English Version
আপডেট : ১১ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৭:১৫

বেসিক ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক
বেসিক ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা রিমান্ডে

বেসিক ব্যাং‌কের দুই হাজার কো‌টি টাকার ঋণ কে‌লেঙ্কা‌রির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দা‌য়ের করা দুই মামলায় ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। তাই এই তিন কর্মকর্তাকে আগামী রোববার থেকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক।

দুদকের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম তসরুজ্জামানের আদালত সোমবার সকালে এ আদেশ দেন।

রিমান্ড পা্ওয়া কর্মকর্তারা হলেন, বেসিক ব্যাংকের দুই ডিএমডি ফজলুস সোবহান ও মো. সেলিম। এবং ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) শিপার আহমেদ। ইতিমধ্যে তিনজনকে বেসিক ব্যাংক বরখাস্ত করেছে।

আদালত বেসিক ব্যাংকের ডিএমডি ফজলুস সোবহানকে গুলশান ও মতিঝিল থানার দুই মামলায় তিন দিন করে ছয়দিন রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। অপর আসামি ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) শিপার আহমেদকে গুলশান থানার মামলায় তিনদিন ও মতিঝিল থানার মামলায় মো. সেলিমকে তিনদিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ঢাকা মহানগর হাকিম তসরুজ্জামানের আদালতে আসামিদের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। তবে আদালত তাদের সেই আবেদন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার ফজলুস সোবহান ও শিপারকে ঢাকা সিএমএম আদালতে হাজির করে গুলশান থানার দায়ের করা দুদকের মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক ঋত্বিক শাহ।

অপরদিকে মতিঝিল থানায় দুদকের দায়ের করা মামলায় ফজলুস সোবহান ও সেলিমকে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম। আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠিয়ে রিমান্ড শুনানির জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন।

বৃহস্পতিবার দুদক তাদের আটক করে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই ঋণ জালিয়াতিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে ওই কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করেছে।

দুদকের দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে ৪৩ নম্বর মামলায় তাদের আটক দেখানো হয়েছে। আসামিদের বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।

প্রায় দুই হাজার ২’শ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযাগে ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর মোট ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে পৃথক ৫৬টি মামলা করে কমিশন। মামলাগুলোর এজাহারে ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় গ্রেফতার ওই ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রধান ভূমিকা ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় দুদক দুই ডজন মামলা করলেও আসামি হিসেবে ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা কেউ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, সিএজি কার্যালয় ও খোদ বেসিক ব্যাংকের নানা প্রতিবেদনে এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান বাচ্চুসহ অনেকের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়। পক্ষান্তরে দুদকের কোনো মামলায় ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান বাচ্চুর সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় বিভিন্ন মহলে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়। তবে কমিশন বলছে, মামলার তদন্তে বাচ্চুর কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তা বিবেচনায় নেওয়া হবে।

আবদুল হাই বাচ্চু বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকাকালীন চার বছর তিন মাস সময়ে ৬ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করেন। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকাই নিয়ম ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল। যা অনুসন্ধান করে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় বাচ্চুকে ছাড়াই মামলা করে দুদক।