English Version
আপডেট : ৩১ আগস্ট, ২০১৭ ১১:১০

রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: নাফ নদী থেকে আরও ১৯ লাশ উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক
রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: নাফ নদী থেকে আরও ১৯ লাশ উদ্ধার

কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবির ঘটনায় আরও ১৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে গত দুইদিনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৩ জনে দাঁড়িয়েছে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরজুল হক টুটুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) ভোররাতে নাফ নদীর শাহপরীর দ্বীপসহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় এসব মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এঁদের মধ্যে ১০ শিশু ও ৯ জন নারী রয়েছেন।  এর আগে বুধবার সকালে এই ঘটনায় একই এলাকা থেকে পৃথকভাবে আরও ৪ জন রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আমিন জানান, বুধবার রাতে নাফ নদীর জলসীমানা অতিক্রম করে বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের সময় রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাত ১১টার দিকে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপে ২ জন ও ভোর সকালে ১৫ জন রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে বুধবার সকালে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ নাফ নদীর মোহনা গোলারচর মুখে ৪ জন রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করেন পুলিশ।

প্রসঙ্গত, ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ৩০টি পুলিশ ফাঁড়ি ও একটি সেনা ছাউনিতে ‘রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের’ হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্যসহ অন্তত ৯৬ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের ৮৪ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ)’ নামে একটি গ্রুপ হামলার দায় স্বীকার করেছে। রাখাইনে এ হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে গঠিত কমিশনের প্রধান ও জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান। 

এর আগে গেল বছরের অক্টোবরে প্রায় একই ধরনের এক হামলায় ৯ পুলিশ নিহত হওয়ার পর এই রাজ্যে ব্যাপক সেনা অভিযান শুরু করে মিয়ানমার। সেনাবাহিনীর ওই অভিযানে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের অভিযোগ ওঠে। রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ ও তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগও ওঠে। কিন্তু মিয়ানমার সরকার বরাবরই ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সেবার মিয়ানমারে সেনা অভিযান শুরুর পর প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে অবস্থান নেয়। ওই ঘটনায় জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনে।

এরপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করতে না করতেই আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। চলতি মাসের শুরুর দিকে মংড়ু এলাকায় সাত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এরপর চলতি মাসের ১২ তারিখে নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলে রাখাইনে কয়েকশ সেনা মোতায়েন করে মিয়ানমার সরকার। এ দফায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর ফের বাংলাদেশে ঢুকতে শুরু করেছেন রোহিঙ্গারা।