চুনারুঘাট আহম্মদাবাদে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন মনোনীত প্রার্থীরা

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে ৬ষ্ঠ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী প্রচারণা জমে উঠেছে। আগামী ৪ঠা জুন অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে প্রচারণায় সরগরম চা-বাগান ও পাহাড়ী অঞ্চল বেষ্টিত উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন। প্রত্যেক দলের নিজ নিজ প্রার্থীদের জয়ের জন্য দলের তৃণমূলদের নিরলস শ্রম, চলছে উঠান বৈঠক, পথসভা ও গনসংযোগ। বিশেষ করে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের নৌকা মার্কা এগিয়ে রয়েছে ও অত্র ইউনিয়নের ২০ হাজার ৮শ’ ২০টি ভোটের মাঝে চা-শ্রমিকসহ মাইনরটি ৯হাজার ভোট। তবে চা-বাগান অধ্যষত এলাকার চা-শ্রমিকসহ মাইনরটি ৮হাজার ভোট আওয়ামীলীগের। তার পরে অন্যান্য দলের প্রার্থীরা একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শেষ পর্যন্ত মর্যাদার লড়াইয়ে পরিনত হয়েছে। তবে চুনারুঘাটের আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের স্বতন্ত্র একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রচারণা অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। জমজমাট প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ড। নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে প্রচারণা আর কৌশল নিয়ে প্রার্থীদের ব্যস্ততাও বেড়েছে কয়েকগুণ। পাশাপাশি ভোটারদের সঙ্গে কুশলবিনিময়, দোয়া ও আশীর্বাদ আর ভোট চাওয়ার মধ্যদিয়ে প্রচারণার শেষ মুহূর্তগুলো সঠিকভাবে কাজে লাগাতে ভুল করছেন না কেউই। সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের প্রচারÑপ্রচারণায় মধুফলের বাতাসে বইছে নির্বাচনী গন্ধ। আর সেই গন্ধে চায়ের কাপে ঝড় তুলে মাতোয়ারা ভোটাররা। বাজারে-বাজারে, রাস্তার মোড়ে-মোড়ে ও চায়ের দোকানগুলোতে জমে উঠেছে প্রার্থীদের নিয়ে চেঁচামেচি আড্ডা। অন্যদিকে প্রার্থীরা ছুটছেন হাটবাজার হয়ে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে। প্রার্থীরা যে যার মতো কৌশল অবলম্বন করে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি দিয়ে গনসংযোগ, উঠান বৈঠক আর পথসভায় ভোটারদের আকৃষ্ট করেছেন। গতকাল শুক্রবার সহ ২-৩দিন যাবত চুনারুঘাটের আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকা মার্কার মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী উন্নয়নের রুপকার বর্তমান চেয়ারম্যান-উপজেলা সেচ্ছা-সেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামীলীগের অন্যতম সদস্য আলহাজ্ব আবেদ হাসনাত চৌধুরী সনজু ব্যাপক গনসংযোগ করছেন, তার ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রাম, বনগাঁও আশ্রায়ন, গুচ্ছ গ্রাম, কালামন্ডল, গোছাপাড়া,গনশ্যামপুর-সুন্দরপুর, আমু-নালুয়া ও ইউনিয়নের বেশ কয়েক গ্রামে । গনসংযোগ কালে তার সঙ্গে ছিলেন দলীয় নেতাকর্মী এবং গত ৫ বছরের উন্নয়ন দেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেত্রীবৃন্দও উনার সাথে একত্বতা পোষন করেছেন ও নৌকা মার্কায় ভোটও দিবেন। তিনি নির্বাচিত হলে প্রত্যেক প্রাথমিক স্কুল, হাইস্কুল ও কলেজে ডিজিটাল ক্লাস রুমের ব্যবস্থাসহ অসম্পূর্ণ অবহেলিত গ্রামীণ জনপদ অঞ্চলে উন্নয়ন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখবেন। রাস্তাঘাটের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষকের কৃষি কাজে উন্নয়ন ও সা¯থ্যক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা রাখবেন। তিনি জনগনের সেবার মানসে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছিলেন। অতীতে তিনি গ্রামীণ মানুষের পাশে ছিলেন সর্বস্থরের মানুষের সার্বিক সহযোগীতা করে আসছেন বলে তিনি জানান। জনগন ধারনা করতেছে যে, বিশাল ব্যবদানে নৌকা মার্কার বিজয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এলাকার ভোটার নুর হোসেন খাঁন চাঁন মিয়া ও আবুল খায়ের বাবুল জানান, এলাকায় অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি নির্বাচিত হবেন। বি.এন.পি সমর্থিত ধানের শীষ মার্কার মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম মোস্তফা কুটি গনসংযোগ করছেন, তার ইউনিয়নের কিরতাই, বাগাডাইয়া ও হাড়াজুরা গ্রামে। তার সঙ্গে ছিলেন ইউনিয়ন বি.এন.পির সভাপতি আজগর আলী, সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম,সেক্রেটারী ফজলুর রহমান খালেদ ও ফরিদ আহমেদ। তিনি নির্বাচিত হলে এ ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে রুপান্তরিত করবেন বলে তিনি জানান। এলকার ভোটার ফরিদ আহমেদ জানান, মহিলা ভোটার উপস্থিতি হার বেশি হলে ধানের শীষ মার্কার বিজয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জাতীয় পার্টির সমর্থিত লাঙ্গল মার্কার মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শ্রী যুবরাজ ঝরা গনসংযোগ করছেন, তার ইউনিয়নের আমু-নালুয়ায় গ্রামে। তার সঙ্গে ছিলেন চা-শ্রমিকবৃন্দ। তিনি নির্বাচিত হলে অত্র ইউনিয়নের ঈদ মাঠকে চুনারুঘাটের মধ্যে দি¦তীয় ঈদ গাঁ হিসেবে রুপান্তরিত করবেন বলে তিনি জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভোটার জানান, যারা পল্লী বন্ধু এরশাদকে ভালবাসে তাদের মাধ্যমে লাঙ্গলেন বিজয় আনার সম্ভাবনা রয়েছে । অপরদিকে ইউনিয়নের একই ওয়ার্ডের দুই দলের ২ বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী। বিদ্রোহীরা হলেন, ১জন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী ও আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ কে গনসংযোগ করতে দেখা গিয়াছে। তিনি নির্বাচিত হলে এলাকায় কি উন্নয়ন করবেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছুই বলেন নি। আরেকজন বি.এন.পির বিদ্রোহী ও চশমা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী ছালেহ উদ্দিন বাবরু গনসংযোগ করেছেন, তার ইউনিয়নের গেরারুক, গাদীশাইল, ও রানীকোর্ট গ্রামে। তার সঙ্গে ছিলেন আ: শহীদ , স্বপন আহমেদ ও ছিদ্দিক আলী। তিনি নির্বাচিত হলে ইউনিয়নের জনগনের পাশে থাকবেন,স্কুল-কলেজ মসজিদ ও মাদ্রাসা উন্নয়ন করবেন বলে তিনি জানান। এলাকার ভোটার মুশাররফ হোসেন মুসা জানান, জনগনের উৎসাহ থাকলে এখনও আশাবাদী চশমার বিজয় আনার সম্ভাবনা রয়েছে। এবং অন্যদিকে দুই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী। ১জন হলেন ঘোড়া মার্কার (স্বতন্ত্র) থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী জাকির হোসেন (পলাশ) গনসংযোগ করেছেন, তার ইউনিয়নের আমু-নালুয়া ও চাওতার লাইন গ্রামে। তার সঙ্গে ছিলেন, ইয়াছিন তালুকদার, প্রদীপ সিং মাসুক ও লস্কর। তিনি নির্বাচিত হলে অত্র ইউনিয়নে একটি ডিগ্রি কলেজ করে দিবেন বলে তিনি জানান। এলাকার ভোটার শামীম আহমদ জানান, অবাদ , সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ঊর্ধ্বতম কর্তৃ পক্ষের কাছে দাবি জানান। অন্যজন দুটি পাতা মার্কার স্বতন্ত্র থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী গোপী তাতী কোন গনসংযোগ করতে দেখা যায়নি। অন্য ইউনিয়নগুলোতেও চেয়ারম্যান, মেম্বার প্রার্থীরা নির্ঘুম প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সাধারণ ভোটাররা প্রত্যাশা করছেন, গেল ধাপগুলোতে অন্যান্য এলাকার মত যে ধরনের নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তা থেকে যেন চুনারুঘাটের আহম্মদাবাদ ইউনিয়ন মুক্ত থাকে। নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করবেন এমন প্রত্যাশা করছেন সাধারণ ভোটার ও কিছু কিছু প্রার্থীরা।