English Version
আপডেট : ২৫ মার্চ, ২০১৬ ০১:৩৯

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসির বিরুদ্ধে মামলা

ষ্টাফ রিপোর্টার
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসির বিরুদ্ধে মামলা

ব্যবসায়ীকে আটক করে নির্যাতন হত্যার হুমকির অভিযোগে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসিসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। একই সঙ্গে মামলাটির বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালত এই নির্দেশ দেন। আগামী ২১ এপ্রিলের মধ্যে এই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই দোকান মালিকের নাম বাবুল হাওলাদার। তাঁর আইনজীবী নাসিমা আক্তার বলেন, নির্যাতনের অভিযোগ এনে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর ৪ (খ) ধারায় ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে নালিশি মামলা করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’ মামলার আসামিরা হলেন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি আবদুর রশীদ, উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিল মো. শফিউল্লাহ শফি এবং স্থানীয় মশিউর রহমান, মিনহাজুর রহমান, ইয়াসমিন রহমান, হোসেন খান, ফারুক আহম্মেদ, নুরুন্নবী ও মহিউদ্দিন।

মামলার আবেদনে বলা হয়, মামলার বাদী মো. বাদল হাওলাদার জমির মালিক অমৃত বিশ্বাসের সম্পত্তি ভাড়া নিয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন কাওরান বাজারের ৫৪ দক্ষিণ বেগুনবাড়ি, এফডিসির নতুন গেটে একটি দোকান নির্মাণ করেন। কিন্তু মামলার আসামি মশিউর রহমান, মিনহাজুর রহমান ও ইয়াসমিন রহমান ওই দোকান দখলের চেষ্টা করে আসছিল। বাবুল জমির মালিক অমৃতকে জানালে তিনি গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার নির্বাহী হাকিম আদালতে একটি মামলা করেন। আদালত দোকানটির দখল প্রতিবেদন দাখিলসহ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। পরে মামলাটির তদন্তভার পড়ে এস আই আবুল কালাম আজাদের ওপর।

পরে তদন্ত কর্মকর্তার নির্দেশে গত ৭ মার্চ থানায় যান বাদী। দোকানের মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র থানায় জমা দেন তিনি। পরে এস আই আবুল কালাম আজাদের নির্দেশনামতো থানায় ১২ মার্চ হাজির হন বাদী। এরপর ফের এস আই আবুল কালাম আজাদের নির্দেশে ফের ১৩ মার্চ থানায় হাজির হন বাদী। থানায় দেখেন, আসামি মশিউর রহমানসহ তাঁর লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে ঘোরাফেরা করছেন। এরপর ওসি বাদীকে কড়া স্বরে বলেন, ‘মশিউর রহমানদের ওই দোকানের মালিক মেনে তাদের দোকান বুঝিয়ে দেন। তা না হলে আপনার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়ে জেলে ঢোকানো হবে।’

এরপর আসামিপক্ষ অঙ্গীকার নামা লেখার জন্য হুমকি দিতে থাকেন। এ সময় কাউন্সিলর মো. শফিউল্লাহ সেখানে উপস্থিত হয়ে বাদীকে গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে এস আই জাহাঙ্গীর একটি সাদা কাগজে বাদী ও আসামি মশিউর রহমানের মধ্যে একটি অঙ্গীকার নামা লেখেন। তাতে লেখা, ভাড়াটিয়া হিসেবে বাদী তার দোকান আসামি মশিউর রহমান বরাবার বুঝিয়ে দিয়ে দোকান ছেড়ে চলে যাবে।

এই অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করতে না চাইলে আসামিরা জীবননাশের হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে তাতে স্বাক্ষর করেন বাদী। বিষয়টি দোকানের মালিক অমৃতকে জানালে তিনি আইনজীবীর নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করতে বলেন। আইনজীবীর পরামর্শে এ ঘটনা পুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরাবর জানানো হয়। তাতে বলা হয়, ‘জোরপূর্বক যেন দোকান থেকে তাকে উচ্ছেদ না করতে পারে।’ কিন্তু কোনো প্রকার ব্যবস্থা না নিলে ওই দিন রাতে মশিউর রহমান ও মিনহাজ বাদীর দোকান দখল করে তালা লাগিয়ে দেয়। হুমকি দিয়েছে, বাদী দোকানের কাছে আসলে তাকে গুলি করে হত্যা করবে।

এব্যাপারে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশীদ বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন।