English Version
আপডেট : ২ মার্চ, ২০১৬ ১৬:৩৩

নড়াইলে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ পৌরবাসী; দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ পৌরবাসী; দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

 

নড়াইল মডেল পৌরসভার বিভিন্ন প্রান্তে রাত ঘনিয়ে আসার আগেই শিক্ষার্থীদের শেষ করতে হয় মশারী টানানোর কাজ। চেয়ার-টেবিল নয় পড়ালেখার কাজটাও তাই সারতে হচ্ছে মশারীর নিচেই বসে। পড়তে বসলে, ঘুমাতে গেলে, এমনকি ক্লাসে গিয়েও মশার হাত থেকে রেহায় পাচ্ছেন না তারা।

এসএসসি পরীক্ষা চলছে, কয়েকদিন পর থেকে এইচএসসি শুরু হবে। দুয়েক সপ্তাহের মধ্যে শুরু হবে স্কুল মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা। মশার অত্যাচারে পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। সন্ধ্যার পর কোথাও একটু বসার উপায় নেই। কয়েল জ্বালিয়ে বা অ্যারোসল স্প্রে করেও রেহাই পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা।

নড়াইল কৃষি ও কারিগরি কলেজের ছাত্র মোঃ খাইরুল ইসলাম জানান, মশার উৎপাত এক কথায় সীমা ছাড়িয়েছে। মশার কারণে এক মিনিটের জন্যও পড়ার টেবিলে বসতে পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে জানা সত্বেও মশার কয়েল জ্বালাতে হচ্ছে। মশার কামড়ে আমাদের পড়ালেখায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।’

অভিভাবোকরা জানান, ঘরে-বাইরে সর্বত্র মশা। দিন নেই, রাত নেই সব সময় মশার উৎপাত। ছেলেমেয়েরা মশার কারণে সঠিকভাবে লেখাপড়া করতে পারছে না। রাত হলেই বেড়েযায় মশার ভয়। কানের কাছে ভনভন করবে, দলবদ্ধভাবে কামড় বসাবে থেমে থেমে। মশার তাড়নায় বেশিক্ষণ টেবিলে বসে পড়া দায়। কয়েল জ্বালালে কমে তবে এর ধোঁয়ায় হয় স্বাস্থ্যের ক্ষতি। আর বিছানায় তো মশারি ছাড়া ঘুমানো অসম্ভব।

শহরের রূপগঞ্জে রয়েছে প্রণব সারের ব্যাচ, সেখানে গিয়ে দেখা গেল বিভিন্ন শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন। আর রুমের ভিতর জ্বলছে মশার কয়েল। শিক্ষার্থীরা বলেন ইদানিং মশা খুব বিরক্ত করছে। রাতে তো মশা বিরক্ত করছেই আর দিনের বেলাও মশার কয়েল না জ্বালিয়ে লেখাপড়া করা যাচ্ছেনা। সাধারণ নাগরিকদের অভিযোগ, মশক নিধনে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কার্যতঃ তেমন পদক্ষেপ না নেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগর জীবন। মানুষের অশান্তি বেড়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। কার্যকরী পদক্ষেপের অভাবে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ নগর জীবন। কয়েল বা স্প্রে ব্যবহার করেও কোন সুরাহা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।

নড়াইল পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, শহরে মশার প্রকোপ কমিয়ে আনতে মশক নিধনে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৭ থেকে ৮টি মেশিন দিয়ে লার্ভিসাইড স্প্রে করা হচ্ছে। ড্রেনের পেড়িমাটি উত্তোলনের কাজও চলছে। এছাড়া উড়ান্ত মশা নিধনে ৭ লিটার করে অ্যাডাল্ট্রিসাইড করপোরেশনে মজুদ রয়েছে। যা’ কিছু সংখ্যক মেশিন ও সাধারণ স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন দিনে বিকালে বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্প্রে করা হচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষের অভিযোগ, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মশক নিধন ওষুধ ব্যবহারের নানা হিসাব দিলেও তা’ মাঠ পর্যায়ে দেখা যায় না। এছাড়া যে ওষুধ ব্যবহার করা হয় তাতেও তেমন কোনো সুফল মেলে না।

ভুক্তভুগি সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করলেও বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছে না কর্পোরেসন কতৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে মশা নিধনে পৌরসভার কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। সন্ধ্যার পর ঝাঁকে ঝাঁকে মশা আসে। কয়েল জ্বালিয়েও তেমন কোনো কাজ হয় না। কতৃপক্ষ মশক নিধনের চর্তুমুখী অভিযান শুরু না করে তারা শুধু দোষ চাপাচ্ছেন শহরবাসীর ঘাড়ে। নড়াইল সদর হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক জানান, মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু জ্বরসহ বিভিন্ন রোগ হতে পারে। এজন্য সকলকে সচেতন হতে হবে। মশক নিধনে মুখ্য ভূমিকা রাখতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থার। ছবি সংযুক্ত