেসক্লাব এবং মতিঝিল।