নাজিমুউদ্দিনকে যেভাবে হত্যা করা হয়

ঢাকা: পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাঁটাপথ সূত্রাপুরের হৃষিকেশ দাস রোড। প্রতিদিনের মতো ঐদিনও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজিম সন্ধ্যায় ক্লাস শেষ করে বাসায় ফিরছিলেন। কিন্তু তিনি ঘাতকরা তার ফিছু নেয়। হৃষিকেশ লেনে সেদিন যে যার মত কাজ করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ আতঙ্কিত মানুষের চিৎকারে দিকবিদিক শুরু হয় ছোটাছুটি। একটু পরেই জানা গেল, হৃষিকেশ লেনের রাস্তটির পাশে এবং শুকনো নর্দমায় ছোপ ছোপ রক্ত, মাথায় গভীর ক্ষত চিহ্ন। পাশেই পড়ে আছে নাজিমের নিথর দেহ। অনেকেটা ভাবেই নিজের দেখা নাজিম হত্যাকাণ্ডের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বর্ণনা করলেন।
হত্যাকান্ডের সময় এই রাস্তার দু’পাশে দোকান পাটের অধিকাংশই খোলা ছিল। সব ধরণের যানবাহন চলাচল করছিল। ছোট যে দর্জির দোকানের সিঁড়ির কাছেই নাজিম উদ্দিনের নিথর দেহ পড়ে ছিল, দোকানের মালিক হত্যাকান্ডের সময় দোকানে একাই ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, “হঠাৎ দেখি রাস্তায় মানুষ ভয়ে ছোটাছুটি করছে আর ঐ যুবকটিকে চার পাঁচ জন মিলে কোপাচ্ছে। পিস্তলের গুলির শব্দও হলো। তখন দেখি, আশে পাশের সব দোকানের সাটার নামাচ্ছে। আমিও সাটার নামিয়ে দোকানের ভিতরে বসে ছিলাম"। আশপাশের মানুষজন যখন আতঙ্কে ছোটাছুটি করছ্নে। আর তখনই হত্যাকারীরা খুব সহজে মানুষের ভিড়ে মধ্যে মিশে পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সারাদিন ধরেই নাজিমুদ্দিনের হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষার্থী
হৃষিকেশ লেনে এই ঘটনা শেষ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে তিনি তার দোকানের কাছে এসে দেখেন যুবকটির মাথায় গভীর আঘাতের চিহ্ন। সেখান থেকে রক্ত ঝরছে। আর মানুষটি হা করে আছে। পা পূর্ব দিকে এবং মাথা রয়েছে পশ্চিম দিকে। হামলার পরপরই সে মারা যায় বলে ঐ দোকানদারের ধারণা। ঐ দোকান মালিক জানান, ঘটনার পঁচিশ মিনিট পর পুলিশ এসে মৃতদেহটি মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন ঐ এলাকার সব ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে দ্রুত বাড়িতে চলে যান।
সূত্রাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তপন চন্দ্র সাহা বলেন, তারা খবর পাওয়ার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ সেখানকার ব্যবসায়ীদের মুখে ঘটনার বর্ণনা শুনে তদন্ত শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নাজিমুদ্দিনের ময়না তদন্ত শেষ হয়। নিহতের লন্ডন প্রবাসী ভাই এসে মৃতদেহ সিলেটের বিয়ানীবাজারে তাদের গ্রামে নিয়ে যাবেন বলে জানা গেছে। কট্টর ইসলামকে সমালোচনা করে অনলাইনে লেখালেখি করতেন নাজিমুদ্দিন। লেখালেখির কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে কিনা পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।