English Version
আপডেট : ১৫ মার্চ, ২০১৬ ১৭:৪৬

শরীয়তপুরের কৃষকরা হতাশ

রাজিব হোসেন রাজন
শরীয়তপুরের কৃষকরা হতাশ

এবারের গমের ফলন দেখে শরীয়তপুরের কৃষকদের চোখে-মুখে হতাশা। তেমন কোন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া না থাকলেও এবারে গমের ফলন ভাল হয়নি। অনাকাঙ্ক্ষিত পোকার আক্রমণে গমের বীজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ফলন কমেছে বলে জানান কৃষকরা।

শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে মতে, এ বছর ৩৩০০ হেক্টর জমিতে গমের চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২১০ হেক্টর জমিতে গমের চাষ করা হয়। বাকী উপজেলার মধ্যে জাজিরা ২৯৫ হেক্টর, নড়িয়া ১৪৮০ হেক্টর, ভেদরগঞ্জ ৫৭০ হেক্টর, ডামুড্যা ৫০০ হেক্টর এবং গোসাইরহাট ২৪৫ হেক্টর জমিতে গমের চাষ করা হয়েছে।

সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের সোনামুখি গ্রামের গমের চাষী মো. খলিল সরদার বলেন, এ বছর আমি এক একর জমিতে গমের চাষ করেছি। গত বছর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও গমের ফলন ভালো হয়েছিল। কিন্তু এ বছর গত বছরের তুলনায় গমের ফলন কম হয়েছে। এ বছর আমরা গম নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছি। যদি বাজার মূল্য সঠিকভাবে না পাই তাহলে আমাদের পথে বসে যেতে হবে।

ডামুড্যা উপজেলার ধানকাটি ইউনিয়নের দশমনতারা গ্রামের গমের চাষী গিয়াসউদ্দিন আকন বলেন, এ বছর গমের ফলন মোটামুটি হয়েছে। এ বছর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া না থাকলেও পোকার আক্রমণে গমের ফলন নষ্ট হয়ে গেছে।

একই ইউনিয়নের গম চাষী আব্দুর রব ঘরামী বলেন, এক একর জমিতে গমের চাষ করতে আমাদের অনেক খরচ হয় কিন্তু সেই অনুপাতে আমরা সরকারের কাছ থেকে কোন সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না।

আরেক গমের চাষী হান্নান ঢালী বলেন বলেন, গত বছর গমের চাষ ভালো হয়েছিল। আমরা কৃষকরা ভালো দাম পেয়েছিলাম। কিন্তু এ বছর গমের ফলন ভালো হয়নি। হঠাৎ প্রাকৃতিক দূর্যোগের ও পোকায় গমের ফলন নষ্ট করে দিয়েছে। কৃষি অফিসের কোন লোকজনের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পাইনি।।

নড়িয়া উপজেলার চরাত্রা গ্রামের গমের চাষী মোহাম্মদ সরদার বলেন, আমরা গরীব কৃষক। গমের চাষ করতে আমাদের অনেক খরচ হয়। কিন্তু বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংক থেকে কখনই কোন ঋণ পাইনি। তাই কষ্ট করেই গমের চাষ করছি। যাতে একটু ভালোভাবে থাকতে পারি। কিন্তু গত বছরের তুলনায় এ বছর গমের ফলন কম হয়েছে। এবার যদি বাজার মূল্য ঠিকমতো না পাই তাহলে সুদে আনা টাকাও পরিশোধ করতে পারবো না।

গোসাইরহাটের গম চাষী মো. নাসির হোসেন বলেন, আমাদের দেশের উৎপাদিত গম বহু দেশে রফতানিহয়। কিন্তু আমাদের দেশের কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ভারত থেকে অল্প মূল্যে, নিম্নমানের গম আমদানি করে গমের বাজার নষ্ট করে দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেন বলেন, এ বছর গমের আবাদ ভাল হয়েছে। গত বছর দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়েছিল। এ বছর পরিবেশ অনুকূলে থাকায় গমের চাষ ভালো হয়েছে। কিন্তু গত বছরের তুলনায় ফলন ভালো হয়নি। তবে আমাদের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।