গাজীপুরে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হাত-পা বেঁধে ধর্ষণের পর এক কিশোরীকে হত্যা করেছে কয়েক যুবক। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বুধবার পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- নীলফামারী জেলার ডোমার থানার চিলাহাটি মাস্টার পাড়া এলাকার মৃত নবির উদ্দিনের ছেলে মো. সাঈদ ইসলাম (১৯) ও একই জেলা সদরের তিস্তা চৌরাটারি এলাকার মোঃ শফিকুল ইসলামের ছেলে মো. রনি মিয়া (২১)।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই গাজীপুরের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাওছার উদ্দিন গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাশিমপুর থানাধীন বারেন্ডা পশ্চিমপাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের বাড়ীর ভাড়া বাসায় থাকে সুমাইয়া খাতুন। একই বাসায় পাশের রুমে ভাড়া থাকে রনি। পাশের বাড়িতে ভাড়া থাকে রনির বন্ধু মিলন, হাসান ও সাঈদ। বন্ধুত্বের সম্পর্কের সুবাদে রনিদের বাসায় তিন বেলা টাকার বিনিময়ে খাওয়া দাওয়া করত মিলন, হাসান ও সাঈদ আসামি। ভিকটিম সুমাইয়ার সঙ্গে মিলনের প্রেমের সর্ম্পক ছিল। এদিকে সুমাইয়াকে পছন্দ করতো মিলনের বন্ধু রনি ও সাঈদ। তারা বিভিন্ন সময় সুমাইয়াকে প্রেমের প্রস্তাব দিত এবং উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করত। এরপ্রেক্ষিতে গত নবেম্বর মাসে ভিকটিমের মা বাসাটি ছেড়ে দেয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর সকাল ৯টার পর সাঈদ নাস্তা খেতে রনির বাসায় যায়। এসময় রনি ও সাঈদ ওই কিশোরীর সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনানুযায়ী আসামী রনি খেলার ছলে ওই কিশোরীর পড়নের কাপড় খোলার চেষ্টা করলে কিশোরী বাঁধা দেয়। তখন আসামী সাঈদ ভিকটিমের পা ধরে রাখে ও আসামী রনি ভিকটিমের দুই হাত বেঁধে ভিকটিমের মুখে বালিশ চাপা দেয়। এসময় প্রথমে রনি ধর্ষন করে ও সাঈদ তার মোবাইলে রনির ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও করে। পরে সাঈদ ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। ধর্ষনের ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার ভয়ে রনি ও সাঈদ মিলে শ্বাসরোধ করে কিশোরীকে হত্যা করে। পরে হত্যার ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার জন্য তারা ওই কিশোরীর লাশ তাদের ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। এ ঘটনায় গত বছর ৩১ অক্টোবর কাশিমপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। পরে ময়না তদন্তে ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার আলামত পায় চিকিৎসক। 

এ ঘটনায় গত ৩ জুলাই ওই থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে ওই দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত দুইজনকে গাজীপুর আদালতে হাজির করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।