ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি হলেন নৌকার কাণ্ডারি

নড়াইলের ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে ৬ষ্ঠ ধাপে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য পদে মোট ৩২৭জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত একাধিক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিও।
এদিকে গত বুধবার মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে ৩৩, সাধারন সদস্য পদে ২২৪ এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে ৭০ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন।
লক্ষীপাশা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৬জন, সাধারন সদস্য পদে ২১ জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের কাজী বনি আমিন, কাজী মোরাদ হোসেন (বিএনপি), বিএনপির বিদ্রোহী কাজী রিজাউল করিম পারভেজ, কাজী বশিরুল হক বশির(আ’লীগ বিদ্রোহী), ওয়ার্কার্স পার্টির মো. জহির আহম্মেদ ফকির ও এসএম নূর মোহাম্মদ (স্বতন্ত্র)।
লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী বশিরুল হক অভিযোগ করে বলেন, দ্রুত বিচার আইনসহ একাধিক মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী বনি আমিন নিজে উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী ম্যানুয়্যালের ২৬ ধারার ২ এর (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য কাজী বনি আমিন পুলিশের চোখে একজন ফেরারী ও পলাতক আসামি। তিনি সরাসরি দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদিকে, কাজী বনি আমিনের প্রার্থীতা বাতিলের দাবিতে উপজেলা রিটার্নিং অফিসার বরাবার লিখিতভাবে আবেদন করেছেন বয়রা গ্রামের কাজী আশরাফের স্ত্রী মোছাঃ মিতা বেগম।
এ বিষয়ে লক্ষীপাশা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্ণিং অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি গ্রেফতার করা পুলিশের কাজ। আমি কাগজপত্র যাচাই করে আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করবো।
সংশ্লিষ্ট রির্টানিং অফিসারের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, নলদী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪জন, সাধারন সদস্য পদে ৩১ জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১০জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যানপদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আবুল কালাম আজাদ (পাখি), বিদ্রোহী তারিকুল ইসলাম উজ্জ্বল, বিএনপির আছাদুজ্জামান ও জাতীয় পার্টির রবিউল ইসলাম শরীফ।
লাহুড়িয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩জন, সাধারন সদস্য পদে ৪৫জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১০জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের এসএম কামরুল, বিদ্রোহী মো. দাউদ ও বিএনপির জিএম মাহমুদ। শালনগর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৭জন, সাধারন সদস্য পদে ৪০জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের খান তসরুল ইসলাম, বিএনপির কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম, জাতীয় পার্টির আলমগীর হোসেন, খন্দকার রেজওয়ান আলী (আ’লীগ বিদ্রোহী), এমএম আমিনুর রহমান (আ’লীগ বিদ্রোহী) মুন্সী আব্দুস সালেক (স্বতন্ত্র) ও এম সাজ্জাদ হোসেন (স্বতন্ত্র)। নোয়াগ্রাম ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫জন, সাধারন সদস্য পদে ২৮জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১১জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত এ.কে.এম ফয়জুল হক রোম, বিএনপি সমর্থিত মো. আহাদুজ্জামান বাটু, মোঃ জাহিদুল ইসলাম (আ’লীগ বিদ্রোহী), খন্দকার সাহেব আলী (বিএনপি বিদ্রোহী) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রাইসুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। লোহাগড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩জন, সাধারন সদস্য পদে ২৫ জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৯ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগের নজরুল সিকদার, বিএনপির সরদার জাহিদুর রহমান রিকাত ও বদর খন্দকার (আ’লীগ বিদ্রোহী)। কোটাকোল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫জন, সাধারন সদস্য পদে ৩৪জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৪ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিএম হেমায়েত হোসেন, বিএনপির শেখ জামিল আহম্মেদ, জাতীয় পার্টির মোল্যা বদিয়ার রহমান, খান জাহাঙ্গীর আলম (আ’লীগ বিদ্রোহী) ও মোছাঃ শাহিনা সুলতানা (স্বতন্ত্র প্রার্থী) মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
আগামী ৪ জুন উপজেলার নলদী, লাহুড়িয়া, শালনগর, নোয়াগ্রাম, লোহাগড়া, কোটাকোল ও লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।