English Version
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৬:৪২

বৃহস্পতিবার রংপুরে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
বৃহস্পতিবার রংপুরে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল

রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব এস এম ইয়াসিরকে কুপিয়ে আহত করার প্রতিবাদ ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আগামী বৃহস্পতিবার জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে জাতীয় পার্টির এক সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এ ছাড়া আজ ইয়াসিরকে দেখতে হাসপাতালে যান দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। তিনি হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

গত শুক্রবার জুমার নামাজ পড়ে মুন্সিপাড়া কবরস্থানে ইয়াসির তার বাবার কবর জিয়ারত করতে যান। জিয়ারত শেষে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার পথে কবরস্থানের সামনে তার মাথায় কুপিয়ে জখম করা হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা জাতীয় পার্টির সেন্ট্রাল রোডের কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে দুপুর ১২টায় শহরের কাচারি বাজারে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের সড়কে এসে শেষ হয় ও সেখানে সমাবেশ করে।

সমাবেশে মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন, জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ নূর আহমেদ টুলু, আমিনুল ইসলাম, সামসুল আলম, ইব্রাহিম পন্ডিত প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, জাপা নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই হামলা চালানো হয়। এই হামলার প্রতিবাদ ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আমরা রাজপথে নেমেছি। আমরা রংপুরে সন্ত্রাস চাই না, শান্ত দেখতে চাই।

বক্তারা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, দিনের বেলা প্রকাশ্যে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়। এই হামলার ঘটনায় পুলিশ এখনো নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমার সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার দেখতে চাই। আর তা না হলে রংপুরে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সমাবেশে রংপুরে সাম্প্রতিক কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ও হত্যাচেষ্টার ঘটনার কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, এখানে জাপানি নাগরিক কুনিও, মাজারের খাদেম ও সাংবাদিক হত্যা হয়েছে। সাংবাদিক অপহরণ হয়েছে। এবার আমাদের নেতাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে।

বক্তারা রংপুরের অতি সম্প্রতি প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। সমাবেশ শেষে আগামী বৃহস্পতিবার জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেওয়া হয়।

বর্তমানে এস এম ইয়াসির রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। কর্তব্যরত চিকিৎসক বিডি বিধু বলেন, মাথায় গুরুতর জখম হয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

এ হামলার উদ্দেশ্য ছিল হত্যা: এরশাদ

রংপুরে দুর্বৃত্তদের হাতে আহত জাতীয় পার্টির নেতাকে দেখতে ঢাকা থেকে দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ গতকাল রোববার রংপুরে যান। আজ দুপুরে বিমানে করে সৈয়দপুরে যান এরশাদ। এরপর সেখান থেকে তিনি সরাসরি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎ​সাধীন ইয়াসিরকে দেখতে যান। সেখানে থাকা সাংবাদিকদের এরশাদ বলেন, সন্ত্রাসীরা তাকে দিনের বেলা যেভাবে হামলা চালিয়েছে এটি মেনে নেওয়া যায় না। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই এ হামলা চালানো হয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে গেছেন। জাতীয় পার্টির ডাকা হরতালকে সমর্থন জানিয়ে এরশাদ আরও বলেন, রংপুর হলো জাতীয় পার্টির দুর্গ। এখানে আমাদের ওপর আঘাত এসেছে। তাই এখানকার নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। আমি অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার চাই।