English Version
আপডেট : ৬ জুলাই, ২০২১ ১১:৫৭

মুন্সিগঞ্জে তিন মাস না যেতে ভেঙে গেলো মুজিববর্ষের ঘর

অনলাইন ডেস্ক
মুন্সিগঞ্জে তিন মাস না যেতে ভেঙে গেলো মুজিববর্ষের ঘর

মুন্সিগঞ্জ: মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কবলে ধসে পরেছে মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের জন্য নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘর। নির্মানের দুই মাস না যেতেই ১ লাখ ৭১হাজার টাকা ব্যায়ে নির্মিত ঘরটি ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটলো। একই সাথে ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে ওই স্থানের একই প্রকল্পের আরও কয়েকটি ঘর। এতে কাজের মান এবং ঘর নির্মাণের স্থান নির্বাচন নিয়ে উপকার ভোগী ও স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে বিরুপ পতিক্রিয়া।

গজারিয়া উপজেলা প্রকল্প অফিস সূত্রে জানাযায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে গজারিয়া উপজেলায় গৃহহীন পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ১৫০টি ঘর নির্মান শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। এরমধ্যে বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া গ্রামে ৪৭লাখ ৮৮হাজার টাকায় ২৮টি ঘর নির্মান হয় মার্চ মাসের শেষ দিকে। ঘর নির্মান শেষে ঘরগুলো বরাদ্ধ দেওয়া হয়। তবে এখনো সবগুলো ঘরে বসবাস শুরু করেনি উপকারভোগীরা।

এদিকে নির্মানের ৩মাস যেতে না যেতে গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে গত শুক্রবার (২জুলাই) সকালের দিকে বড়রায়পাড়া প্রকল্পের ২৭নং ঘরটি একাংশ এবং একটি কলম ভেঙে পড়ে । পাশের ২৮নম্বর ঘরটিরও একই অবস্থা। ঘরের তলায় মাটি সরে যাওয়ার কারণে যে কোন মুহূর্তে সেটা ভেঙে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, বৃষ্টিতে ঘরে নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে । একটি ঘর ভাঙনের পর এখন ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে একই সারির অন্তত ৬টি ঘর। খোজ নিয়ে জানাযায়, ভেঙে যাওয়া ঘরটির মালিক ওমর আলী। তবে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সেটি সম্ভব হয়নি।

এদিকে ঘর ধসের পর ঘর নির্মানের স্থান নির্বাচন এবং কাজের মান প্রশ্ন প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয়দের মাঝে। স্থানীয়রা জানান, সরকারি অনেক খাস জমি থাকা সত্তেও বড় রায়পাড়ায় ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে নদীর ধারে। যেকোনো সময় বন্যা এবং বৃষ্টিপাতে যেগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

অন্যদিকে ২৮টি ঘর নির্মান হলেও এখন পর্যন্ত পাঁচটি পরিবার সেখানে থাকছেন বলে উপকারভোগীরা জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, তারাও এখানে নিয়মিত থাকবেন না শুধুমাত্র প্রশাসনের ভয়ে দিনের বেলায় এসে ঘোরাফেরা করেন। বিশুদ্ধ খাবার পানি এবং রান্না করার ব্যবস্থা না থাকায় আপাতত প্রকল্পে থাকা সম্ভব নয় বলে জানান তারা।

এবিষয়ে গজারিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, বড় রায়পাড়ায় বালির উপর ৩সারিতে ঘরগুলো নির্মান করা হয়েছিলো। বৃষ্টির পানি প্রকল্পের মাঝ বরাবর গিয়ে শেষ ঘরের পাশ দিয়ে নিস্কাষণের সময় বালু সরে যাওয়াতে একটি গর্ত তৈরি হয়। এতে একটি ঘরের বারান্দার কিছু অংশ ও একটি কলম ধসে পড়েছে। ওই ঘরটিতে কোন লোকজন ছিলো না । লোক থাকলে হয়তো তারা দেখে রাখতো । আমরা ধসে পড়া ঘরটির মেরামত করে দিচ্ছি।

গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ওই স্থান দিয়ে পানির ঢল ছুটে যাওয়াতে ঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা মেরামতের জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। ঘর নির্মান কাজে কোন বিচ্যুতি হয়নি। সবগুলো ঘরই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে বিদ্যুৎয়ের সংযোগ না থাকায় এখনো অনেক পরিবার উঠেনি। পরিবার গুলো সেখানে আসতে শুরু করেছে। শীঘ্রই সেখানে বিশুদ্ধ পানিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে।