English Version
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি, ২০১৬ ২০:৩৮

এহন শীতের জ্বালায় মরুম না

নিজস্ব প্রতিবেদক
এহন শীতের জ্বালায় মরুম না

‘রাইত দশটায় হঠাৎ ইউএনও আপা আমাগো ঘরে ঢুকছে। উনি আমাগো দুখের কতা হুইন্না খুবই কষ্ট পাইলেন। পরে আমারে একখান কম্বল দিয়া চইলা গেলেন। এহন শীতের জ্বালায় আর মরুম না।’ কথাগুলো চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদরের রূপসী পল্লী এলাকার বৃদ্ধা অফিরননেছার (৬৫)।

প্রচণ্ড শীতের রাতে এলাকার গরিব মানুষগুলোর কষ্ট নিজের চোখে দেখতে বের হন মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইসলাম। সঙ্গে নিয়ে যান সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ পাওয়া কিছু কম্বল। নিজের টাকায় কিনেও নিয়ে যান কিছু। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত উপজেলার কয়েকটি গ্রামে ঘুরে তিনি প্রকৃত গরিব মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা শোনেন। আর যাদের বেশি প্রয়োজন এমন গরিব দুস্থদের কম্বল দেন।

উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় ইউএনও ফারহানা ইসলাম তাঁর গাড়িচালক নোয়াব আলী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হুমায়ুন কবিরকে সঙ্গে নিয়ে রওনা হন। কখনো গাড়িতে, কখনো হেঁটে তিনি উপজেলার দশপাড়া, ভাঙ্গারপাড়, বোয়ালিয়া, উপাদী, রূপসী পল্লী ও তাফালিং বাজার এলাকার দরিদ্র মানুষদের ঘরে গিয়ে কথা বলেন।

বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে তৈরি ছাপড়া দশপাড়া গ্রামের দিনমজুর মকবুল হোসেনের। বলেন, ‘প্রচণ্ড শীতে খুব কষ্ট পাইতেছিলাম। এখন একখান কম্বল পাইয়া শীতের অত্যাচার থাইকা বাঁচতে পারুম। আল্লায় ওনার মঙ্গল করুক।’

উপাদী গ্রামের কৃষক গিয়াসউদ্দিন বলেন, ‘বউ পোলাপানেরে নিয়া শীতের জ্বালায় বাঁচতেছিলাম না। এখন এই কম্বলখানা পাইয়া সবাই রাইতে গুমাইতে পারুম। আফারে ধন্যবাদ।’

ইউএনও ফারহানা বলেন, গ্রামের গরিব মানুষের শীত-কষ্ট নিজের চোখে দেখার জন্যই বাড়ি বাড়ি গিয়ে কম্বল দিয়েছেন। উপজেলায় অনুষ্ঠান করে কম্বল দিতে গেলে অনেক সময় প্রকৃত গরিবেরা কম্বল পায় না। রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশ থাকে। তাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে দিলে সত্যিকার যাদের প্রয়োজন, তারা পাবে-এ কারণেই তিনি গিয়েছেন।

সূত্র- প্রথম অালো