English Version
আপডেট : ১ মার্চ, ২০১৬ ১৫:৪৬

খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব নির্বাচনে নিয়ে সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ

আল-মামুন,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব নির্বাচনে নিয়ে সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ

 

খাগড়াছড়ি জেলায় কর্মরত গনমাধ্যম কর্মীদের প্রিয় সংগঠন খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। এ ক্ষোভ যে কোন সময় বিস্ফোরণ হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন খোদ প্রেস ক্লাবের অনেক সিনিয়র সাংবাদিক।

সিনিয়র সাংবাদিকদের প্রাপ্য সম্মাণ না দেওয়া ও যোগ্য সাংবাদিকদের প্রেস ক্লাবে সদস্য না করাসহ নীল নকশা নির্বাচনের মাধ্যমে  কতিপয় সাংবাদিকের প্রেস ক্লাবে এককচ্ছত্র  ক্ষমতা কুক্ষিগত করার ষড়যন্ত্রের কারণে এ ক্ষোভের সৃষ্টি বলে জানিয়েছে প্রেস ক্লাবের অনেক সিনিয়র সাংবাদিক।

অনেক সিনিয়র সাংবাদিক ইতিমধ্যে প্রেস ক্লাবে যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাব এখন অনেকটা প্রাণহীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আগামীকাল বুধবার(২ রা মার্চ) খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রহসন ও নীল নকশার নির্বাচনের অভিযোগ এনে ইতিমধ্যে খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সিনিয়র তিন সাংবাদিক মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের নির্বাচনের তারিখ ঘোষনার পর থেকেই কতিপয় সাংবাদিককের নেতৃত্বে তৎপরতা শুরু হয়। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার লক্ষে নিজের প্রছন্দের লোকদের ক্লাবের নির্বাহী পদে বসানো ষড়যন্ত্রে লিপত হন। এ ষড়যন্ত্র আঁচ করতে পেরে অনেক সিনিয়র সাংবাদিক মনোনয়নপত্র ক্রয় থেকে বিরত থাকেন। আবার মনোনয়নপত্র দাখিল করলে ক্ষোভে প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক নুরুল আজম,এইচ এম প্রফুল্ল ও জসীম উদ্দীন মজুমদার তা প্রত্যাহার করে নেন।

অভিযোগ রয়েছে, এক সময় খাগড়াছড়িতে কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে ঐক্য ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকলেও কতিপয় ক্ষমতা লোভী সাংবাদিকের কারণে সে সম্পর্ক ধীরে ধীরে নষ্ট হতে থাকে। যার কারণে সাংবাদিকদের আদালতের কাঠগড়ায় পর্যন্ত দাঁড়াতে হয়।

খাগড়াছড়ি জেলা সদরের কর্মরত বহু সাংবাদিক নাম প্রকাশ না শর্তে অভিযোগ করেন,দীর্ঘ দিন ধরে সাংবাদিকতা পেশায় নেই এবং খাগড়াছড়ি থাকেন না অর্ধ শিক্ষিত এমন অনেক ব্যক্তি প্রেস ক্লাবের সদস্য। অথচ যারা সাংবাদিকতা পেশায় জড়িত তারা সদস্য হওয়াতো দুরে থাক প্রেস ক্লাবের সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করারও সযোগ পান না।

অনেক সিনিয়র সাংবাদিকের অবেদন নানা অজুহাতে বাতিল করে দেওয়া হয়। আবার যাদের আবেদন গ্রহণ করা হলেও বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে। তাদের অভিযোগ প্রেস ক্লাবের বহু সাংবাদিক আছেন,যারা বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িত। তাদের সরকারী-বেসরকারী কোন প্রোগামে দেখা যান না। আবার অনেককে বছরে  একবারও দেখা যায় না।

খাগড়াছড়ি জেলায় কর্মরত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, প্রিন্ট  ইলেক্টনিকস ও অনলাইন মিড়িয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের দাবি,জামায়াত শিবির ও সিন্ডিকেট মুক্ত প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠা হোক খাগড়াছড়ির কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে।

খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সিনিয়র সাংবাদিক তরুন ভট্টাচার্য্য বলেন, প্রাপ্য সম্মাণ ও মর্যাদা দেওয়া হয় না। বরং নানাভাবে নিগৃত করা হচ্ছে। যার কারণে লজ্জা,ক্ষোভ ও অপমানে প্রেস ক্লাবে যাওয়ার ইচ্ছাও হারিয়ে ফেলেছি।

খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক নুরুল আজম খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন,এটি  প্রহসনের নীল নকশাক নির্বাচন ছাড়া আর কিছুই নয়। এ নির্বাচন প্রেসক্লাবের নেতৃত্বকে কলংকিত করেছে। এতে করে প্রেসক্লাবের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে বিভেদ বাড়ছে।

তিনি অভিযোগ করেন, জনৈক ব্যক্তি ২০০২ সাল থেকে রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাব দখলে রেখে টেন্ডারবাজিসহ অপসাংবাদিকতা চালিয়ে যাচ্ছে।

খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের অপর সদস্য প্রদীপ চৌধুরী বলেন,ফলাফল আগেই নির্ধারণ করা আছে। যা হচ্ছে তা নির্বাচনের নামে প্রহসন মাত্র। খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক এইচ এম প্রফুল্ল বলেন, এ নির্বাচন পেশাজীবি সাংবাদিকদের  মধ্যে অনৈক্য আরো বাড়বে।

খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সদস্য ও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারকারী জসিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, এমন পাতানো নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।