দুদকে ১২ মিলিয়ন ডলারের হিসাব দেবেন মুসা

বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরকে আজ বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। জিজ্ঞাসবাদে সে সুইস ব্যাংকে জব্দ ১২ মিলিয়ন ডলারের হিসাব দিতে সম্মত হয়েছেন তিনি।
আজ সকাল ১১টার কিছু আগে তিনি দুদক কার্যালয়ে পৌঁছান। দুদকের পরিচালক ও এ-সংক্রান্ত অনুসন্ধান দলের প্রধান মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে একটি দল মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
গত ১৩ জানুয়ারি মুসা বিন শমসেরকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দুই-তিন মাসের জন্য সময় চেয়ে তিনি আবেদন করেন। সে আবেদন নাকচ করে দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে তাঁকে ২৮ জানুয়ারি দুদকে হাজির হতে চিঠি দেওয়া হয়। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ১২ জানুয়ারি দুদকের তলবে হাজির হতে পারছেন না বলে মুসা বিন শমসের যে চিঠি পাঠিয়েছেন, এতে বলা হয়, তিনি মৃত্যু আতঙ্কে (ডেথ ফোবিয়া) ভুগছেন। একই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসও তাঁকে ভোগাচ্ছে। চিকিৎসকের সনদ যুক্ত করে দুদককে দেওয়া চিঠিতে তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় দুই থেকে তিন মাস পেছানোর আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক ২৮ জানুয়ারি নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্ধারণ করে মুসাকে চিঠি পাঠায়।
বিতর্কিত এ ব্যবসায়ীর কথিত বিপুল পরিমাণ সম্পদের রহস্য উদ্ঘাটনে ৪ জানুয়ারি তৃতীয়বারের মতো তাঁকে তলব করে নোটিশ দেয় দুদক। পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলী স্বাক্ষরিত ওই তলবি নোটিশে তাঁকে ১৩ জানুয়ারি বেলা ১১টায় সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছিল।
আজকের জিজ্ঞাসাবাদে সুইস ব্যাংকে নিজের হিসাব নম্বর এবং এ-সংশ্লিষ্ট তথ্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দিতে সম্মত হয়েছেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসের। দুদকের কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন। দুদক কমিশনার বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে মুসা সংশ্লিষ্ট সব তথ্য দুদককে সরবরাহ করবেন। এ ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দেওয়া কিংবা তথ্য দিতে অসহযোগিতা করলে আইনি ব্যবস্থা নেবে দুদক। এর আগে বেলা ১১টা থেকে একটা পর্যন্ত মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদকের পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে একটি দল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুসা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি দুদককে সব তথ্য দিয়েছেন। সুইস ব্যাংকে ‘জব্দ’ ১২ বিলিয়ন ডলার প্রসঙ্গে মুসা বলেন, অনিয়মিত লেনদেনের কারণে ওই অর্থ জব্দ অবস্থায় রয়েছে। এ বিষয়ে সেখানকার আদালতে মামলা চলছে। মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মুসা দাবি করেন, তিনি স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন না। একাত্তরের ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর বাড়িতেই ছিলেন। এরপর ফরিদপুর চলে যান। ২১ এপ্রিল তাঁকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করে। ৯ ডিসেম্বর তিনি মুক্তি পান। মুসার দাবি, মৃতপ্রায় অবস্থায় পাকিস্তানি বাহিনী তাঁকে মুক্তি দেয়।