English Version
আপডেট : ২৯ অক্টোবর, ২০১৮ ১১:০২
সূত্র:

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় আজ

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় আজ

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চার আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার তারিখ সোমবার (২৯ অক্টোবর) ধার্য রয়েছে। গত ১৬ অক্টোবর মামলার সকল কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে রায় ঘোষণার জন্য এ তারিখ ধার্য করেন পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

মামলার আসামিরা হলেন- প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী ও তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রাক্তন মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। আসামিদের মধ্যে জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান কারাগারে আছেন। খালেদা জিয়া এ মামলায় জামিনে আছেন। আরেক আসামি হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন।

মামলাটিতে খালেদা জিয়া আদালতে না আসায় গত ২০ সেপ্টেম্বর তার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে বলে আদেশ দেন আদালত। গত ২৭ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া আদালতে না আসায় তার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে বলে বিশেষ জজ আদালত যে আদেশ দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করা হয়। গত ১৪ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া আদালতে না আসায় তার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে বলে বিশেষ জজ আদালত যে আদেশ দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে করা রিভিশন আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। ওই আবেদনের ওপর রোববার শুনানি হয়।

এ বিষয়ে সোমবার আদেশ দেবেন আপিল বিভাগ।

রোববার (২৮ অক্টোবর) অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলে, খালেদা জিয়ার পক্ষে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয় এবং শুনানির পরে সোমবার আদেশের জন্য রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচারিক আদালত মামলার চলার যে আদেশ দিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেছিলেন। কিন্তু হাইকোর্টেও রায় ওনার বিপক্ষে গেছে। তার বিরুদ্ধে আজকে আপিল বিভাগে এ মামলার শুনানি হলো। যদি এ মামলায় নিয়মিত আপিল করার অনুমতি দেওয়া হয় তাহলে বিচারিক আদালত কর্তৃক মামলার রায় দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে যাবে। আর যদি খালেদা জিয়ার আবেদনটি আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে যায় তবে রায় দেওয়া সম্ভব হবে।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি আসামি জিয়াউল হক মুন্নার পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি অব্যাহত রয়েছে এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন হয়নি।

গত ৩০ জানুয়ারি মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ চার আসামির সর্বোচ্চ সাজা ৭ বছরের কারাদণ্ড চায় রাষ্ট্রপক্ষ।

২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।

মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় চার্জ গঠন করেন।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামানের আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে, খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামালউদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত এবং খালেদা জিয়া ও  তারেক রহমানসহ ছয় আসামির প্রত্যেককে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। এরপর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের ২২৮ বছরের পুরোনো কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে তাকে সেখানেই রাখা হয়েছে। নির্জন এই কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে গত ৬ অক্টোবর পর্যন্ত  ২৪০দিন  ধরে কারাভোগ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।     ওই দিন (শনিবার, ৬ অক্টোবর) বিকেলে খালেদা জিয়াকে আদালতের নির্দেশে কারাগার থেকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে তিনি বিএসএমএমইউ-এর ৬১২ নম্বর কেবিনে ভর্তি আছেন।                    দীর্ঘ ৩৬ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এর আগে একবার কারাগারে যেতে হয়েছিল বেগম খালেদা জিয়াকে। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়। তখন জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার স্পিকারের বাসভবনকে সাবজেল ঘোষণা করে সেখানে রাখা হয়েছিল তাকে। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর তিনি দুর্নীতি মামলায় দ্বিতীয় বার জেলে যান।