শিশুকন্যাকে গলা কেটে হত্যা করল মা

চার বছরের শিশু কন্যা সুখুমনিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে মা মতিজন বেগম (৫০)। শনিবার (২৭ অঅগস্ট) সন্ধ্যায় নীলফামারীর চিফ জুটিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-১ এর বিচারক আকরাম হোসেনের আদালতে মতিজান বেগম ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে।
আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় রোববার (২৮ আগস্ট) মামলার বাদী ও শিশুটির পিতা ইনছান আলীকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীর জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ডিমলা থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহাবুদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, গত ২৪ আগষ্ট বুধবার মধ্য রাতে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিন বালাপাড়া গ্রামের গুচ্ছগ্রাম সংলগ্ন একটি বাঁশঝাড় হতে গলাকাটা ওই শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই শিশুটির বাবা ইনছান আলী বাদী হয়ে গ্রামের ৪জনকে আসামী করে হত্যা মামলা নং-১৪ দায়ের করে। কিন্তু তদন্তে হত্যার আলামত খুঁজে পাওয়া যায় বাদীর বাড়িতেই।
ফলে মামলার বাদীর স্ত্রী মতিজান বেগমকে শুক্রবার রাতে আটক করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয় গলাকাটার কাজে ব্যবহৃত কাস্তে ও লাশ বহনের তুষের বস্তা। তিনি স্বীকার করেন স্বামী ও স্ত্রী নিজের সন্তান সুখুমনিকে হত্যা করে অন্যকে ফাসানোর চেষ্টা করেছেন। মামলার তদন্তে তা পরিস্কার হয়ে পড়েছে।
আটকের পর বাদীর স্ত্রী মতিজান বেগম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজ সন্তানকে হত্যা এবং মরদেহ বাঁশ ঝাড়ে ফেলে দেয়ার স্বামীর সহযোগীতার কথা স্বীকার করলে আদালতে তার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়। ফলে পুলিশ শনিবার রাতে মামলার বাদী শিশুটির বাবা ইসছান আলীকে গ্রেফতার করে। তাকে রোববার দুপুরে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী রেকর্ডের জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, ইনছান আলীর পরিবারের ৭টি মেয়ে ও একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এদের মধ্যে ৪টি মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। সাত বছরের মেয়ে আয়শা আক্তারকে একজনকে লালন পালন করার জন্য দক্তক দিয়েছেন। বাড়ীতে ইনছান আলী (৬০), স্ত্রী মতিজন বেগম (৫০), ছয় বছরের মেয়ে নাছিমা বেগম, চার বছরের মেয়ে সুখুমনি ও দুই বছরের ছেলে ইয়াছিন থাকতো।
সন্তান হত্যার বিষয়ে মা মতিজান তার জবানবন্দীতে বলেছেন ঘটনার দিন সকাল অনুমান ১১টায় দিকে পুত্র ইয়াছিন ও সুখুমনি ঝগড়া ও মারামারি করছিল। এ সময় তাদের থামাতে গিয়ে সুখুমনির গলা চেপে ধরলে শিশুটি তাৎক্ষনিকভাবে মৃত্যর কোলে ঢোলে পড়ে। শিশুর মৃত্যু হলে মতিজান বেগম ও তার স্বামী ইনছান আলী সুকৌশলে গোয়াল ঘরে লাশটি খড় দিয়ে ডেকে রাখে। সন্ধ্যার পর শিশুটির লাশ কাস্তে দিয়ে কেটে বস্তার ভিতর ভরে রাখে। রাত ৮টার দিকে বাড়ীর ২০০ গজ দক্ষিনে গ্রামের আমিনুরের বাঁশঝাড় সংলগ্ন গর্তে ফেলে এসে স্বামী স্ত্রী গোসল করে নেয়। এ সময় লাশ রাখা বস্তা ও কাস্তে পরিস্কার করে রেখেছিল।