গুলশানে জঙ্গি হামলা: তদন্ত শেষ হবে এবছর

ঢাকা: রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় চলমান তদন্ত এ বছরই শেষ হতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। ৩ মার্চ শুক্রবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এখন পর্যন্ত আমরা ২০ থেকে ২২ জনের সংশ্লিষ্টতার খোঁজ পেয়েছি। এর মধ্যে পাঁচজন ঘটনার দিনই নিহত হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অভিযানে আরো ৮ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিরা পলাতক রয়েছে। তবে এর বাইরেও আরো কেউ থাকতে পারে। তদন্তে নতুন নতুন তথ্য আসছে। তবে এখন পর্যন্ত আমরা এই কয়েকজনের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি। আশা করছি এ বছরের শেষের দিকে গুলশান হামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে পারব।’
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরের সেনপাড়া থেকে নব্য জেএমবির আধ্যাত্মিক নেতা মাওলানা মো. আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুরকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেররিজম।
গুলশান হামলায় এই আধ্যাত্মিক নেতার অনুমোদন ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন কুরআন ও হাদিসের বিভিন্ন অংশ থেকে জঙ্গিবাদের যৌক্তিকতা নিয়ে আলোচনা করতেন। বিশেষ করে তিনি বিভিন্ন দেশে যেভাবে মুসলমান জনগোষ্ঠী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তা সবার সামনে তুলে ধরতেন এবং বলতেন বিদেশি বা অন্য ধর্মাবলম্বী হত্যা করা জায়েজ।
শুধু তাই নয়, যদি কোনো মুসলমান ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলে তাহলে তাকেও কাতল করে দিতে হবে বলে তিনি যুক্তি দেখাতেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জঙ্গিরা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন মানুষের ওপর হামলা চালায়। এখন হলি আর্টিজানে হামলার আগে বড় হুজুরের কাছ থেকে তারা অনুমতি নিয়েছিল কি না তা জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে। তবে গোয়েন্দাদের তথ্যমতে হামলাকারীরা তার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছিল।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা চালায় নব্য জেএমবির সদস্যরা। এতে সেখানে ২০ জন নিহত হন। এর মধ্যে ১৭ জন বিদেশি, ৩ জন বাংলাদেশি (একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন) ছিলেন। ২ জুলাই সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হয়। এই ঘটনায় পুলিশ গুলশান থানায় মামলা দায়ের করে। মামলাটি বর্তমানে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট তদন্ত করছে।