English Version
আপডেট : ১৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ১৫:৩৪

‘বাবুর্চি থেকে জেএমবির শীর্ষ নেতা রাজীব গান্ধী’

নিজস্ব প্রতিবেদক
‘বাবুর্চি থেকে জেএমবির শীর্ষ নেতা রাজীব গান্ধী’

ঢাকা: টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া মো. জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী (৩২) নব্য জেএমবির একজন শীর্ষ নেতা ও গুলশান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী বলে জানিয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটি) প্রধান মনিরুল ইসলাম। শুরুতে সে ছিলো জঙ্গি নেতা আব্দুল আউয়ালের বাবুর্চি ছিলেন।

শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।

গতকাল রাতে টাঙ্গাইল জেলার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে নব্য জেএমবির শীর্ষ এই নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।

সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল জানান, আজ তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান আরো জানান, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় হিন্দু পুরোহিত, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী, বিদেশি হত্যা ও শিয়া মসজিদে হামলাসহ অন্তত ২৩টি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নেতৃত্ব দিয়ে ছিলেন এ্রই রাজিব।

সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাজীব জানিয়েছেন, তিনি নব্য জেএমবির একজন শীর্ষ নেতা। তিনি নারায়ণগঞ্জে পুলিশের অভিযানে নিহত নব্য জেএমবির প্রধান তামিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। এ ছাড়া তিনি উত্তরবঙ্গে সংগঠনের সামরিক কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। গুলশান হামলায় খায়রুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম এবং শোলাকিয়া ঈদগাহে হামলার সময় শফিউল ইসলাম ডনকে সরাসরি যুক্ত করেন তিনি।

তিনি জানান, সারা দেশে এ পর্যন্ত ২২ থেকে ২৩টি হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন রাজীব গান্ধী। এদের মধ্যে জাপানি নাগরিক কোনিও হোশি, টাঙ্গাইলের দর্জি নিখিল, পাবনার পুরোহিত নিত্তারঞ্জন পাণ্ডে, রংপুরে মাজারের খাদেম রহমত আলী, কুষ্টিয়ায় হোমিও চিকিৎসক সানাউর, পঞ্চগড়ে পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর, দিনাজপুরে হোমিও চিকিৎসক ধীরেন্দ্রনাথ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যা উল্লেখযোগ্য।

তিনি বলেন, রাজীব গান্ধী নব্য জেএমবিতে যোগ দেওয়ার আগে পুরাতন জেএমবিতে কাজ করতেন। ওই সংগঠনের শুরা সদস্য ডা. নজরুল ইসলামের অন্যতম সহযোগী।

রাজীব গান্ধীর বাড়ি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে। তার বাবার নাম মাওলানা ওসমান গণি মণ্ডল ও মায়ের নাম রাহেলা খাতুন। তিনি ২০০৪-২০০৫ সালের দিকে জেএমবিতে সক্রিয় হন। শুরুর দিকে তিনি জঙ্গি নেতা আব্দুল আউয়ালের বাবুর্চি ছিলেন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, গুলশান হামলার আগে জঙ্গিদের অপারেশনাল হাউজে রাজীবও থাকতেন। সেখান থেকেই তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন। হামলার দিন পর্যন্ত তার পরিবার নিয়ে ওই বাসায় ছিলেন। হামলার পর পরই পরিবারসহ শেওড়াপাড়ার একটি বাসায় চলে যান রাজীব গান্ধী। কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর যখন তার নাম পুলিশের কাছে আসে তখন তিনি উত্তরবঙ্গে চলে যান। গত কয়েকদিন থেকে তিনি আবারও ঢাকায় আসার চেষ্টা করছিলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুলশান হামলার বেশ কয়েকজন মাস্টারমাইন্ড ছিল। এখনো আমাদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে আরো তিন জঙ্গি রয়েছে। এদের মধ্যে একজন হলেন বাশারউজ্জামান চকলেট। তাদের আমরা আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।