English Version
আপডেট : ২৭ জুন, ২০১৬ ১৬:৫৯

দর্জির কারিগরদের কাটছে নির্ঘুম রাত-

এম এস জিলানী
দর্জির  কারিগরদের কাটছে নির্ঘুম রাত-

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রতিদিনই টেইলারিং/দর্জির দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। সেই সাথে দর্জিরা মহাব্যস্ত সময় পার করছে। কাটছে তাদের নির্ঘুম রাত।

হবিগঞ্জের দক্ষিনাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ন ব্যবসায়িক এলাকা হিসেবে চুনারুঘাট উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের পরিচিতি বিস্তৃত। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় জেলা শহরের ও চুনারুঘাট উপজেলার সাথে পাল্লাদিয়ে এই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বেশ কিছু নামি-দামি টেইলার্স প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের বাজারের তে-মাথা, মধ্যে বাজার, পশ্চিম বাজার, উত্তর বাজার, মহালদার মার্কেটসহ পরিত্যাক্ত রেলস্টেশনের শীর্ষতলা নামক এলাকায় উল্লেখযোগ্য, ফ্যাশন টেইলার্স, পমীজ টেইলার্স, নূর-জাহান টেইলার্স এন্ড ফেবিক্স, মোল্লা টেইলার্স, মোস্তফা টেইলার্স, নিউ টেইলার্স ও জননী ফ্যাশন টেইলার্সসহ প্রায় শতাধিক টেইলার্স গড়ে উঠেছে।

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের বেশ কিছুদিন পূর্বে থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের টেইলার্সগুলোতে ছেলেদের শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবী, পায়জামা আর মেয়েদের থ্রি-পিস, ব্লাউজ, পেটিকুট, লাসা সেট, কামিজ, বোরকা ইত্যাদি তৈরির অর্ডার আসতে থাকে। ঈদেরদিন যত ঘনিয়ে আসছে টেইলার্সের দোকানগুলোতে অর্ডারের চাপও বাড়ছে, টেইলার্সের মালিকরা কাপড় বেচা-কেনার অর্ডার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার টেইলার্স মালিকরা সেলাই মজুরি বৃদ্ধি করেছে।

এ ব্যাপারে টেইলার্সের মালিক আ. মালেক, আ. ছালাম, নূর-জাহান, নুরুল আমিন ও কাজল মিয়া জানান, কারিগরদের (দর্জির) মজুরি, দোকান ভাড়া, সুতার দাম বৃদ্ধিসহ বিদ্যুৎ জ্বালানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় মজুরি কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্যান্টের মূল্য ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, শার্ট ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, মেয়েদের লাসা সেট ৫০০ টাকা, কামিজ ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, ব্লাউজ ১০০ টাকা, পেটিকুট ৬০ টাকা, বোরকা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, থ্রি-পিস ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, পায়জামা ১২০ থেকে ১৫০ টাকা মজুরি নেয়া হচ্ছে বলে জানান তারা।

সোববার উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়নের হাঠ-বাজরে ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার টেইলার্সের কাটিং মাস্টাররা গলায় ফিতা ঝুলিয়ে কাঁচি হাতে কাপড় কাটছে তো কাটছেই। যেন দম ফেলারও সময় নেই। আর পেছনে দর্জিরা পোশাক সেলাইয়ে মহাব্যস্ত। ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রতিদিনই প্রায় কারিগর (দর্জি) সেহরি খাওয়ার পর থেকে কাপড় সেলাই করছে তো করছেই।

তাদের মেশিনের খট-খট শব্দে দোকান হাঠ-বাজারসহ এলাকা মুখরিত হয়ে থাকছে। এব্যাপারে কাটার মাস্টার ছালাম, মহিউদ্দিন মোস্তফা, খেলু মিয়, নুরুল আমিন, মালেক, ওসমান গণি, কাউসার আহমেদ জানান, সারা বছর খুব একটা কাজ হয় না। এই রমজান মাস ও ঈদের পূর্বে একটু বেশি কাজ হয়। অনেক কারিগরই এই রমজান মাস ও ঈদের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। আর তাই কিছু টাকা বেশি আয় করতেই একটু বেশি পরিশ্রম করছেন।

যত পরিশ্রম করবে ততো অর্থ আয় হবে এ আশায় অনেক কারিগরই অর্ডার নেয়া কাপড়গুলো নির্ধারিত সময়ে টেইলার্স মালিকের কাছে সরবরাহ করতে প্রতিদিনই নির্ঘুম রাত পার করছেন।

অপরদিকে বিদ্যুতের বেলকি বাজির কারনে ব্যবসায়ীগন রীতিমত তাদের প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারছেন না। বাজারের ব্যবসায়ী, দর্জি দোকানের একাধিক মালিক ও দর্জি কারিগররা অভিযোগ করে বলেন, মাসের পার মাস বিদ্যুৎ বিভাগ মনগড়া বিদ্যুৎ বিল নিচ্ছে। এর ফলে আমাদেরকে উপহার দেয় ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যাথা নেই বল্লে’ই চলে।