English Version
আপডেট : ২৫ জুন, ২০২১ ১৪:৩৮

সপ্তাহের ব্যবধানে বাড়ল ১০ নিত্যপণ্যের দাম

অনলাইন ডেস্ক
সপ্তাহের ব্যবধানে বাড়ল ১০ নিত্যপণ্যের দাম

করোনার প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের মানুষের মধ্যে যখন দুশ্চিন্তা বাড়ছে, নিত্যপণ্যের দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। প্রতি সপ্তাহেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের দাম। দাম বাড়ায় পণ্যগুলো কিনতে ভোক্তার নাভিশ্বাস উঠছে। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নয়াবাজার ও মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে বিক্রেতা ও ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

মাত্র সাত দিনের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে ১০টি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এগুলো হলো- পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল, প্যাকেটজাত আটা, খোলা ময়দা, ব্রয়লার মুরগি, আমদানি করা আদা, দেশি হলুদ, আমদানি করা পেঁয়াজ, এলাচ, চিনি ও মাঝারি দানার মসুর ডাল। খুচরা বাজারের বিক্রেতারা জানান, গত বছর থেকেই ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে। তবে কয়েক মাস ধরে দাম বাড়ার চিত্র অনেক বেশি। নতুন করে ৭ দিনের ব্যবধানে বোতলজাত পাঁচ লিটারের ভোজ্যতেলে দাম বেড়েছে। খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে কোম্পানিভেদে ৬৮০-৭৩২ টাকা। যা ৭ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৬৩০-৭৩০ টাকা। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা। যা ৭ দিন আগে ৩৪-৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি খোলা ময়দায় ৭ দিনে ৪ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। ৭ দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি কিনতে এক জন ভোক্তাকে ৫ টাকা বাড়তি গুনে ১৩৫-১৪৫ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। পাশাপাশি আমদানি করা আদা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা; যা ৭ দিন আগে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এছাড়া প্রতি কেজি দেশি হলুদে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা। প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। যা ৭ দিন আগে ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এলাচ কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে ৩৩৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি চিনি ২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকা। আর প্রতি কেজি মাঝারি দানার মসুর ডাল ৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যা ৭ দিন আগে ৮৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, পাইকারি বাজারে ও মিল পর্যায়ে ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ানো হচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে কত বেড়েছে ও দেশে কত বাড়ানো হচ্ছে তা তদারকি সংস্থার খতিয়ে দেখা উচিত।

তিনি আরও বলেন, বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জ থেকে কিছু পণ্য আসতে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় দাম বেড়েছে। পাশাপাশি আসন্ন কোরবানির ঈদ ঘিরে মসলা আমদানিকারকরা বাড়তি মুনাফা করতে দাম বাড়াতে শুরু করেছে। যে কারণে মসলা পণ্যের দাম বাড়ছে। বিষয়টি সরকারের তদারকি সংস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে নজরদারি করতে হবে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা ক্রেতারা বলেন, কোনো পণ্যের দাম বাড়েনি। বাজারে বিক্রেতারা সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। করোনার মধ্যে এ দাম বাড়ানো অনৈতিক। কারণ বাজারে সব ধরনের পণ্যের সরবরাহ যথেষ্ট। কিন্তু দাম বেশি। সরকারকে এদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। তা না হলে না খেয়ে মরে যেতে হবে। এছাড়া কোরবানির ঈদ সামনে রেখে মসলার দাম হু হু করে বাড়ছে।

দাম বাড়ার চিত্র বৃহস্পতিবার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার মূল্য তালিকায় লক্ষ্য করা গেছে। টিসিবির তথ্য বলছে- ৭ দিনের ব্যবধানে পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলে ১ দশমিক ২৯ শতাংশ দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত আটায় দাম ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ, খোলা ময়দা ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ, ব্রয়লার মুরগি ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ, আমদানি করা আদা ১০ শতাংশ, দেশি হলুদ ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ, আমদানি করা পেঁয়াজ ১০ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া প্রতি কেজি এলাচের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ, চিনি ২ দশমিক ৯০ শতাংশ ও প্রতি কেজি মাঝারি দানার মসুর ডাল কিনতে ভোক্তার ৭ দিনের ব্যবধানে ২ দশমিক ৭০ শতাংশ টাকা বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে।