নড়াইলে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে নড়াইলে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। নড়াইল জেলার সবকটি মার্কেটে বইছে ঈদের হাওয়া। ঈদকে সামনে রেখে বাহারি ডিজাইনের পোশাক শোভা পাচ্ছে বিপণি বিতানগুলোতে। ফুটপাত থেকে শুরু করে নড়াইলের অভিজাত শপিংমলে নেমেছে ক্রেতার ঢল।
নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ বাজারস্থ পৌর সুপার মার্কেট, জমাদ্দার টাওয়ার, সিকদার মার্কেট, মুস্তারী কমপ্লেক্স, আলতাপ হোসেন সুপার মার্কেটসহ জেলার বিভিন্ন খাদি দোকানগুলোকে চলছে জমজমাট কেনাকাটা।
পোশাক বিক্রেতা শীলন, সুকদেব সাহা, দীপক ঘোষ, অসিত নন্দীসহ আরো অনেকেই বলেন, ১০ রমজান থেকেই ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। ২০ রোজা পার হলে ভিড় আরো বাড়বে বলে আশা করছি।
তারা আরো বলেন, এবারে দেশি পোশাকের পাশাপাশি বিদেশি পোশাকও মিলছে। তবে দাম একটু বেশি। গতবারের ন্যায় এবারও নড়াইলর তরুণীদের পছন্দের তালিকায় আছে পাঁখি, ফোরটার্চ, মাসাক্কালি, আশিকী, আনারকলি ও লং কামিজ। হিন্দি সিরিয়াল ও সিনেমার বিভিন্ন নায়িকাদের নামানুসারে থ্রিপিস এর চাহিদাও ব্যাপক বলে জানান বিক্রেতারা।
বিভিন্ন ডিজাইনের কুর্তিরও চাহিদা রয়েছে। এদিকে পোশাকের ভিন্নতার সাথে এবারে ঈদ বাজারে পোষাকের দামও অনেক চড়া। তরুণীদের এসব পোশাক ২ হাজার থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এবারে ঈদ বাজারে ছোটদের পোশাকেও রয়েছে ভিন্নতা। এবার মেয়ে শিশুদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে লং ফ্রক ও পার্টি ফ্রক।
এছাড়া মার্কেটগুলোতে উঠেছে লেহেঙ্গা ও লং কামিজ। গরমকে সামনে রেখে ছেলে শিশুদের এবারের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে সুতি পাঞ্জাবী, টি-শার্ট ও বাবা স্যুট। সাথে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইন প্যান্ট। তবে এবার যেসব পোশাক শিশুদের মন কেড়েছে সেগুলোর দাম আকাশছোঁয়া।
নড়াইলের একাধিক ক্রেতা বলেন, এবারে পোশাকের দাম অনেক বেশি, যা সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় করা কঠিন। বড়দের পোশাকের তুলনায় ছোটদের পোশাকের দাম কিছুটা বেশি।
এ প্রসঙ্গে বিক্রেতা আমিনুর রহমান বলেন, ক্রেতাদের চাহিদার জন্যই আমাদেরকে বিদেশি পোশাক আমদানি করতে হয়। পাশাপাশি দেশীয় পোশাকের চাহিদাও একেবারে খুব একটা কম নয়। এবারের জমজমাট ঈদ বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক আনন্দ-উল্লাস দেখা যাচ্ছে। এবার বিদেশী পোষাকের ক্ষেত্রে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ভারত ও চীনের তৈরি পোশাক।
এবারের ঈদে তরুণদের পোশাকেও রয়েছে ভিন্নতা। তবে প্রতিবারের মতন এবারেও ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবীর সমাহার দেখা গেছে মার্কেটগুলোতে। তবে পাঞ্জাবী কেনার ক্ষেত্রে মার্কেটের চাইতে নড়াইলের খাদি দোকানগুলোতে ভিড় দেখা গেছে অনেক বেশি। নড়াইল জেলার চৌরাস্তা রোডস্থ খাদি কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় হচ্ছে প্রতিদিন।
বিশেষ করে ঈদকে সামনে রেখে খাদি পাঞ্জাবির যোগান ও চাহিদা উভয়ই বাড়ছে। গত কয়েকদিন খাদি কাপড়ের দোকানগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। বিক্রেতারাও চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করছেন। সূলভ মূল্য পাঞ্জাবি কিনে খুশি মনেই বাড়ি ফিরছেন ক্রেতারা।
কয়েকজন খাদি কাপড় বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, ৬’শ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে খাদি পাঞ্জাবি বিক্রয় করছেন তারা। সিল্কের ব্যবহার করে খাদি পাঞ্জাবির আকর্ষণীয়তা বাড়ানো হচ্ছে।
খাদি ব্যবসায়িরা জানান, ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে বিক্রি বাট্টাও বেড়ে চলছে। আশা করি সামনে আরও বিক্রি করবো। ঐতিহ্য আধুনিকতা ও সূলভমূল্যের কারণে এবারের ঈদে অন্যান্য পোশাকের মত খাদি কাপড়ের আবেদন শীর্ষ পর্যায়ে থাকবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়িরা।
এছাড়া পোশাক ছাড়াও জুতা ও প্রসাধনীর দোকানে এর মধ্যেই ভিড় বাড়ছে। অনেকে আবার পোশাক কেনার পর সাথে সাথে পোশাকের সাথে ম্যাচিং জুয়েলারিও কিনে নিচ্ছেন। এদিকে নড়াইলর নিম্ন আয়ের মানুষের কেনাকাটারস্থল ফুটপাথের দোকান।
ফুটপাতে পোশাক কিনতে আসা শ্রমিক সফিক মিয়া বলেন, ‘আমরার কামাই কম, আমরা কি ওই সব বড় বড় মার্কেটে যেতে পারি! ওসব তো বড় লোকগোর জন্য। আমাদের জন্য এই ফুটপাথ আর হর্কাস মার্কেটই ভরসা।