English Version
আপডেট : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ১৫:১৯

যুবলীগের সভাপতি সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে চাদাবাজি মামলা

এম এইচ মকিম,পাবনা প্রতিনিধি
যুবলীগের সভাপতি সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে চাদাবাজি মামলা

পাবনার চাটমোহর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান মাষ্টার, উপজেলা জাসদের সহ-সভাপতি সুজা উদ্দিন বিশ্বাস, সাংবাদিক শিমুল বিশ্বাসসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে।

চাটমোহর বড়াল নদীর বোঁথর ঘাটে নির্মাণাধীন ব্রিজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এএসজেডআর (জেভি) এর ম্যানেজার সাজেদুল ইসলামের নিকট ৫ লাখ টাকা দাবি করার অভিযোগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এই মামলা দায়ের করা হয়।

মঙ্গলবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে এএসজেডআর (জেভি) পাবনার স্বত্বাধিকারী মো. জাহিদুল ইসলাম মিঠু বাদী হয়ে যুবলীগের সভাপতিসহ যুবলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান আতিককে (৩৯) প্রধান আসামি করে নামীয় ৭ জন এবং অজ্ঞাত ৪ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছে।

মামলা নং ৩, তাং-০৭/০২/২০১৭ ইং। এই মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, জাসদের উপজেলা সহ-সভাপতি সুজা উদ্দিন বিশ্বাস (৪৮), চাটমোহর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. সাজেদুর রহমান মাস্টার, মো. শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস (৫০), তার ছেলে মো. শিমুল বিশ্বাস (২৯), হারুন (৩৭) ও আসলাম (৪৩)।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা সদরের পাশে ব্রীজ পরিদর্শণে আসেন পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজাউল কবীর। এসময় তিনি কাজ পরিদর্শন করছিলেন। এমন সময় চাটমোহর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. সাজেদুর রহমান মাস্টার, যুবলীগ নেতা আতিকুর রহমান আতিক, শহিদুল ইসলাম বিশ্বাসসহ বোঁথড় গ্রামের আরো কয়েকজন ব্রীজ নির্মাণে অনিয়ম, দুর্নীতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এবং নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ব্রীজের কাজ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন।

এসময় উপজেলা প্রকৌশলী এম. শহিদুল ইসলাম বোঁথড় গ্রামবাসীকে ব্রীজ নির্মাণের বিষয়ে অফিসে এসে বলার আহবান জানান। তখন ঠিকাদারের ম্যানেজার মো. সাজেদুল ইসলাম ও তার লোকজন ঘটনাটি ভিডিও করছিল। এমন সময় যুবলীগ নেতা আতিকসহ তার সাথে থাকা যুবলীগ সভাপতি সাজেদুর রহমান মাস্টার, শহিদুল বিশ্বাস, জাসদের সহ-সভাপতি নেতা সুজা উদ্দিন বিশ্বাসসহ ৭/৮ জন সাজেদুল ইসলামের উপর চড়াও হয়। এসময় ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এতে বোঁথড় গ্রামের আফসার আলী (৫৩), ম্যানেজার সাজেদুল ও তার ভাই আহত হয়। ধাক্কাধাক্কির সময় এক পর্যায় সাংবাদিক তূষার ভট্টাচার্য্য আহত হয়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।

পাবনার রাধানগরের এএসজেডআর (জেভি) নামীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বোঁথড় ঘাটে ৩ কোটি ১০ লাখ ১ হাজার ২১২ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে নির্মিত ব্রীজটির কাজ পায় গত বছর। গত বছর ২২/০৯/১৬ ইং তারিখে ব্রীজ নির্মাণ কাজ শুরু করতে গেলে যুবলীগ নেতা মো. আতিকুর রহমান আতিক ঠিকাদার মিঠুর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদাদাবী করে এবং বিভিন্ন সময়ে মোবাইল ফোনে তাকে হুমকি দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন ঠিকাদার জাহিদুল ইসলাম মিঠু।

ঠিকাদার মিঠু জানান, মঙ্গলবার দুপুরে পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজাউল কবীর, উপজেলা প্রকৌশলী এম. শহিদুল ইসলাম আগামী শনিবার ব্রীজের সর্বশেষ ঢালাই কাজের পূর্বে পরিদর্শনে আসলে আতিক গং তাদের উপস্থিতিতে আমার ম্যানেজার সাজেদুল ইসলামের নিকট ৫ লাখ টাকা দাবী করে তাকে এবং লেবারদের মারপিট করে।

অপরদিকে সাজেদুর মাস্টার, শহিদুল বিশ্বাস জানান, ঠিকাদার বা তাদের লোকজনের কাছে কোন চাঁদাদাবী করা হয়নি। আমরা এলাকাবাসীর স্বার্থে সিডিউল অনুযায়ী কাজ করার কথা বললে ঠিকাদার ও তার লোকজন ইতোপূর্বে সশস্ত্র অবস্থায় আমাদের হুমকি দেয়। তারা দাবী করেন আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চাঁদাবাজীর মামলায় জড়ানো হয়েছে।

মামলার বিষয়ে চাটমোহর থানা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, মামলা রেকর্ড করা হয়েছে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। বোঁথড় গ্রামে ব্রিজ নির্মান এলাকায় কোন বিশৃঙ্খলা যেন না হয় সে জন্য সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৩ ফেব্রুয়ারি এই ব্রীজ নির্মাণে দূর্নীতি হচ্ছে মার্মে এক সংবাদ সম্মেলন করেন এলাকাবাসী।