English Version
আপডেট : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ১৩:১৯
সূত্র:

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলা করা বড় চ্যালেঞ্জ

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলা করা বড় চ্যালেঞ্জ

তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত বিকাশের এই সময়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলা করা বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গতকাল রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু হোটেলে ‘স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ড কাপ-২০২০’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইকুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ভিসিপিয়াব) চেয়ারম্যান শামীম আহসান।

বিশ্বের বৃহত্তম স্টার্টআপ প্রতিযোগিতার বাংলাদেশ অংশের এ পর্বে ‘ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফর ডাবল ডিজিট গ্রোথ’ সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সালমান এফ রহমান। বক্তব্যে তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলা করা আমাদের জন্য বড় একটা সুযোগও। আর সেটি হতে পারে মানবসম্পদের দক্ষতার উন্নয়ন। যেকোনো কিছু নিয়েই প্রচলিত চিন্তার বাইরে গিয়ে ভাবতে হবে। তাহলেই আমরা আমাদের সামনে আসা চ্যালেঞ্জগুলো সহজেই মোকাবেলা করতে পারব। এজন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়েই শিশুদের কম্পিউটারের ভাষা বা কোডিং শেখানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি কাজও করছে।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা আরো বলেন, গত ১১ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য পর্যায়ে উন্নতি করেছে। অনেকেই আমার কাছে বাংলাদেশের এ উন্নতির গোপন রহস্য জানতে চান, কীভাবে বাংলাদেশ এ সক্ষমতা অর্জন করল। আমি বলি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য বিষয় ছাড়াও তিনটি বিষয়ের উন্নয়নে বেশ গুরুত্ব দিয়েছেন। সেই তিনটি খাত হলো বিদ্যুত্, কৃষি ও তথ্যপ্রযুক্তি।

সালমান এফ রহমান বলেন, জ্বালানি, গার্মেন্টস সেক্টরের পর তথ্যপ্রযুক্তি বাংলাদেশের নেক্সট বিগ থিং। তথ্যপ্রযুক্তি ও স্টার্টআপে সহায়তা দিতে সরকার বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে।

সেমিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে শুধু একটি ১ বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি রয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে অন্তত পাঁচটি বিলিয়ন ডলারের কোম্পানি বা ইউনিকর্ন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশে বর্তমানে ১ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম রয়েছে। এটিকে ১০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব স্টার্টআপে বর্তমানে প্রত্যক্ষভাবে দেড় লাখ এবং পরোক্ষভাবে সাত লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ করেছে। ভিশন ২০২৫-এ ২০২৫ সাল নাগাদ প্রত্যক্ষভাবে ১০ লাখ এবং পরোক্ষভাবে ৫০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

শামীম আহসান তার মূল প্রবন্ধে বুয়েট ও আইবিএর সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির মেলবন্ধনের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন, সরকারের নেতৃত্বে উদ্ভাবন, সিলিকন ভ্যালি, লন্ডন, টোকিও ও সিঙ্গাপুরে আন্তর্জাতিক ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইকুইটির সঙ্গে মিলে রোডশোর মাধ্যমে কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং এবং স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ড কাপ দক্ষিণ এশিয়া ও স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ড কাপ এশিয়া আয়োজনের প্রস্তাব করেন।

অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত পর্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ড কাপের চেয়ারম্যান, পেগাসাস টেক ভেঞ্চারসের জেনারেল পার্টনার ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিস উজ্জামান। তিনি বলেন, পেগাসাস টেক ভেঞ্চারস বাংলাদেশ স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে বিনিয়োগ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, আমরা এরই মধ্যেই সহজ ডটকম, আজকের ডিল, বাগডুম, হ্যান্ডিমামা ও ডিজিকনের উন্নয়নে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছি। আমরা বাংলাদেশ পর্বের বিজয়ীদের সিলিকন ভ্যালিতে নিয়ে যাব, তাদেরকে মেন্টরিং করব এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার উপযোগী করে তুলব।

স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ড কাপ-২০২০ যৌথভাবে আয়োজন করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইসিটি ডিভিশন, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইকুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) ও বাই ইজেনারেশন।

এ আয়োজনের ভিন্ন ভিন্ন দুটি সেশনে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো, জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব-এর ফাউন্ডার মুনীর হোসেন প্রমুখ।