English Version
আপডেট : ১০ মে, ২০১৬ ১৮:১৪

ফ্লেক্সিলোডের কারনে পুরোহিতকে গুমের হুমকি

রাজন
ফ্লেক্সিলোডের কারনে পুরোহিতকে গুমের হুমকি

শরীয়তপুরে মন্দিরের পুরোহিতকে বাড়ি ছাড়াসহ গুমের হুমকির মূল কারণ মোবাইল ফোন রিচার্জের ফ্লেক্সিলোডের টাকা। ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের নামে থানায় জিডি করে সুবিধা নিচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়। হুমকিদাতা গ্রেপ্তারের পরে হুমকির মূল কারণ উদঘাটন হলো। পুরোহিত ক্ষমা প্রার্থনা করলেন।

শ্রী শ্রী মহাদেব জিউ মন্দির মন্দিরের পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করছেন সুকুমার ভট্টাচার্য। মোবাইল ফোনে ব্যালেন্স রিচার্জে ডিজিট পরিবর্তন হয়ে এক মাদ্রাসা ছাত্রের ৩০ টাকা পুরোহিতের মোবাইল ফোনে চলে যায়। আর সেই টাকা কেন্দ্র করেই হুমকি ও হুমকিদাতা আটক হয়।

পালং মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড়মাস পূর্বে চাঁদপুরের মতলব উপজেলার ডিঙ্গাভাঙ্গা গ্রামের হাকিম মিয়ার মাদরাসা পড়ুয়া ছেলে আ. খালেক তার নিজ মোবাইল নম্বরে ৩০ টাকা রিচার্জ করেন। মোবাইল ডিজিট পরিবর্তন হয়ে শরীয়তপুর শহরের শ্রী শ্রী মহাদেব জিউ মন্দিরের পুরোহিত সুকুমার ভট্টাচার্যের মোবাইলে ৩০ টাকা লোড হয়।

সেই থেকে খালেক পুরোহিতের মোবাইলে কল করে ৩০ টাকা ফেরত চায়। পুরোহিত দিব, দিচ্ছি বলে টাকা না দেয়ায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পুরোহিতের স্ত্রী ও মেয়ের সাথে হুমকিদাতা খালেকের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে গালমন্দের ভাষা ব্যবহার হয়।

সর্বশেষ ২ মে খালেক ভিন্ন নম্বর থেকে কল করে পুরোহিতকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাড়ি ছাড়ার হুমকি দেয়। অন্যথায় মেরে লাশ গুম করবে আর কেউ খুঁজে পাবে না বলে হুমকী দেয়। এ বিষয়ে হুমকির দিনেই থানায় সাধারন ডায়রী করে পুরোহিত সুকুমার ভট্টাচার্য।

এ ডায়রীর ভিত্তিতে পালং মডেল থানা পুলিশ আধুনিক কলা-কৌশল ব্যবহার করে হুমকিদাতার নিজ এলাকা চাঁদপুর থেকে শুক্রবার রাতে তাকে গেপ্তার করে। হুমকিদাতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পালং থানায় নিয়ে আসা হয় শনিবার রাতে। আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মামলা হয়নি।

শ্রী শ্রী সহাদেব জিউ মন্দিরের পুরোহিত সুকুমার ভট্টাচার্য বলেন, মোবাইল ফোনের টাকা নিয়ে আমার স্ত্রী ও মেয়ের সাথে এতকিছু হয়েছে তা আমার জানা ছিল না। সর্বশেষ ২ মে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ায় পালং থানায় সাধারণ ডাইরী করি। বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি কারণে হয়েছে। তাই সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. খলিলুর রহমান বলেন, এ ধরনের ঘটনা সচরাচর ঘটে থাকে। মন্দিরের পুরোহিতকে হত্যার হুমকি ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত এবং সংখ্যালঘু সুবিধা নিতে মূল ঘটনা আড়াল করে থানায় সাধারণ ডায়রী করেন। পালং থানা পুলিশ হুমকিদাতাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। পুরোহিত তার ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।