English Version
আপডেট : ১৬ আগস্ট, ২০১৬ ১২:৩৫

অবহেলায় শাপলা ক্লিনিকে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে

ইমদাদুল
অবহেলায় শাপলা ক্লিনিকে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে

পাইকগাছা শাপলা ক্লিনিক আবারো রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দিন দিন মৃত্যের সংখ্যা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। অজানা কারনে প্রতিবারই শাপলা ক্লিনিক পার পেয়ে যাচ্ছে।

একাধিক সুত্রে জানা গেছে, জেলার পাইকগাছা পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড সরল গ্রামে তেল পাম্পের সন্নিকটে মেইন সড়কের পাশে শাপলা ক্লিনিকে গত শনিবার সকালে উপজেলার চাঁদখালী ইউপির গজালিয়া গ্রামের মাসুম বিল্লার সন্তান সম্ভাবনা স্ত্রী রেশমা বেগম (১৮) কে ক্লিনিকে ভর্তি করেন।

পরবর্তিতে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যত চিকিৎসক ডাঃ সুজন কুমার সরকার, এ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার (অজ্ঞান ডাক্তার) ছাড়াই রেশমার অপারেশন করেন। পরবর্তিতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে রেশমার অবস্থা খারাপ হলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে রোগীকে খুলনায় নিয়ে যাওয়া সময় সন্ধ্যার দিকে পথিমধ্যে ডুমুরিয়ায় পৌছালে রেশমার অকাল মৃত্যু হয়। পৃথিবীর আলো দেখতে না দেখতেই মাতৃহারা হলো কণ্যা সন্তান।

এরআগেও উপজেলার হরিঢালী ইউপির নোয়াকাটী গ্রামের হাফেজ আমিরুল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন, চাঁদখালীর অতুল ঢালীর অকাল মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া গদাইপুর ইউনিয়নের সোবহান আলী গোলদার উক্ত কিনিকের ভুল চিকিৎসার স্বীকার হন। ২০১৫ সাল থেকে উক্ত কিনিকে এ পর্যন্ত প্রায় ডজনখানেক রোগী মৃত্যুর ঘটনাসহ অপচিকিৎসায় বলি হয়েছেন অনেকেই।

সরজমিনে জানা যায়, ক্লিনিক ব্যবসার উপর অর্পিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই রমরমা বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে পাইকগাছার শাপলা কিনিকের ব্যবস্থাপক ও পরিচালক স্বঘোষিত ডাঃ তাপস কুমার মিস্ত্রী।

পাইকগাছা, খুলনা মেইন রোডের আফিস ফিলিং স্টেশনের সন্নিকটে অবস্থিত শাপলা ক্লিনিকটি অবাধে সাধারণ মানুষের প্রান কেড়ে নিলেও প্রশাসন রয়েছে নিরব। প্রশ্ন উঠেছে আর কত প্রাণ নেবে শাপলা ক্লিনিকের পরিচালক তাপস কুমার মিস্ত্রী।

উক্ত ক্লিনিকে নেই কোন চিকিৎসক, নেই সার্জারী বিশেষজ্ঞ, নেই কোন অজ্ঞান করার ডাক্তার, নেই ডিপ্লোমাধারী নার্স। এমনকি প্রশিক্ষন প্রাপ্ত কোন নার্সও নেই ক্লিনিকটিতে। যার ফলে প্রায়ই অকাল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে একাধিক রোগী।

একটি সুত্র জানিয়েছে বিভিন্ন সময় ডাঃ সুজন কুমার সরকার ক্লিনিকটিতে অপারেশন করলেও তিনি কোন অজ্ঞান ডাক্তার ছাড়ায় আনাড়ি লোকজন নিয়ে অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনা করেন। অন্যদিকে কিনিক ব্যবসার আড়ালে ক্লিনিকের কর্মচারীদের সাথে তাপস কুমারের রয়েছে অনৈতিক সর্ম্পক।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, তাপস কুমারের বর্তমানে দুই স্ত্রী থাকা সত্বেও অবৈধ সর্ম্পকের জের ধরে জনৈক তাপস কবিরাজের স্ত্রী রীতা রাণীকে নিয়ে আসে তাপস মিস্ত্রী। এ ঘটনায় রীতার স্বামী পাইকগাছার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সেসময় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর সে সর্ম্পক গড়ে তোলে ক্লিনিকের আয়া রত্না মন্ডলের সাথে। পরবর্তিতে ক্লিনিকের আয়া কাম সুইপার অনিমা ওরফে কণার সাথে তাপসের অবৈধ সর্ম্পক গড়ে উঠে এবং বিষয়টি জানাজানি হলে তাপসেকে স্থানীয় লোকজন মারপিট করে।

বারবার এমন অনেক ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি ধামা চাপা পড়ে যায়। প্রশ্ন উঠেছে কোন ক্ষমতা বলে কিংবা কিসের জোরে বারবার তাপস মিস্ত্রী পারপেয়ে যাচ্ছেন? উপজেলাবাসী চিকিৎসা সেবার নামে এহেন অনিয়ম অব্যবস্থাপনার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে সংম্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিতভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবী জানিয়েছেন।

এব্যাপারে খুলনা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন তদন্ত পুর্বক দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। রোগী মৃত্যুর ঘটনা সর্ম্পকে কিনিকের পরিচালক তাপস মিস্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি এখন ওটিতে আছি।