English Version
আপডেট : ২৯ জুলাই, ২০১৭ ১৬:১৭

পোলট্রিতে ঘুচল বেকারত্ব

পোলট্রিতে ঘুচল বেকারত্ব

 

 

 

পোলট্রি খামার করে বেকারত্ব ঘোচানোর পাশাপাশি দিন বদল করে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের পতিরাজপুর গ্রামের আলহাজ মোঃ আবদুল হাকিম শেখ।

বেকারত্ব ঘোচাতে ২০১০ সালে নিজ বাড়িতেই লেয়ার জাতের ৫০০টি মুরগি পালন শুরু করেন তিনি। 

 

বর্তমানে তার খামারে ৮ হাজার মুরগি রয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার মুরগি ডিম দেয়। প্রতিদিন তিনি খামার থেকে ৪ হাজার ৭০০ ডিম বিক্রি করে থাকেন। তার এ সফলতা এলাকার বেকার যুবকদেরও পোলট্রি খামার করতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

 

হাকিম জানান, উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ভাগ্য বদলের আশায় বিদেশে চলে যান। দীর্ঘ ৯ বছর প্রবাসে থাকার পরও তেমন সুবিধা না করতে পারায় দেশে চলে আসেন। দেশে এসে এক প্রকারের বেকার হয়ে পড়েন।

বেকারত্বের সঙ্গে লড়াই-সংগ্রামের মধ্যে পোলট্রি খামার করে আজ তিনি সফল। নিজ বসতবাড়ির পাশেই পোলট্রি খামার করে সুদিন ফিরিয়ে এনেছেন। তার এ সফলতা এলাকার অন্য বেকার যুবকদেরও পোলট্রি খামার করতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

 

তিনি আরও জানান, বেকারত্ব ঘোচাতে নিজ বাড়িতেই ২০১০ সালে লেয়ার জাতের ৫০০টি মুরগি পালন শুরু করেন। সে থেকে আর থেমে থাকেননি হাকিম। মুরগি পালন করে তিনি গোটা বছরের পরিবারের চাহিদা মেটানোর পর ডিম ও মুরগি বিক্রি করে বাড়তি কিছু আয়ও করতে থাকেন।

এরপর তিনি তার খামারকে প্রসারিত করেন। বর্তমানে তার খামারে ৮ হাজার মুরগি রয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার মুরগি ডিম দেয়। বাকিগুলো বাচ্চা। প্রতিদিন তিনি খামার থেকে ৪ হাজার ৭০০ ডিম বিক্রি করে থাকেন।

বর্তমানে খামার ও আড়তে ২৯ শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন। এর মধ্যে তিন নারী ও দুইজন প্রতিবন্ধী রয়েছেন। ডিম বিক্রির টাকা থেকে যে মুনাফা পেয়েছেন তা দিয়ে একটি ডিমের আড়ত করেছেন।

১ হাজার ডিম দিয়ে আড়ত শুরু হলেও এখন প্রতিদিন দেড় লাখ ডিম ক্রয়-বিক্রয় করছেন।

 

হাকিম বলেন, মুরগির বিষ্ঠা দিয়ে পরিবেশবান্ধব একটি বায়োগ্যাস প্লান্ট করেছেন, তা থেকে পরিবারের রান্নার কাজ চলছে। তার সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকার অনেক বেকার ছেলে পোলট্রি খামার করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, সহজ শর্তে কোনো ব্যাংক অথবা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঋণ প্রদান করলে খামারটি আরও বেশি প্রসারিত করতে পারতেন। তার মতে, চাকরি নামের সোনার হরিণের পেছনে না ছুটে পোলট্রি খামার করে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। তিনি শিক্ষিত বেকার যুবকদের পোলট্রি খামার করার আহ্বান জানান।

 

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তফা জামান বলেন, হাকিম বেকারত্বের সঙ্গে লড়াই-সংগ্রামের মধ্যে পোলট্রি খামার করে আজ সফল ও মডেল খামারি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। 

তার খামার কিছুটা হলেও দেশের মুরগি ও ডিমের চাহিদা পূরণ করছে। সেই সঙ্গে দেশের মানুষের পুষ্টির জোগানও দিচ্ছে। হাকিমের দেখাদেখি ওই এলাকার যুবকদের মধ্যে পোলট্রি খামার গড়ার প্রতিযোগিতা চলে এসেছে।