English Version
আপডেট : ১ আগস্ট, ২০১৭ ১৮:১৯

ভবনের অভাবে টিনের ভাঙা ঘরে পাঠদান

ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ জীবন নিয়ে চলছে পাঠদান
ভবনের অভাবে টিনের ভাঙা ঘরে পাঠদান

 

 

প্রায় এক যুগ পার হলেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানভবন নির্মাণ হয়নি। যার ফলে তিন’শ কমলমতি শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ জীবন নিয়ে চলছে পাঠদান। এক যুগ পূর্বের পুরাতন পাঠদান ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে আর কোনো মানসম্মত পাঠদান ভবন তৈরি হয়নি। এ কারণে জীবনে অনেক ঝুঁকি নিয়ে ঝড়বৃষ্টিতে ভাঙা টিনের ঘরে চলছে শিক্ষাকার্যক্রম।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ি এলাকার জয়েরটেক ১৫১-নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টিনের একটি ঝুঁকিপূর্ণ ভাঙা ঘরে পাঠদান চলছে। ডিজিটাল যুগে এক নজরে ঘুরে দেখা যায়, সেই আগের যুগের টিনকেটে জানালা, তালাই দিয়ে কক্ষে বেড়া, আবার টিনের চালটি ফুটো, ঘরের কিছু অংশ ভাঙা, কাঁচা মেঝোঁ কক্ষের কোনোটিতে দরজা জানালা কিছু নেই।

 

এমন ভাঙা ঘরে প্রায় তিনশ’ কমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠাদান চলে। ঝড়বৃষ্টি এলে টিনের ফুটো দিয়ে পানি পড়ে তাদের বই-খাতা ভিজে যায়। ঝড়বৃষ্টি এলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আতংকে পড়ে যান। শুধু মাত্র একটি ভবনের অভাবে পরিত্যক্ত ভাঙা টিনের বেড়ার ঘর ও কাঁচামেঝোঁতে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করতে হয়। বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে ভেঙে পড়ার আশঙ্কাও করছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। 

 

পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, বিদ্যালয়ে মানসম্মত পরিবেশ না থাকায় লেখা-পড়ায় মন বসে না। টিনের ভাঙা ঘরে ক্লাশ খুব ভয় করে। ঝড়বৃষ্টি হলে ফুটো দিয়ে কক্ষে পানি পড়ে বই-খাতা ভিজে যায়। তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, বিদ্যালয়ের ভবনটি ভাঙা টিনের বেড়া হওয়ায় আমাদের পড়ালেখায় মন বসে না। বিদ্যালয়ের অভিভাবক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ছেলে মেয়ে পাঠদানে আমরা খুব চিন্তি থাকি। কারণ, বিদ্যালয়টি টিনের ঘর টিনের বেড়া তাও আবার ভাঙা।

 

১৯৯৩ সালে জয়েরটেক এলাকায় কমিনিটি বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তা বর্তমান সরকারের সময় বিদ্যালয়টি সরকারি করণ হয়। মানসম্মত ভবন না থাকায় প্রতি বছর শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরা পারভিন জানান, পিএসসি সমাপনি পরীক্ষায় প্রত্যেক শিক্ষার্থী তার ফলাফল ভাল করেছে। তিনি জানান, গত সমাপনি পরীক্ষায় ৩০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে প্রত্যেকেই এ প্লাস পেয়েছে।

 

প্রধান শিক্ষক জানান, বর্ষা মৌসুমে ঘরের টিনের চালার ছিদ্র দিয়ে সামন্য বৃষ্টির পানি পড়লেই ভিজে যায় শিক্ষার্থীদের বইখাতা ও জামা-কাপড়র। দীর্ঘ এক যুগ ধরে এ অবস্থা চলে আসলেও পাঠদান ভবন নির্মাণে দ্রুত কোনো উদ্দেগ নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মাঝের মধ্যে গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিস থেকে দ্রুতগতিতে ভবন নির্মাণের এমন প্রতিশ্রুতি আসলেও বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই দেখছি না।

 

এ নিয়ে গাজীপুর প্রাথমিক জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শফিউল হক জানান, প্রাইমারি এডুকেশন প্রোপ্রাইটিজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টাম এর মাধ্যমে প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ের তথ্য নিয়ে যেখানে প্রয়োজন সেখানে পাঠদান ভবন নির্মাণ করে দেয়া হবে। তবে কবে নাগাদ ভবনের কাজ হবে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এ বছরে তথ্য নিয়ে আগামি বছরে কাজ হবে।