সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের এজলাসে নেওয়ার সময় আদালত প্রাঙ্গণে কর্তব্যরত এক সাংবাদিককে মারধর করতে উদ্যত হয়েছিলেন এটিএম জালিয়াতি করে ব্যাংক গ্রাহকদের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার আসামি বিদেশি নাগরিক পিওতর সেজেফান মাজুরেক।

ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের পুরানো ভবনের তিন তলায় বিচারকের এজলাস থেকে পিওতরকে বের করার পর বারান্দায় তিনি ঢাকা ট্রিবিউনের আদালত প্রতিবেদক সানাউল ইসলাম টিপুর উপর চড়াও হন। ওই সাংবাদিককে গালাগালি করার পর তিনি ডান হাত বাড়িয়ে থাপ্পড় মারতে যান এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন।পুলিশের অবহেলার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবিরা। এ সময় পিওতরের বাম হাতে হ্যান্ডকাপ থাকলেও ডান হাতে ছিল না। তার দুই হাতে হ্যান্ডকাপ থাকলে এ ঘটনা ঘটতে পারত না বলে তাদের মত।

আসামি পিওতরের পক্ষের কনিষ্ঠ আইনজীবী রুনা লায়লা সাংবাদিকদের কাছে এই ঘটনাটি স্বীকার করে সাংবাদিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।ঘটনাটি ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে জানানো হলে তিনি দায়িত্বে থাকা পুলিশদের সতর্ক করে দেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেন।

ব্যাংকের এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় ছয় দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর পুনরায় হেফাজতে চেয়ে পুলিশ পিওতর এবং সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাকে আদালতে নিয়েছিল। তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই সোহরাব মিয়ার আবেদন শুনে হাকিম আবদুল্লাহ আল মাসুদ আরও পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। এদিন আদালতে পিওতরের স্ত্রী শিশুসন্তান নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।

তিনটি ব্যাংকের ছয়টি এটিএম বুথে জালিয়াতির যন্ত্র বসিয়ে গ্রাহকদের লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠার পর একটি ব্যাংকের বুথের সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে শনাক্ত করে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার করা হয় পিওতরকে।

গোয়েন্দা পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, ইউক্রেইনে জন্মগ্রহণকারী পিওতর পোল্যান্ডের ভুয়া পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে বিয়ে করে সংসার পেতেছিলেন। তার কাছে জার্মানির একটি পরিচয়পত্রও পাওয়া গেছে।২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর পিটার ব্যবসায়িক কাজের কথা বলে বাংলাদেশ আসেন। প্রথম কয়েক মাস তিনি গুলশানের ‘হলি ডে প্লানেটে’ ছিলেন। পরে এক নারীকে বিয়ে করে গুলশানের এক বাসা ভাড়া নেন।