English Version
আপডেট : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১১:৩৫

জ্বালানি তেলের উপর ৭.৫ শতাংশ কমিশন চান তেল ব্যবসায়ীরা

অনলাইন ডেস্ক
জ্বালানি তেলের উপর ৭.৫ শতাংশ কমিশন চান তেল ব্যবসায়ীরা

সরকারের কাছে জ্বালানি তেলের উপর ৭.৫ শতাংশ কমিশন দাবি করেছে বাংলাদেশ প্রেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটরস, এজেন্টস্ এন্ড পেট্রোলপাম্প ওনার্স এসোসিয়েশন।

আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ দাবি না মানা হলে পরদিন থেকে সারাদেশের সকল ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলনে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে পেট্রোলপাম্প ওনার্স এসোসিয়েশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ ঘোষণা দেয় সংগঠনটির নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রতন বলেন, গত ৪ নভেম্বর সরকার ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধি করলেও বিবেচনাহীনভাবে জ্বালানী তেল বিক্রয়ের উপর লিটার প্রতি কমিশন মাত্র ০.২০ পয়সা বৃদ্ধি করে। অথচ আগের ২.৯২ শতাংশ কমিশন হারে বৃদ্ধি করলেও লিটার প্রতি ০.৫০ পয়সা আসে।

সরকারের জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও বিপিসি কর্তৃপক্ষ মিলে এমন একক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, "আমরা বিগত কয়েক বছর ধরেই বিদ্যুতের মুল্য বৃদ্ধি, সরকারি বিভিন্ন সংস্থার লাইসেন্স ফি বৃদ্ধি, সর্বোপরি উর্দ্ধমূল্যের বাজারে কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির কারণে জ্বালানি তেল বিক্রয়ের উপর কমিশন ১.৬০ টাকা বৃদ্ধি করার জন্য দাবি করে আসছি। যা হবে ৭.৫ শতাংশ হারে কমিশন।"

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার যে বিপিসি ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের প্রতি চরম উদাসীনতা দেখিয়েছেন। 

"সরকার জ্বালানি তেল বিক্রয়ে লোকসান ঠেকাতে ডিজেলের লিটার প্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধি করেছে। অথচ যাদের মাধ্যমে এই পুরো তেল বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে তাদের ব্যবসার প্রতি বিন্দুমাত্র সুবিচার করা হয়নি। তাই আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করি," বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, "বর্তমান কোভিডের কারণে আমরাও ব্যবসায়িক দিক দিয়ে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। ইদনিং ফিলিং স্টেশনের উপর আরাপিত বিভিন্ন সংস্থার অমিমাংসীত লাইসেন্স গ্রহণের ব্যাপারে হয়রানি শুরু হয়েছে। সঙ্গে বিপুল অংকের টাকা (অফিস খরচ হিসেবে) তারা দাবি করছে, যা আমাদের কমিশনের সীমিত আয় দিয়ে প্রদান করা সম্ভব না।"

বাংলাদেশের অধিকাংশ পেট্রোল পাম্পই প্রতিদিন গড়ে ২০০০ লিটারের নিচে ডিজেল বিক্রি করে থাকে। ফলে, ২০ পয়সা দিয়ে গড়ে তাদের মাসিক ১২ হাজার টাকা আয় বৃদ্ধি পায়। যা দিয়ে অতিরিক্ত মূলধন বিনিয়োগ এবং সকল বৃদ্ধি পাওয়া খরচ চালানো দূরুহ ব্যাপার হয়ে পড়েছে।

এর প্রেক্ষিতে, গত ৩১ জানুয়ারি সংগঠনটির সকল বিভাগীয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় যে, আগামী ১৬ ফ্রেরুয়ারির মধ্যে দাবি মানা না হলে পরদিন থেকেই তেল উত্তোলন, বিপণন ও পরিবহন বন্ধ করা হবে। এছাড়া, কঠোর কর্মবিরতি পালন করা হবে বলেও জানান সংগঠনটির সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল।

বক্তরা বলেন, চলতি বছর ৬ জানুয়ারি বিপিসির ডাকা মিটিংয়ে তাদেরকে একটি সম্মানজনক কমিশনের আশ্বাস প্রদান করা হয়। কিন্তু বাস্তবে ফলাফল কিছুই আসেনি। এ অবস্থায় আন্দোলন ছাড়া দাবি আদায় সম্ভব নয়।

তারা আরও বলেন, পেট্রোলিয়াম ডিলাররা সরকারের কাছে ব্যবসায়ীদের জ্বালানি তেল কমিশন সংক্রান্ত একটি গেজেট প্রকাশ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে পেট্রোল পাম্পের প্রবেশপথের জন্য জমি ইজারা দেওয়ার ব্যবস্থা বাতিল এবং ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতিত অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লাইসেন্স গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

মালিক কর্তৃক প্রিমিয়াম পরিশোধ স্বাপেক্ষে ট্যাংকলরী শ্রমিকদের ৫ লক্ষ টাকা দূর্ঘটনা বীমা প্রথা চালু করার জন্য বীমা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করা এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সকল জ্বালানি ডিপো সংলগ্ন ট্যাংকলরী শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগার ও বিশ্রামাগার নিশ্চিত করার কথাও বলেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র সহ-সভাপতি এম এ মোমিন, সহ-সভাপতি আব্দুল আওয়াল জ্যোতি, মাহবুবুল আলম, যুগ্ম মহাসচিব শেখ ফরহাদসহ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।