English Version
আপডেট : ১৪ জুলাই, ২০২১ ১৫:৪৪

টাকা না দেওয়ায় বাবার সামনে কোপাতে থাকে ছেলের লাশ

অনলাইন ডেস্ক
টাকা না দেওয়ায় বাবার সামনে কোপাতে থাকে ছেলের লাশ

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে টাকার দাবিতে মরদেহ আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে ডোম লক্ষ্মণ ও হিরা লালের বিরুদ্ধে। কয়েক দফায় টাকা দিয়েও ছেলে শান্ত প্রমাণিকের (১৩) মরদেহ সময়মতো নিতে পারেননি হতভাগ্য ভ্যানচালক বাবা। তাই দিনভর তিনি অপেক্ষা করেন মর্গের সামনে।

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বিকেলে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে এমন ঘটনা ঘটে।

সম্পর্কিত খবরকুষ্টিয়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থীর রহস্যজনক মৃত্যুইবির সামনে ট্রাকের ধাক্কায় কলেজশিক্ষকসহ নিহত ২কুষ্টিয়ায় একদিনে আরো ১২ মৃত্যুশান্ত প্রামাণিক দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের গাছিরদিয়া গ্রামের টলটলিপাড়ার হতদরিদ্র ভ্যানচালক কমল প্রমাণিকের ছেলে। অভাব-অনটনের সংসারে পড়াশোনা ছেড়ে মাদ্রাসাছাত্র শান্ত কৃষি কাজ করত।

লাশ পাহারা দেওয়ার কথা বলে দুই ডোম প্রথমে সোমবার রাতে দেড় হাজার টাকা দাবি করে। সকালে আসার সঙ্গে সঙ্গে আবার ৭০০ টাকা, পরে আরো ১০০ টাকা নেয়। তাদের বারবার বলেছি, আমি গরিব মানুষ, আমার এত টাকা নেই। টাকা না দেওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার সামনে ছেলের লাশ কোপাতে থাকে।

সোমবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় মায়ের ওপর অভিমান করে কীটনাশক পান করে। তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত পৌনে ১০টার দিকে শান্ত মারা যায়।

কমল প্রমাণিক বলেন, ডোম লক্ষ্মণ ও হীরালাল আমাকে মর্গে ডেকে নিয়ে ছেলের লাশ দেখিয়ে টাকা দাবি করে। তারা বলেন, টাকা না দিলে ময়নাতদন্ত করা হবে না। লাশও দেওয়া হবে না। আমি বারবার তাদের অনুরোধ করেছি, বলেছি, টাকা কোথায় পাব আমি। কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনি। কিন্তু তারা জানায়, ১০ হাজার টাকা দিয়ে লাশ নিতে হবে। পুলিশের সামনেই তারা এ টাকা দাবি করে আমার কাছে।

তিনি আরো বলেন, লাশ পাহারা দেওয়ার কথা বলে দুই ডোম প্রথমে সোমবার রাতে দেড় হাজার টাকা দাবি করে। সকালে আসার সঙ্গে সঙ্গে আবার ৭০০ টাকা, পরে আরো ১০০ টাকা নেয়। তাদের বারবার বলেছি, আমি গরিব মানুষ, আমার এত টাকা নেই। টাকা না দেওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার সামনে ছেলের লাশ কোপাতে থাকে।

ডোম লক্ষ্মণ ও হিরালাল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তারা ইচ্ছে করে লাশ ফেলে রাখে। আমরা কোনো টাকা দাবি করিনি।

এ বিষয়ে মর্গে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবল হাবিব বলেন, আমার সামনেই দুই ডোম কমল প্রামাণিকের কাছে টাকা দাবি করেছে। আমি তাদের কোনো কিছু বলিনি। কারণ, তারা আমার কথা শোনে না। তারা মাদকাসক্ত।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা ছাড়া কয়েক মাস আগে আমি সদর হাসপাতালে যোগদান করেছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে কঠোর ব্যবস্থা নেব।