English Version
আপডেট : ১০ জুলাই, ২০২১ ১৬:১৬

লকডাউনে দিশেহারা খেটে খাওয়া হাজারো পরিবার

অনলাইন ডেস্ক
লকডাউনে দিশেহারা খেটে খাওয়া হাজারো পরিবার

মহামারী করোনার সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনে চরমভাবে বিপাকে পড়েছেন রাজবাড়ীর পাংশা, কালুখালী, বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলার অসংখ্য সাধারণ মানুষ। এদের মধ্যে রিক্সা-অটোরিক্সা চালক, পরিবহন শ্রমিক, হোটেল ব্যবসায়ী, শ্রমিক, হকার্স, সেলুন মালিক ও শ্রমিক, কুলি, মজুর, প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার শ্রমজীবী মানুষ বেশি বেকায়দায় রয়েছেন। চলমান সর্বাত্মক লকডাউনের প্রভাবে সংকুচিত হয়েছে শ্রমজীবী মানুষের কাজের সুযোগ। দক্ষিণ বঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত সদা ব্যস্ত দৌলতদিয়া ঘাটে শ্মশান নিরবতা বিরাজ করছে। অতি জরুরি কিছু যানবাহন ছাড়া ফেরিতে তেমন কোন পারাপার নেই। ঘাটের লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট, টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও নিকটস্থ বাজারে নেই মানুষের তেমন কোন আনাগোনা। ঘাটে নেই হকারদের হাক ডাক কাজকর্ম ও ব্যবসা বন্ধ থাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দূর্বিসহ সময় পার করছে হাজারো পরিবার। অনেকেরই সংসার চলছে অর্ধাহার-অনাহারে। কেউবা জমানো টাকা, আবার কেউ কেউ ভেঙে খাচ্ছেন ব্যবসার মূলধন।

বিশেষ করে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলদিয়া ঘাটের উপর নির্ভরশীল কয়েক হাজার পরিবার চরম দূর্দশার মধ্যে পড়েছে। এছাড়া চরম অনিশ্চিয়তার মধ্যে রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ দৌলতদিয়া যৌন পল্লীর কয়েক হাজার বাসিন্দা। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি ভাবে ত্রাণ কার্যক্রমও চলছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল বলে অনেকেই জানান। পাংশা উপজেলার স্টেশন এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী চা বিক্রি করে যিনি সংসার চালাতেন নূর আলী বলেন, ‘এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এই চা দোকানটা করেছি। এ দোকানটাই আমার আয়ের একমাত্র উৎস। কিন্তু লকডাউনে দোকান বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে আমার না খেয়ে থাকার অবস্থা হয়েছে। কিস্তির চিন্তা তো আছেই।

পাংশা বাজারের হোটেল কর্মচারি হানাস মোল্লা বলেন, ‘লকডাউনে সব বন্ধ খাকলেও পেট তো আর বন্ধ থাকে না। হোটেলে কাজ করে যা পাই তা দিয়ে সংসার চালানো দায়। তার উপর আবার লকডাউনে সব বন্ধ। শুনি সরকার কত কিছু দেয়, কিন্তু আমরা তো কিছুই পাই না।’ গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড এলাকার ক্ষুদ্র পার্স ব্যবসায়ী মো. নবু সরদার বলেন, গত বছরের মার্চে করোনা শুরুর পর থেকেই ব্যবসায় মন্দা চলছে। তারপর একের পর এক লকডাউন। এ অবস্থায় সংসার চালাতে পুঁজি ভেঙ্গে খাচ্ছি। মূলধনও প্রায় শেষ হয়ে আসছে। কিন্তু কিছুই করার নেই। তার উপর আছে কিস্তির জ্বালা। এমতাবস্থায় সরকারের সহযোগিতা ছাড়া বেঁচে থাকাটা কঠিন হয়ে পড়েছে।

এ প্রসঙ্গে পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আলী বলেন, সরকারের ভিজিডি-ভিজিএফের মতো নিয়মিত খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম চলমান আছে। পাশাপাশি করোনার কারণে আমরা স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের মাধ্যমে তালিকা করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছি। আজও শনিবার (১০ জুলাই) আমরা পাংশায় পরিহন শ্রমিকদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছি,পর্যায়ক্রমে সকল খেটে খাওয়া মানুষদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হবে। এছাড়া ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে কেউ সহায়তা চাইলে সেখানেও দ্রুত সহায়তা পৌছে দেয়া হচ্ছে।