English Version
আপডেট : ৪ জুলাই, ২০২১ ১৬:৩৫

লকডাউনে দিশেহারা নিম্নআয়ের মানুষ

অনলাইন ডেস্ক
লকডাউনে দিশেহারা নিম্নআয়ের মানুষ

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউনের চতুর্থ দিন চলছে। এক সপ্তাহের লকডাউনে বিপাকে পড়েছেন দেশের নিম্নআয়ের মানুষ। চিন্তার ভাঁজ খেটে খাওয়া দিনমজুরদের কপালে। তাদের চোখে-মুখে একটাই প্রশ্ন, কিভাবে হবে খাবার সংকটের সমাধান? জীবন বাঁচাতে সরকারের সহযোগিতার দিকেই চেয়ে আছেন শ্রমজীবী মানুষরা।

লকডাউনে খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে অনেকের কাজই বন্ধ হয়ে গেছে। কারো ঘরে খাবার নেই, কারো নেই কাঁচা বাজার। মূল কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যে যেই কাজ করতে পারছেন টুকটাক করছেন।

লকডাউনে থেমে গেছে শনিরআখড়ার খুদে ব্যবসায়ী মো. মিজানের জীবনটাও। তিনি জানান, চায়ের দোকান থেকে দুধের খালি ডিব্বা ক্রয় করে বিক্রি করতাম। লকডাউনে কারনে দোকান বন্ধ হওয়ায় তার ব্যবসাও বন্ধ হয়ে যায়। এখন তার ঘরে খাবার সংকট তৈরি হয়েছে। নেই চাউল, কাঁচা বাজার। তাই দুই শত টাকা দিয়ে একটি ভ্যানগাড়ি ভাড়া নিয়েছেন তিনি। দুপুর পর্যন্ত ২৫০টাকা খ্যাপ মেরেছেন তিনি।

তিনি বলেন, বিকেলে আবার বের হলাম যাত্রী পেলে কিছু টাকা হলে কিছু চাল-ডাল কিনতে পারবো। আক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মতো সাধারণ মানুষের খোঁজ খবর কেউ রাখেনা। আমার মতো যাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে তাদের দিকে যদি সরকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে আমাদের কষ্ট কিছুটা হলেও দূর হতে।’

টং দোকানে চা বিক্রি করতেন মো. রশিদ। তিনি বলেন, লকডাউনের কারনে দোকান বন্ধ। তাই ফ্লাক্সে করে হেটে হেটে চা বিক্রি করছি। টং দোকানে চা বিক্রি করেই আমার সংসার চলে। এখন দোকান বন্ধ হওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। একদিন দোকান না চালাইলে সংসার চলে না। সেখানে এতো দিন দোকান বন্ধ রাখলে কি ভাবে চলবো? এ-সময় সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

চায়ের দোকানে ঘুরে ঘুরে চা পাতার প্যাকেট বিক্রি করেন মো. সজল। তিনি বলেন, করোনার আগে প্রতিদিন দশ বার কেজি চা পাতা বিক্রি করতাম। লকডাউনের এই চারদিনে সাত থেকে আট কেজি চা পাতা বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, লকডাউনের কারনে সমস্ত দোকান বন্ধ থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনে তাদের মতই আরও দিশেহারা ঢাকার বিভিন্ন পেশার খেটে খাওয়া মানুষ। উল্লেখ্য, বুধবার (৩০ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২১টি শর্ত দিয়ে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় এ সময়ে জরুরি সেবা দেয়া দফতর-সংস্থা ছাড়া সরকারি-বেসররকারি অফিস, যন্ত্রচালিত যানবাহন, শপিংমল দোকানপাট বন্ধ থাকবে। খোলা থাকবে শিল্প-কারখানা। জনসমাবেশ হয় এমন কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না।