রূপালী ব্যাংকে যারা বেতন পান তাদের জন্য সুখবর

করোনাকালেও সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত চাকুরিজীবি গ্রাহকদের জন্য বেশ কিছু সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক। তবে যেসব চাকুরীজীবিদের বেতন-ভাতা ব্যাংকটির গ্রাহক হিসাবের মাধ্যমে হয়ে থাকে তাদের জন্যই রয়েছে সুখবর। পরিচালনা পর্ষদ সভায় গ্রাহকদের সুবিধা সংক্রান্ত বিষয় অনুমোদন দেওয়ার পর বুধবার (২৩ জুন) সব শাখায় এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে রূপালী ব্যাংক।
জানা গেছে, সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/ কর্মচারীরা এতদিন সোনালী ব্যাংক থেকে বেতন নিতেন। বর্তমানে যে কোনও কর্মকর্তা ইচ্ছে করলে ব্যাংক পরিবর্তন করে যেকোনোও ব্যাংক থেকে বেতন ভাতা নিতে পারবেন। এই নিয়ম হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ব্যাংক বেতন-ভাতা নিজেদের ব্যাংকে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের অফার দিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক এই সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, পার্সোনাল লোনের চাহিদা আগের তুলনায় বেড়েছে, মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যবস্থাপক, জোনাল ম্যানেজার ও ডিভিশনাল প্রধানরা পার্সোনাল লোনের সিলিং ও মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করেছে। তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ব্যাংকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ব্যাংক ঋণের সুদহার গত বছরের এপ্রিল থেকে কমিয়ে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর থেকে ব্যাংকগুলো সুদহারের এই নির্দেশনা অনুসরণ করছে। কোনও কোনও ব্যাংক সুদহার আরও কমিয়েছে।
রূপালী ব্যাংকের সাধারণ ঋণ ও এসএমই বিভাগ থেকে জারি করা নির্দেশনা বলা হয়েছে:
ঋণসীমা: সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা।
ঋণের মেয়াদ: সর্বোচ্চ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৭ বছর। (পিআরএল গমনের আগ পর্যন্ত।)
ঋণ সীমা নির্ধারণ: এতদিন ঋণের মেয়াদ পাঁচ বছরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা তার প্রাপ্য মুল বেতনের সমপরিমাণ প্রাপ্য হতেন।
ঋণ অনুমোদন ক্ষমতা: আগে ডিজিএম ও এজিএম নিয়ন্ত্রিত শাখাগুলোর ক্ষেত্রে পার্সোনাল বা প্রফেশনাল লোন ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুমোদন ক্ষমতা শাখা ব্যবস্থাপকদের আওতাধীন ছিল। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ডিজিএম ও এজিএম নিয়ন্ত্রিত কর্পোরেট-১, কর্পোরেট-২, শাখাগুলোর ক্ষেত্রে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ অনুমোদন ক্ষমতা শাখা ব্যবস্থাপকের আওতাধীন।
আগে অফিসার হতে এসপিও নিয়ন্ত্রিত শাখাগুলোর ক্ষেত্রে শাখা ব্যবস্থাপক ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত পার্সোনাল বা প্রফেশনাল ঋণ অনুমোদন করতে পারতেন। আর পাঁচ লাখ টাকার বেশি অর্থাৎ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুমোদন ক্ষমতা জোনাল ম্যানেজারের আওতাধীন ছিল। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসপিও নিয়ন্ত্রিত শাখাগুলোর ক্ষেত্রে শাখা ব্যবস্থাপক ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ অনুমোদন করতে পারবেন। ৭ লাখ টাকার বেশি অর্থাৎ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুমোদন ক্ষমতা জোনাল ম্যানেজারের আওতাধীন। আরপিও নিয়ন্ত্রিত শাখাগুলোর ক্ষেত্রে শাখা ব্যবস্থাপক ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুমোদন করতে পারবেন। তবে পাঁচ লাখ টাকার বেশি ঋণ অনুমোদন ক্ষমতা জোনাল ম্যানেজারের আওতাধীন।
ঋণপ্রাপ্তির যোগ্যতা: রূপালী ব্যাংকে যেসব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা /কর্মচারীর বেতন হিসাব পরিচালিত হয়, শুধুমাত্র সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে এ নীতিমালার আওতায় ঋণ দেওয়া যাবে।
সুদের হার: ৯ শতাংশ (পরিবর্তনশীল)
জামানত: গ্রাহকের ব্যক্তিগত গ্যারান্টি। গ্রাহক যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, সেই প্রতিষ্ঠান অন্য যেকোনও একজন কর্মকর্তা /কর্মচারী এবং পরিবারের গ্রহণযোগ্য একজন সদস্যের ব্যক্তিগত গ্যারান্টি। ঋণের সমপরিমাণ স্বাক্ষরিত একটি চেক, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক/ কর্মচারীদের ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে উপজেলা শিক্ষা অফিসার কর্তৃক প্রদত্ত অনাপত্তিপত্র।