নড়াইলে মহাসড়কের উপর হাট-বাজার

নড়াইল লক্ষিপাশায় লোহাগড়া কালনাঘাট পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী ফুটপাতসহ খালি জায়গায় স্থায়ীভাবে দোকান,ভাঙ্গা চোরা ও জ্বালানী কাঠ ফেলে দখল করে রাখায় যানবাহনগুলি রাস্তার উপরই পার্কিং করতে বাধ গাড়ি হয়। তাছাড়া বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়া বাস,টেম্পু, ইজিবাইক, রিকশা-ভ্যান ও ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল গুলি রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানো-নামানোর কাজ করে থাকে। ফলে এখানে সব সময়েই ছোট-খাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের চোখের সামনে এই বিশৃংখল অবস্থা হতে থাকলেও নজর নেই কারো। এ যেন দেখার কেঊ নেই। বিস্তারিত আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোটে নড়াইল জেলার লোহাগড়া কালনাঘাট থেকে নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়কটি উপজেলা সদরের লক্ষিপাশায় ‘লোহাগড়া-বড়দিয়া’ রাস্তাকে ক্রস করায় এই চৌরাস্তাটি সঙ্গত কারনেই অতি ব্যস্ত ও জনবহুল এলাকা। এখান থেকে বাস, টেম্পু, ইজিবাইক, ইঞ্জিন চালিত ভ্যান-রিকশা ও ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেলগুলি বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়। কিন্তু এসব যানবাহনগুলির জন্য নির্ধারিত কোন স্ট্যান্ড এমনকি পার্কিং করার মত নুন্যতম জায়গাটুকুও ফাঁকা নেই। মহাসড়কের পার্শ্বের জায়গা অবৈধ দখলকারীদের দখলে চলে গেছে। অবৈধ দখলকারীরা সড়কের পার্শ্বের জায়গায় স্থায়ীভাবে দোকানঘর বানিয়ে দখল করে রেখেছে। কেউ আবার স্থায়ীভাবে একাধিক ভাঙ্গাচোরা গাড়ী রেখে অথবা স্থায়ীভাবে জ্বালানী কাঠ রেখে পার্কিং এলাকা দখল করে রেখেছে। এদিকে এই চৌরাস্তার উপরই প্রতিদিন সকালÑবিকাল নিয়মিত বাজার বসে। রাস্তার পাকা অংশের গাঁ ঘেঁষেই বসে মাছসহ তরিতরকারি বিক্রেতারা। এসব বিক্রেতাদের ঘিরে ক্রেতারা ঝুঁকিপূর্নভাবে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করে থাকে। এসব ক্রেতা-বিক্রেতাদের কেউ নিয়ন্ত্রন না করায় ফুটপাত দখলের প্রবণতা বেপরোয়া হয়ে ঊঠেছে। অতি সম্প্রতি ‘লক্ষিপাশা বাজার’ নামক এই স্থানে গোড়া পাকা বটগাছ তলার ফাঁকা জায়গাটুকু দখল করে সেখানে সিঙ্গাড়া - পরোটার দোকান দেয়া হয়েছে। অথচ প্রতিদিন সকাল-বিকাল এই বটগাছের বাঁধানো গোড়ায় বসে বয়স্ক লোকেরা সময় কাটায় ও বিশ্রাম নেয়। এবিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ রবিউল ইসলাম আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান -আমাদের বসার অসুবিধার কথা ভেবে এই জায়গাটায় ঘর তুলতে বাধা দিয়েও ঠেকাতে পারিনি। একই ভাবে ‘প্রভাবশালী’ কয়েকজন দোকানদার ইচ্ছাকৃতভাবে রাস্তার পার্শ্ববর্তী সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল করে তাদের নিজস্ব মালামাল ফেলে রেখে যানবাহন পার্কিং এর জায়গা বন্ধ করে রেখেছে। অথচ ‘লক্ষিপাশা হাট- বাজার’ নামে ফুটপাতের এই বাজারটিকে স্থানীয় পৌরসভা থেকে ইজারা দেয়া হলেও এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে তাদের কোন তদারকি নেই। কয়েক বছর পূর্বে বাজারের ব্যবসায়ীদের নিয়ে গঠিত ‘বণিক সমিতি’ নামে একটি সংগঠন করা হলেও বর্তমানে তার কোন কার্যকারিতা নেই। ফলে এ যেন দেখার কেউ নেই । এ ব্যাপারে লোহাগড়া পৌরসভার সংম্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন ভুইয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন-‘সমস্যাটি দীর্ঘদিনেরÑতাই রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয়। তবে আমরা এর স্থায়ী সমাধানের জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেব’। মহাসড়কের পার্শ্বের খালি জায়গাটুকু দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহনগুলির দখলে থাকায় খুলনা-যশোর থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলি রাস্তার উপরই পার্কিং করতে বাধ্য হয়। বাসগুলি দাঁড়িয়ে থাকলে তার পাশ দিয়ে অপর কোন বাস-ট্রাক এমনকি যেকোন ধরনের যানবাহন ক্রস করার জায়গা থাকে না। এ্কইভাবে লক্ষিপাশা-নড়াইল রুটে যাতায়াতকারি থ্রি হুইলার অটো টেম্পুগুলির স্ট্যান্ড হিসাবে রাস্তার পার্শের পুরো জায়গাটি দখল করে রাখায় তারাও রাস্তার উপর দাঁড়িয়েই যাত্রী নামানোর কাজ করে থাকে। ফলে ব্যস্ততম এই মহাসড়কটির এই স্থানে প্রায় সময়ই যানজট লেগে থাকে। প্রায়ই এখানে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। তবে বর্তমানে ফুটপাত বা সড়ক দখল, পার্কিং ও যানজট পরিস্থিতির যে অবনতি হয়েছে তাতে যে কোন সময়ে ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। উল্লেখ্য এই চৌরাস্তাটি স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় থানা থেকে মাত্র ৫০ গজের মধ্যে অবস্থিত হলেও নজর নেই কারো।