English Version
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৫:১৫

কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে কালাই

অনলাইন ডেস্ক
কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে কালাই

শীত আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অবধি বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির। শীত আর ঘন-কুয়াশা সঙ্গে বইছে ঠান্ডা বাতাস। আর ক্রমেই শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, কমছে তাপমাত্রা।

গত কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির কারণে শিশু, বয়স্ক, কর্মজীবী, শ্রমজীবী, দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষগুলোর দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে কয়েকগুণ।

মঙ্গলবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এর আগে সোমবার সকালে উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

ভোর রাত থেকে সারাদিন ঘন কুয়াশার ঢেকে থাকে গ্রাম ও শহরের মাঠ ঘাট। ঘন কুয়াশার কারণে ৪০-৫০ মিটার দূরত্বের জিনিসও দেখা যাচ্ছে না। দিনের বেলা ঘন-কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাওয়ায় দিনের বেলায় বিভিন্ন যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা গেছে। জরুরি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে কেউ বাইরে বের হচ্ছে না।

তবে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। শীতের তীব্রতা কারণে বিভিন্ন হাট-বাজার ও শহরে আগের তুলনায় লোক সমাগম কমেছে। দেখা দিয়েছে মানুষ এবং গবাদি পশু-পাখির শীতজনিত বিভিন্ন রোগ-বালাই। গত কয়েক দিনের তুলনায় হাসপাতপালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলের বীজতলা ও আলুসহ বিভিন্ন ফসল। 

শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই খড়কুটোতে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। গরম কাপড়ের জন্য গরীব ও অভাবী মানুষরা ভীড় জমাচ্ছেন পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। বিশেষ করে এই কনকনে শীতে ও ঝিরিঝিরি ঠান্ডা বাতাসে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। 

কালাই পৌরসভার অটোভ্যান চালক মনোয়ার, হেলাল, হানিফ ও জলিল হোসেন জানান, গত কয়েক দিন শীতের কারণে অটোভ্যান নিয়ে কাজে বের হতে পারেননি তারা। টানাটানির সংসারের কারণে বাধ্য হয়ে দুপুরে অটোভ্যান নিয়ে কাজের জন্য বের হয়েছেন। কিন্তু শহরে লোকজন খুব কম থাকায় তারা বিপাকে পড়েছেন।

উপজেলার মাত্রাই গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গির ও আশিক জানান, বোরো চাষাবাদের জন্য বীজতলা তৈরী করেছেন তারা। কিন্তু কনকনে শীত ও বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির, এ কারণে সেই বীজতলা প্রায় নষ্ট হতে বসেছে।

উপজেলার পূর্ব-কৃষ্ঠপুর গ্রামের বৃদ্ধ আলতাব আলী (৯০) ও জিন্দারপুর গ্রামের আমছের হোসেন (৮৮) বলেন, এই শীতে খুব কষ্ট পাওচি বা..(পাচ্ছি ভাই)। আর বুঝি বাঁচা যায় না। দরকার ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া যাওচে (যাচ্ছে) না। 

কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তাহের ও মো. তানভীর হোসেন বলেন, তীব্র শীতের ফলে ফুসফুসের সংক্রমণ ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এসব রোগে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়াও কয়েক দিন ধরে ডায়রিয়া ও আমাশয়জনিত রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেন পারভেজ বলেন, কালাই পৌরসভার মেয়রসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাঝে দুই হাজার ৭শ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও কম্বল বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।